ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

সত্যি ‘গো দেওতা কা দেশ’!

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৬
সত্যি ‘গো দেওতা কা দেশ’! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আবুল মনসুর আহমেদের সে অতিপরিচিত বিখ্যাত গল্পে যেতে চাই না। কিন্তু গুজরাটের আহমেদাবাদ, গান্ধীনগর ভ্রমণের সময় বারবার  লেখকের সেই শিরোনামটিই মনে করাচ্ছিল- 'গো দেওতাকা দেশ'। 

আহমেদাবাদ, গুজরাট: আবুল মনসুর আহমেদের সে অতিপরিচিত বিখ্যাত গল্পে যেতে চাই না। কিন্তু গুজরাটের আহমেদাবাদ, গান্ধীনগর ভ্রমণের সময় বারবার  লেখকের সেই শিরোনামটিই মনে করাচ্ছিল- 'গো দেওতাকা দেশ'।

 

নিরীহ গোছের প্রাণী গরুও এখানে শহুরে। মাঠ কিংবা বিল নয়, এরা চরে বেড়ায় গোটা শহরজুড়ে। শহরের অতি আপনজন এরা।

বুধবার রাতে দিল্লি থেকে আহমেদাবাদের বল্লবভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে রাত ৯টার পর ফ্লাইওভারের গোড়ায় দেখা মিললো গরুর। মুক্ত গরুটি তখন নিঃশঙ্কচিত্তে ঘুরছে। অর্ধেক জানা ছিল বিষয়টি। এবার স্বচক্ষে দেখা।

 ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাট। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এলাকা। তুলনামূলক শুষ্ক এলাকাও বটে। তবে গরুদের তাতে কোনো সমস্যা নেই। জানাচ্ছিলেন একজন রাবড়ি জায়সির। মানে গুজরাটি ভাষায়। বাংলায় যাকে বলি রাখাল। আর গরুকে এখানে বলা হয় গাই।
 
গুজরাটের অধিবাসীরা সবজিভোজীই বেশি। মাংস এরা খায়। তবে গুজরাট ‘নো বিফ’ রাজ্য। গো-দেবতার প্রতি অন্যদের মতো তাদেরও ভালোবাসার অন্ত নেই। কিন্তু যেটা অন্য সব এলাকা থেকে স্বতন্ত্র সেটা হলো শহরের রাস্তাঘাটে অবাধ বিচরণ। গাইকে এরা কখনও ডিসটার্ব করে না। রাবড়িরাও থাকে মূলত শহর ঘিরে। আশপাশের এলাকাগুলোতে। ফসলি জমিতে চাষাবাদের জন্য হালের গরু যেমন আছে তেমন আছে দুধের গাইও। তাই বলে দুধ এখানে যে খুব সস্তা, সেটা ভাবারও কোনো অবকাশ নেই। ন্যূনতম চল্লিশ-পঞ্চাশ টাকা লিটার।

শহরের আইল্যান্ড, দোকান, বাজার, রাস্তার মোড়, পাশ- সবখানেই অবাধে বিচরণ করে এরা। কোনো দিকেই ভ্রুক্ষেপ নেই। শহরের মানুষগুলো অনেক সহযোগিতাপ্রবণ। যদি কোনো গরু হঠাৎ রাস্তার উপর চলে আসে, রাস্তা পার হতে চায় তাহলে গাড়ি থামিয়ে তাদের পার হতে সাহায্য করা হয়।
 
আহমেদাবাদে গাছ কম থাকলেও গ্রিন সিটি খ্যাত গুজরাটের রাজধানী শহর গান্ধীনগরে গাছ রয়েছে প্রচুর সংখ্যক। বলা যায় সবুজে ঢাকা। গোছালে সুন্দর সে শহরের পাশের শুকনো খোলা জায়গায়ও দেখা মিলবে গাই। শুকনো মাটি ভেদ করে এক চিলতে ঘাসেও তার শান্তি।
 
যেহেতু গোমাংস এখানে নিষিদ্ধ সেহেতু সংগত কারণেই এ প্রশ্ন আসে, এতো বুড়ো গরুর পরিণাম কি? তখন জায়সির বলেন, বুড়ো হয়ে মারা গেলে অনেক সময় মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। আবার অনেকসময় কাজে লাগানো হয় দেহের বিভিন্ন অংশ।
 
দোকানের সামনে এসে দাঁড়ালে, নোংরা করলে, রাস্তার মোড়ে রাজার হালে কাউকে সাইড না দিলেও বিকার থাকে তাদের। কোনো বাধা না পাওয়ায় ব্যস্ত রাস্তার আইল্যান্ডেও দিব্যি উঠে ঘাস খাওয়া শুরু করে গুজরাটের গাইরা।


 গাড়িতে আহমেদাবাদ, গান্ধীনগরের বিভিন্ন স্পটে যাওয়ার সময় রাস্তায় এ দৃশ্য ছিল নিয়মিত। বিষয়টি প্রাণীভক্তির অসাধারণ নমুনাও বটে।

আরও পড়ুন...

**  তাজমহলে হয়ে যান ‘ডিপি’, করুন ‘সিপি’!

**গুজরাটে বসে কলকাতার থ্রিলার দর্শন
** সুর-বাদ্যে বাংলাদেশ-ভারতের সংস্কৃতি বিনিময়

 
 
 
 

 

** সমাধিসৌধে খচিত গান্ধীর ‘শেষ উক্তি’
** দিল্লি জামে মসজিদ থেকে লালকেল্লা
** সান্ধ্য আলোয় যুদ্ধস্মৃতির ইন্ডিয়া গেট
** জাদুটানা দিল্লি জাদুঘর
** বাংলা উচ্চারণেই মুগ্ধতা ছড়ালেন রাষ্ট্রপতি প্রণব
** বাংলাদেশের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রণব মুখার্জির
** হিমালয় দেখতে দেখতে সোয়া ২ ঘণ্টায় দিল্লি!
** ভারতে বাংলাদেশের ইয়ুথ ডেলিগেশন টিম
** ভারত যাচ্ছে বাংলাদেশের ইয়ুথ ডেলিগেশন টিম  


বাংলাদেশ সময়: ০৮২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৬
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।