শত শত বছরের পুরনো অবকাঠামোগুলো আজও কলকাতার বুকে ঠাঁয় দাড়িয়ে আছে ঐতিহ্যের বাহক হিসেবে। ধর্মতলার ‘স্যার স্টুয়ার্ট হগ মার্কেট’ ভবন ঠিক তেমনি একটি অবকাঠামো।
১৮৭৪ সালে বাণিজ্যিক সুবিধার্থে ব্রিটিশরা তৈরি করে ভবনটি। তখন নাম দেওয়া হয় ‘স্যার স্টুয়ার্ট হগ মার্কেট’। আজও ভবনের গায়ে ইংরেজি বড় অক্ষরে মার্কেটের নাম ও যাত্রা শুরুর সালটি লেখা আছে। তবে বর্তমানে এটি কলকাতার নিউ মার্কেট হিসেবেই বেশি পরিচিত।
মার্কেটটি তৈরির পর কেটে গেছে ১৪৩ বছর। এর মধ্যে ভারতের স্বাধীনতা পেতেই লেগেছে বেশিরভাগ সময়। ইংরেজরা ভারত ছেড়েছে, রূপ পাল্টেছে হগ মার্কেটের। তবে তৎকালীন ইংরেজ স্থাপত্যের আদলে তৈরি লাল রঙের ভবনটিতে আসেনি অবকাঠামোগত তেমন কোনো পরিবর্তন।
সুদীর্ঘ এ সময়ের কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাড়িয়ে আছে স্যার স্টুয়ার্ট হগ মার্কেট। কলকাতায় আসা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থানও এটি।
স্থানীয়রা জানান, ইংরেজবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বঙ্গভঙ্গ, এমনকি কলকতার বর্তমান রাজনীতিরও অনেক কিছুর হিসাব-নিকাশ জড়িয়ে রয়েছে এ অবকাঠামোটিকে ঘিরে।
শুধু যে দর্শনীয় স্থান হিসেবেই মানুষের কদর মিলছে তা নয়। অসংখ্য মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয় এ ভবনকে কেন্দ্র করে। কলকাতার জমজমাট মার্কেটগুলোর অন্যতম এটি। কেউবা দোকান নিয়ে ব্যবসা করছেন, কেউবা আবার হকারি করছেন।
মার্কেটকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা হোটেল গেস্ট হাউজ। সুই থেকে হীরা- সবকিছুই মেলে কলকাতা নিউ মার্কেটে।
বংশ পরম্পরায় অনেকে ধরে রেখেছেন ব্যবসা। বিধান দাস তেমনি একজন ব্যবসায়ী। তার এ মার্কেটে রয়েছে শাড়ির দোকান। বিধান দাসের বাবা-ঠাকুরদাদাও এ মার্কেটে ব্যবসা করেছেন বলে জানান তিনি।
১৯১১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে ভারতের রাজধানী ছিল কলকাতা। পরবর্তী সময়ে এটি অবিভক্ত বাংলা প্রদেশের রাজধানী ছিল। এর অভিজাত ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের জন্য কলকাতাকে ‘প্রাসাদ নগরী’ও বলা হয়।
বঙ্গোপসাগর থেকে প্রায় ১৩৮ কিলোমিটার উত্তর দিকে হুগলি (ভাগীরথী) নদীর বাম (পূর্ব) তীরে অবস্থিত কলকাতা। অন্য তিনদিকে অখণ্ড চব্বিশ পরগনা জেলা দিয়ে বেষ্টিত এটি।
বাংলাদেশ সময়: ০৩১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৭
ইউএম/এএসআর