কলকাতা: আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে ভারতে আজ পালিত হচ্ছে খুশির ঈদ।
সকাল থেকেই মনোরম পরিবেশ ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে, বিভিন্ন ঈদগাহে মুসলমানদের উপচে পরে ঢল। নামাজ আদায় করতে শিশুটি থেকে বৃদ্ধ সবাই সামিল হন শহরের বিভিন্ন ঈদগাহে। এরপর একে অপরকে কোলাকুলির মাধ্যমে কুশল বিনিময় করেন।
শহরের নিরিখে সবচেয়ে বড় অস্থায়ী ঈদগাহ হয়ে ওঠে কলকাতা ফোর্ট উইলিয়াম সংলগ্ন রেডরোড। এরপরই হয় কলকাতার বাংলাদেশ লাইব্রেরি সংলগ্ন পার্কসার্কাস ময়দানে। এছাড়া নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন জাকারিয়া স্ট্রিট, এসপ্ল্যান্ডে ও টালিগঞ্জে অবিস্থিত টিপু সুলতান মসজিদ সহ শহরের ৬৭৯টি জায়গায় এবারে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রতিবছরের মত এ বছরও কলকাতার রেডরোডে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। ভারতে ভোটের মৌসুম চলছে। আর তাই কলকাতা রেডরোড থেকে ঈদের শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি মোদি সরকারের বিরোধিতা করে একপ্রকার ভোটের প্রচার করেন মমতা।
অপরদিকে পার্কসার্কাসে সম্প্রীতির বার্তা দিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সঙ্গীত শিল্পী বাবুল সুপ্রিয়, মেয়র ইন কাউন্সিল দেবাশীষ কুমার, সাংসদ মালারায়সহ অনেকে। বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন, সর্বধর্ম সম্মেলন এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই পার্কসার্কাস অঞ্চল। যেই পার্কসার্কাস ময়দানে ঈদের নামাজ হল, একে অপরকে কোলাকুলি করল, আমাকেও সকলেই ঈদ মোবারক জানালো। ঠিক এই ময়দানেই দুর্গা পূজার মণ্ডপ হয়। দীপাবলি হয়। এবং সব ক্ষেত্রেই সকল স্তরের মানুষ যেকোনো উৎসবে পাশে থাকে একে অপরের। আর তাই ঈদ আমাদের কাছে একটা খুশির উৎসব।
একসময় বিজেপির টিকিটে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছিলেন বাবুল। পরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন এবং বর্তমানে রাজ্যের মন্ত্রীও হন তিনি। বিজেপিতে তার সময়কাল স্মরণ করে বাবুল বলেছেন, আমি এমন একটা দলে ছিলাম যেখানে সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে ইচ্ছা থাকলেও দেখা করতে পারতাম না। বলা যায়, মুসলিম সম্প্রদায় আমার গান শোনাই বন্ধ করে দিয়েছিল। ঈদের মাসে এর আগে দুবাই, আবুধাবি, বাইরান কত জায়গায় শো করেছি। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন আবার আস্তে আস্তে সেই পুরনো কানেকশনগুলো ফিরে আসছে। ফলে সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ একে অপরের পাশে আছে এটাই আমাদের কাছে সবথেকে বড় বার্তা।
তিনি বলে, একটু আগে সিপিএমের প্রার্থী এসেছিলেন, সেখানে তিনি ভোট প্রচার করে গেলেন। এটা আমার ভালো লাগেনি। উৎসবের দিন আজ। সবাই খুশির মুডে আছেন। আজ কি ভোট প্রচার না করলেই চলত না।
অপরদিকে, প্রয়াত হাসিম আব্দুল হালিমের পুত্রবধূ সায়রা শাহ হালিম এবার দক্ষিণ কলকাতায় সিপিএম প্রার্থী। বামপ্রার্থী বলেছেন, কুশল বিনিময় করতে গিয়েছিল, তার মাঝেই দু' একটা ভোট বিষয়ে কথা হয়েছে। সবাই ভোট নিয়ে ওয়াকিবহল। আমি এতে খারাপ কিছু দেখিনা। বাবুল সুপ্রিয়ো জানেননা, তার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেডরোডের মঞ্চে দাড়িয়ে ভোটপ্রচার করল। জানলে হয়ত তিনিও বলতেনা না।
ফলে সব মিলিয়ে ভোটে ভারতে ঈদ ফিতরে মেতেছেন ভারতীয়রা।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা,এপ্রিল ১১,২০২৪
ভিএস/এমএম