কলকাতা: আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গকেই যেন এবার পাখির চোখ করেছে বিজেপি। আর তাই আবার পশ্চিমবঙ্গে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
মার্চের শুরুতেই পশ্চিমবঙ্গে পরপর দুই দিন (২, ৩ মার্চ) জনসভা করছেন প্রধানমন্ত্রী। হুগলী জেলার আরামবাগ এবং নদিয়ার কৃষ্ণনগরে সভা করেছেন তিনি।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার (৬ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর সভা রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে। এবারে বাড়তি সংযোজন উত্তরবঙ্গ। ৯ মার্চ শিলিগুড়িতে আসতে পারেন মোদি।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গ সফর আপাতত ৬ মার্চ শেষ হচ্ছে না। সব ঠিক থাকলে ৯ মার্চ শিলিগুড়িতে আসতে পারেন। শিলিগুড়িতেও কিছু সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করবেন তিনি। এছাড়া ওইদিন সেখানে একটি জনসভা করার কথা তার।
সুকান্তের কথায়, আগামী মঙ্গলবার (৫ মার্চ) কলকাতায় চলে আসবেন নরেন্দ্র মোদি। কলকাতার রাজভবনে রাত্রি যাপনের কথা। পরদিন ৬ মার্চ বারাসতে মোদির একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। ওইদিন বারাসাতের কাছারি মাঠে হবে প্রধানমন্ত্রীর সভা। বিজেপি জমানায় দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা কীভাবে সামনের সারিতে এগিয়ে এসেছেন, সেই সাফল্যই এই সভার মূল বিষয়বস্তু।
সেখানে দলীয় অনুষ্ঠানের পর তিনি সরকারি কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। সেই সভা সেরেই প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রথম নদী পথ অর্থাৎ গঙ্গাবক্ষের মেট্রো রেলের উদ্বোধন করবেন। মেট্রোর সেই ঐতিহাসিক সফরেও শামিল হবেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া কলকাতা মেট্রোর তিনটি নয়া রুটের উদ্বোধন হবে তার হাত দিয়ে।
মেট্রো রেল সূত্রের খবর, ওইদিন প্রধানমন্ত্রী মেট্রোর নয়া তিনটি রুটের উদ্বোধন করার পর, মধ্য কলকাতার এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশন থেকে মেট্রোতে চড়ে, গঙ্গার ২৮ মিটার গভীরের পথ দিয়ে হাওড়া ময়দানে যাবেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমান, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষে বা তৃতীয় সপ্তাহের শুরুতেই সংসদ ভোটের তফসিল ঘোষণা হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই পশ্চিমবঙ্গে আরও সভা সেরে ফেলতে চান মোদি।
শনিবার ( ৯ মার্চ) শিলিগুড়ির সভা হলে নয় দিনে মোট চারটি সভা করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অপরদিকে, শনিবার (২ মার্চ) প্রথম ধাপে গোটা ভারতে ১৯৫টি আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বিজেপি। এরমধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ২০টি আসন। আর তাই দেরি না করে রোববার (৩ মার্চ) থেকেই নির্বাচনী প্রচারণায় বেরিয়ে পড়েছেন প্রার্থীদের একাংশ।
রোববার সরকারি ছুটির দিনেই ভোটারদের কাছে টানতে জনসংযোগে বাজার-ঘাট চষে ফেলেন বিজেপি প্রার্থীরা।
এদিন সকালে বাইকে চেপে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে যান হাওড়া সদর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ড. রথীন চক্রবর্তী। সেখানে কিছুক্ষণ জনসংযোগ সারেন। অপরদিকে নিজের সমর্থনে দেওয়াল লিখন শুরু করেন মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী গৌরীশংকর ঘোষ।
পাশাপাশি নদিয়ার রাণাঘাট কেন্দ্রে দেওয়াল লিখন দিয়ে ভোটের প্রচার শুরু করেন বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। সেখানে তিনি জনসংযোগ হিসেবে বেছে নেন শিশুদের পোলিও টিকা খাওয়ানো।
এদিকে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে পরপর দুই বার টিকিট পেয়ে আপ্লুত বিজেপি প্রার্থী অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়।
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বের হন ছোট পরিসরের জনসংযোগে। নিজের জয়ের বিষয়ে সিংহভাগ আশ্বস্ত হয়ে লকেট বলেছেন, গতবার তুলনায় দ্বিগুণ ভোটে জয়ী হবেন। তবে প্রার্থী তালিকায় নাম না থাকলেও মেদিনিপুরের জনসংযোগে করেন বর্তমান সাংসদ দিলীপ ঘোষ।
তবে এরই মধ্যে বিজেপির বড় ধাক্কা আসানসোল কেন্দ্র। সেখানে ভোজপুরি গায়ক, নায়ক পবন সিং-এর নাম ঘোষণা করেছিল। কিন্তু রোববার তিনি সামাজিক মাধ্যমে জানিয়ে দেন, তিনি বাংলায় প্রার্থী হতে চান না। নিজের এক্স- এ লিখেছেন, দল আমাকে বিশ্বাস করেছিল এবং আসানসোল থেকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছিল। কিন্তু, কিছু কারণে আমি আসানসোল থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব না।
ইতোমধ্যে রাজ্যটির বিভিন্ন জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী (সামরিক সশস্ত্র বাহিনী) আসতে শুরু করে দিয়েছে। ভোটারদের মনে আস্থা জোগাতে রুটমার্চ করেছে কয়েক জায়গায়।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২৪
ভিএস/এসএএইচ