জাকারিয়া স্টিট ছাড়া কলকাতায় অস্থায়ী কোরবানির পশু বিক্রি হচ্ছে খিদিরপুর, মেটিয়াব্রুজ, গার্ডেনরিচ, রাজাবাজার লাগোয়া নারকেল ডাঙার হাটগুলোতে। তবে এসব হাট পাশাপাশি কয়েকঅঞ্চলেও পশু বিক্রি হচ্ছে।
কোরবানির ঈদ উপলক্ষেই বাজারগুলো শুধুমাত্র কয়েকদিন জন্য বসে। তবে এবারই চোখে পড়ার মতো বিষয় হলো কেনাবেচা ছাড়া হাটরে ধারে পাশে বিশেষ কাউকে ঘেঁষতে দিচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। এসব হাটে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন অঞ্চলের মুসল্লিরা ভিড় জমাচ্ছে। বজবজ, ডাকঘর, আক্রা, সন্তোষপুরের হাটগুলোতে উট-গরু, খাসি ও দুম্বা বিক্রি হয়ে থাকে।
একাধিক পশুর হাট বসলেও প্রত্যেক হাটের কিছু বিশেষত্ব থাকে। যেমন গার্ডেনরিচ ও মেটিয়াব্রুজ অঞ্চলে হাট বসে গরু ও উটকে কেন্দ্র করেই। এখানে গরু পাওয়া যাচ্ছে ১৫ হাজার রুপি থেকে শুরু করে ৭০ হাজার রুপির মধ্যে। আবার উটের দাম ২৫ হাজার রুপি থেকে শুরু করে ৬০ হাজার রুপির মধ্যে ওঠানামা করছে। তুলনামূলকভাবে এবারে দাম অনেকটাই বেশি অন্যবারের মতো বছরের থেকে।
অন্যদিকে জাকারিয়া স্ট্রিট, রাজাবাজার, খিদিরপুর এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে খাসি ও দুম্বা। খাসি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ হাজারের মধ্যে।
এসব হাটের বিশেষত্ব থাকলেও অন্যান্য পশু পাওয়া যায় না তা নয়। তবে খুবই কম। তবে এবার খাসির চাহিদা সব থেকে বেশি। অবশ্য প্রতি ক্ষেত্রেই দাম নির্ধারণ হচ্ছে স্বাস্থ্য ও ওজনের ওপর।
খাসির চাহিদা বেশি কেন? কোরবানি নিয়ে কি কোনো সমস্যা? এমন প্রশ্নে আশরাফ আলীর কথায়, কোরবানি নিয়ে সেরকম সমস্যা নেই। সমস্যা হলো এক কুইন্টাল একটা পশু কোরবানি দিয়ে তারপর হবেটা কি। চার ভাগের এক ভাগ তো আমার কাছেই রাখতে হবে। কলকাতার পরিবারগুলো দিনকে দিন ছোট হয়ে গেছে। কয়েক মাস ধরে গোস্ত এখন কেউ খেতে চায় না। না আমি চাই, না আমার স্ত্রী চায় না আমার বাচ্চা চায়। তাই এবারে ছোট পশুর চাহিদা বেশি। আর খোঁজ নিয়ে দেখুন প্রতি পরিবার পিছু কম করে একজন অসুস্থ পাবেন। বাজার কেমন প্রশ্নে বিক্রেতা আমিনুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, শুধু পশু বাজার কেনো। কোনো বাজার ভালো নয়। নোটবন্দি এবং জিএসটি শেষ করে দিচ্ছে আমাদের। মানুষের হাতে টাকা নেই। কি কিনব কি খাব। বাজার এবার ফাঁকা। সেরকম জমেনি হাট। শুধু পশু কিনলে তো আর হবে না আগেপিছুও তো ভাবতে হবে। আবার অর্থনৈতিক মন্দার পাশাপাশি রয়েছে বর্তমান সময়ের সমস্যা। সবমিলয়ে এবারে টাইম খারাপ যাচ্ছে।
পশুহাট ছাড়াও অস্থায়ী বাজার বসে এসব অঞ্চলগুলোয়। সেখানে পাওয়া যাচ্ছে লুঙ্গি, টুপি, কামিজ, সেমাই থেকে শুরু করে খাটিয়ার ও কোরবানির অন্যান্য সরঞ্জাম।
এসব বিক্রেতারা জানান, রাত পোহালেই ঈদ। এবারে বিক্রি তেমন নেই। বিক্রিবাট্টা হলেই হাতে দুটো টাকা আসে। টাকা না এলে আমরা কেমন করে ঈদ করি! আমাদেরও তো ঈদ আছে বাবু।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৯ ঘণ্টা, ২১ আগষ্ট ২০১৮
ভিএস/এএটি