ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

পানির তলায় অপরাধের সূত্র খুঁজতে ড্রোন কিনছে কলকাতা পুলিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২৩
পানির তলায় অপরাধের সূত্র খুঁজতে ড্রোন কিনছে কলকাতা পুলিশ

কলকাতা: পানির নিচে অপরাধের সূত্র খুঁজতে এবার ‘আন্ডার ওয়াটার ড্রোন’ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে এখন থেকে পানিতে ফেলে দেওয়া অপরাধীদের বেআইনি মালামাল, চুরি করা সামগ্রী সহজেই উদ্ধার করতে পারবে পুলিশ।

ডুবে থাকা লাশ উদ্ধারেও ডুবুরিদের ব্যাপক আকারে সহায়তা করবে এ ড্রোন।  

কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, এই রিমোটচালিত ড্রোন অর্থাৎ রিমোট অপারেটর আন্ডার ওয়াটার ভিকেলস (আরওভি) ৩৩০ ফুট পানির গভীরে গিয়েও স্বচ্ছ ছবি ও ভিডিওগ্রাফি সংগ্রহ তুলতে সক্ষম।

কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তর লালবাজার থানার তরফে জানা গেছে, পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের নির্দেশেই এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন কেনার প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রশাসন।  

হঠাৎ এই ড্রোন কেনার সিদ্ধান্তে বিষয়ে কলকাতা পুলিশ এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছে।

তারা জানিয়েছেন, অপরাধের পর তথ্য প্রমাণ লোপাট করতে নদী-নালা, খাল, বিলের মতো জলাশয় বেছে নেয় অপরাধীরা। আবার অনেক সময় হত্যার পর লাশ পানিতে ফেলে প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়। কখনও পুলিশের নজরদারি এড়াতে বেআইনি জিনিসপত্র কিংবা চুরি করা সামগ্রীও পানিতে ফেলে দেয় অপরাধীরা।  

এছাড়া পানির তলা থেকে মৃতদেহ কিংবা চুরি যাওয়া সামগ্রী উদ্ধারে গিয়ে  প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডুবুরি বা বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সদস্যরা হিমশিম খেত।

তাই পানির গভীরে কোনো ঘটনার তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে পুলিশকে বেশ ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। অনেক সময় দেখা গেছে অপরাধী শনাক্ত করা গেলেও পানির গভীরে থাকা উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ খুঁজে না পেতে অনেক সময় লাগে।  

তাই রিমোটচলিত আন্ডার ওয়াটার ড্রোন বা আরওভি কেনা হচ্ছে। এটি ব্যবহার করে এখন থেকে দ্রুত সঠিক তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা যাবে।  

কলকাতা পুলিশ জানায়, চলতি বছরের ৩ মার্চ কলকাতার চায়না টাউনে খুন হন রানা নামে এক ব্যক্তি। তথ্য প্রমাণ নষ্ট করতে অপরাধীরা রানার মৃতদেহ একটি নীল রঙের ড্রামে ভরে সায়েন্স সিটির কাছে খালে ফেলে দেয়।  

মৃত্যু হয়েছে জেনে ১৬ মার্চ থেকে রানার দেহের খোঁজে ওই খালে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তল্লাশি অভিযানে ডাকা হয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডুবুরি ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও। কিন্তু, সব চেষ্টাই বিফলে যায়।

একটা সময় পুলিশের গোয়েন্দা ধরেই নিয়েছিলেন, রানার মৃতদেহের হদিশ মিলবে না। এরপর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত রানার গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকেন গোয়েন্দারা। এরপর ফের টানা তল্লাশি চালিয়ে ২১ মার্চ ওই খাল থেকেই ড্রামবন্দি রানার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  

লালবাজারের সূত্রের দাবি, আগামী দিনেও কলকাতায় এমন ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে দেহ উদ্ধারে যাতে নাকাল হতে না হয়, তার জন্যই এমন ড্রোন কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, যাত্রীবাহী নৌকাডুবির মতো ঘটনা ঘটলেও এই ড্রোন ব্যবহার করা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ১৩ জুলাই, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।