ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

মেঘের কোলে বসার ঘর, আকাশ ছোঁয়া বাড়ি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৭
মেঘের কোলে বসার ঘর, আকাশ ছোঁয়া বাড়ি আকাশ ছোঁয়া বাড়ি/ছবি-বাংলানিউজ

কলকাতা: ‘এখানে মেঘ গাভীর মতো চরে পরাঙ্মুখ সবুজ নালিঘাস দুয়ার চেপে ধরে’- লিখেছিলেন শক্তি চট্টোপাধ্যায়।

অবনী বাড়ি আছো?- কবিতায় কলকাতাকে দেখে তিনি একথা লেখেননি নিশ্চই। কিন্তু কলকাতাতেও বসার ঘরে উঁকি মারবে মেঘ।

জানালা দিয়ে দেখা যাবে গোটা শহরটাকে। আক্ষরিক অর্থেও ‘আকাশে ছড়ানো মেঘেদের কাছাকাছি’ একটি বাড়ি। বাড়ির নাম ‘দ্যা ৪২’, স্থান কলকাতার চৌরঙ্গী এলাকা।

না বাড়ির নাম ‘দ্যা ৪২’ হলেও এটি মোটেও ৪২তলা বাড়ি নয়। আসলে একটি ৬৩তলা বাড়ি। কলকাতা তথা পূর্ব ভারতের সব থেকে উঁচু বাড়ি। প্রথম তলায় গ্যারেজ, বাকি ৬২ তলায় থাকার জায়গা। আকাশ ছোঁয়া বাড়ি/ছবি-বাংলানিউজ

সময়টা ৯/১১, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের রান্না ঘরে ঢুকে গিয়েছিল ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের খবর। কলকাতার মা, মাসিমারা অবাক হয়ে শুনেছিলেন একশ’ তলা বাড়ির কথা।

তারপর অনেকগুলো বছর কেটে গেছে, কলকাতায় তৈরি হয়ে একের পর এক বহুতল ভবন, উচ্চতায় বেড়েছে সেই বহুতলদের ছাদের।

ইন্টারনেটের সুবাদে প্রায় সবাই দেখে ফেলেছে একশো ৬৩ তলা বুর্জ খলিফা। কিন্তু কলকাতা শহরে এতো উঁচু বাড়ি এই প্রথম। তাই সেটা নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে কলকাতাবাসীর। নির্মাণ সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ৫৯তলা পর্যন্ত নির্মাণ হয়ে গেছে।

প্রশ্নের উত্তরে তারা জানান, কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝেই মেঘ চলে আসে। আর হাওয়া প্রায় উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো। পথচলতি মানুষ দেখছেন ওই বাড়ি। মজার কথা কখনও কখনও মেঘের ঘনঘটায় দেখা যাচ্ছে না শেষ কয়েকটি তলা।

আরও একটি মজার বিষয় জানালেন কাজের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মী।

গরমকালে হয়তো একটু গুমোট আবহাওয়া চলছে। তিনি জানালেন, এমন মাঝে-মাঝেই অনুভব হয় বাড়ির দোতলায় এক রকম আবহাওয়া, আবার ৩০তলায় আরেক রকম আর ৬০তলার ছাদে দাঁড়ালে মনে হবে শরীর জুড়িয়ে যাচ্ছে।
৬৩তলা ওই বাড়ির উচ্চতা আটশো ফুট। ওই বাড়ি থেকে কলকাতাকে দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল যেন এক ছবির মতো শহর।
৩৬০ ডিগ্রি খোলা, দক্ষিণ দিক খোলা কিনা কিংবা পূর্বদিক খোলা কিনা সে সব ভাবার দরকার নেই। ওই বাড়ির জানালা দিয়ে দেখা যাবে গোটা শহরটাকেকারণ এই বাড়ি সবদিকই খোলা। বাড়ির উপরের দিকে তলাগুলি থেকে তাকালে দেখা যায় গঙ্গা আরও পশ্চিমে বাঁক নিয়ে চলে গেছে, চিরকাল মাথার উপরে দেখে আসা হাওড়া সেতুর থামগুলি অনেক নিচে। আরও দেখা যায় কলকাতাকে জড়িয়ে থাকা উড়াল সেতু ও বড় রাস্তাগুলি।

কলকাতায় এ মুহূর্তে বিস্তর আলোচনা, কারা থাকবে এই বাড়িগুলিতে। অফিস হবে নাকি আবাসন? নির্মাতাদের সূত্রে যেটা জানা যাচ্ছে। বেশ কিছু ফ্ল্যাট বিক্রি হয়ে গেছে। ফ্ল্যাটের দাম শুরু হচ্ছে ১৫ কোটি রুপি থেকে।

যে হিসাব পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে প্রতি মাসে ফ্ল্যাট মেনটেনেন্স করতে খরচ পড়বে ৫০ হাজার রুপির মতো।

আরও জানা যাচ্ছে কলকাতা এবং শরের বাইরের থেকেও ক্রেতারা উৎসাহ দেখাচ্ছেন এই ফ্ল্যাটগুলি কিনতে। অনেকেই আগামী দিনে ভারতের অন্যতম বাণিজ্য নগরী হিসেবে মনে করছেন কলকাতাকে।

সেই কারণেই অনেকেই এই ধরণের প্রজেক্টে ফ্ল্যাট কেনার উৎসাহ দেখাচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৭
ভিএস/এএটি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।