কলকাতা: নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে কি রকম সরকার হওয়া উচিত? এমন প্রশ্নে পশ্চিমবঙ্গের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, এমন একটা সরকার দেখতে চাই, যারা গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল, মানুষের অধিকার রক্ষণে আস্থাশীল এবং যাদের সঙ্গে ভারতের অনন্তকালের বন্ধুত্ব রয়েছে। সেরকম সরকার আমরা বাংলাদেশে দেখতে চাই।
একই প্রশ্নে কলকাতার সাবেক মেয়র তথা সিপিআইএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছেন, প্রতিবেশী বাংলাদেশের সর্বত্রই বজায় থাকুক ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতন্ত্র। গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষ ব্যতীত মানব সভ্যতা টিকবে না। বাংলাদেশের নির্বাচনের পর নতুন সরকার তা যদি বজায় রাখে তাহলে আমাদের অনেক শক্তি বাড়বে।
কলকাতার গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার সাংবাদিক অনামিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে কোন ধরনের সরকার গঠন হবে, সেটা আমাদের তো নয়ই, পৃথিবীর আর কোনো দেশেরই বলে দেওয়ার কোনো অধিকার আছে বলে আমি মনে করি না। এটা বাংলাদেশবাসীর অধিকার। তারা কাকে ক্ষমতায় আনবে। তবে আমি মনে করি, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিরোধী, যাদের ভয়ংকর রকমের ভারতবিদ্বেষী একটা রেকর্ড আছে। খুব স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশের সেই সরকার এলে তা আমরা ভালোভাবে নেব না। কিন্তু তারপরেও বাংলাদেশের মানুষ যদি তা বেছে নেয়, তাও আমাদের কিছু বলার থাকতে পারে না বলে আমি মনে করি।
লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক সাদউদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনে কোন দল জিতবে সেটা ঠিক করবে সেই দেশের মানুষ। তবে আমরা চাইব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দলই জিতুক।
তিনি আরও বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে আমেরিকার মাতব্বরি আমরা কখনোই মেনে নিতে পারি না। তারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বিরোধিতা করেছিল। সপ্তম নৌবহর পাঠিয়ে দিয়েছিল। ফলে বাংলাদেশের নির্বাচন, সে দেশের মানুষ ঠিক করবে। কোনো দেশ মাতব্বরি করুক, তা ঠিক নয়।
কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশীষ সুর বলেছেন, ২০২৪ সালে বিশ্বের বহু দেশেই নির্বাচন রয়েছে। বাংলাদেশেও হবে, ভারতেও হবে। কিন্তু, কেন জানি না এবারে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে সকলের নজর। প্রতিবেশী হওয়ার কারণে ভারতের নজর তো পড়বেই। পশ্চিমি দুনিয়ার নজরেও রয়েছে। তবে আমি মনে করি, যে সরকারের কোনো ধর্মান্ধতা থাকবে না, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বাণিজ্য, যাতায়াত, সাংস্কৃতিক যোগাযোগ রেখে চলবে যে সেই সরকার হলে ভালো হয়।
রাজ্য বিজেপির সাবেক সভাপতি ও লোকসভার নতুন নির্বাচনী কমিটির সদস্য রাহুল সিনহা বলেছেন, এখন যারা সরকার গড়ার দাবি নিয়ে আসছে তাদের থেকে বর্তমানে বাংলাদেশে যে সরকার ক্ষমতায় রয়েছে তারাই ভালো।
মূলত, বছর শেষ হলেই ভোটের বছর শুরু হবে দুই দেশেই। আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তারপরেই ভারতে লোকসভা নিবার্চন। ফলে প্রতিবেশী বাংলাদেশে কি ধরনের সরকার হচ্ছে সেদিকেই নজর থাকবে ভারতবাসীর।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশের নির্বাচনের পর অনেক সমীকরণ কাজ করতে পারে ভারতের নির্বাচনে। যে কারণেই বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে নজর রয়েছে ভারতবাসীর।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ