কলকাতা: ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আগে আরও একবার মোদী-মমতা সম্মুখসমরে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাজ্যের উত্তরবঙ্গে ভোটের প্রচারে ফের একবার বাংলায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তার আগে উত্তরবঙ্গে জোড়া জনসভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যা নিয়ে সরগরম রাজ্যরাজনীতি। মমতা প্রথম জনসভা করেন কোচবিহার জেলার মাথাভাঙার গুমানির হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বাসুনিয়ার সমর্থনে। পুরোদমে ভোটের প্রচার শুরু করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন প্রথম থেকেই তার দল তৃণমূলের সমর্থন ভোট চাওয়ার পাশাপাশি মোদী এবং বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন নেত্রী।
তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা মানবো না। এনআরসি মানবো না। বিজেপির কাছে বাংলা মাথানত করবে না। এজেন্সিগুলোকে (ভারতের তদন্তকারী এখাধিক সংস্থা) ভোটের কাজে লাগাচ্ছে। তাদের ব্যবহার করে ভোট করোনোর চেষ্টা করছে। তাদের দিয়ে বিরোধীদের ভয় দেখাচ্ছে, গ্রেফতার করছে। বিজেপি ভয় দেখালেই থানায় ডায়েরি করার পরামর্শ দেন মমতা। বললেন, কোনও থানা যদি এজেন্সি এবং বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ না নয়, তবে সরাসরি আমাকে জানাবেন। আমি ব্যবস্থা নেব।
ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। এবারের কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী। গতবারের জয়ী সাংসদ ছিলেন নিশীথ। সেই প্রার্থীর বিরুদ্ধে, মমতা বলেছেন, আমাদের দলে ছিল। তাকে বহিষ্কার করেছি। তার নামে বহু মামলা আছে। আজ সে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। লজ্জারর বিষয়। একে আপনারা ভোট দেবেন? মমতা বললেন, বিজেপি যবে থেকে ক্ষমতায় এসেছে, সেই ২০১৪ সাল থেকে আমাদের উপর অত্যাচার করছে। বাংলাকে ওরা মানে না। বিজেপি এখানে হুলিগানিজ়ম চালাচ্ছে।
তাই ভোট দেওয়ার আগে আমার মুখটা মনে করবেন, আর একটা করে ভোট তৃণমূলে দেবেন। বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসকে ভোট দেবেন না। এর পাশাপাশি ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) বিষয়ে মমতা বলেন, বাংলায় আরও একটা দল আছে। নিজেদেরে মুসলমান বলে। ওদের একটি নতুন দল হয়েছে। ওরা বিজেপির থেকে টাকা নিয়ে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করার কাজ করছে। যেটা হায়দরাবাদের একটা দল মানে মিম করে। মিম-সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন।
মুখ্যমন্ত্রীর দ্বিতীয় জনসভা রয়েছে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার মাল আদর্শ বিদ্যাভবনের মাঠে। সেখানে তিনি সভা করবেন প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়ের সমর্থনে।
বাংলার উত্তরবঙ্গ সফরে গত মাসেই এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ৯ মার্চ শিলিগুড়িতে জনসভা করেন মোদী। তখনও ভারতের লোকসভা ভোটের তফসিল ঘোষণা হয়নি। কিন্তু সেদিন থেকেই উত্তরবঙ্গে ভোটের প্রচারের কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার ঠিক এক মাসের মধ্যেই আবার উত্তরবঙ্গে আসছেন মোদী। এবার কোচবিহার। বৃহস্পতিবার মমতার বিরুদ্ধে কি বক্তব্য রাখেন সেদিকেই নজর থাকবে রাজ্যবাসীর।
প্রথমধাপে উত্তরবঙ্গের তিন কেন্দ্রে ভোট। ১৯ এপ্রিল আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারে ভোট। প্রসঙ্গত, গত নির্বাচনে(২০১৯) উত্তরবঙ্গের একটাও আসন পায়নি মমতার তৃনমূল। ফলে বাড়তি জোড় দিয়েছেন নেত্রী। অপরদিকে, উত্তরবঙ্গ দখলে রাখতে মোদীর বিজেপি।
যদিও এদিনের মমতার জনসভা নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, উত্তরবঙ্গ বিজেপির। তাই কোচবিহারে নেত্রীর জনভায় লোক হয়নি। মানুষের ঢল আর কিছুক্ষণ পর নামবে মোদীর জনসভায়। তবে বিশেষজ্ঞদের মত, বাংলায় তাপপ্রবাহ চলছে। এসময় দুপুরে কোনো জনসভা না রাখাই ভালো। বিকেলের পর থেকে আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা,এপ্রিল ০৪,২০২৪
ভিএস/এমএম