বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় জেট এয়ারওয়েজের ৯ ডব্লু ৬৯৭ ফ্লাইট মুম্বাই থেকে জয়পুর যাচ্ছিলো। প্লেন তখন উর্ধ গগনে।
এদিকে, ওই প্লেনেরই এক যাত্রী ঘটনাটির ভিডিও তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। সেই ভিডিওতে সব যাত্রীকেই মুখে মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। তারা সবাই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
যেখানে সামান্য ছোটখাটো ভুলের জন্য বড়সড় বিপদ ঘটতে পারে, সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ওই সুইচটি অন করতে কেমন করে ভুলে গেলেন কেবিন ক্রু? তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্লেন বিশেষজ্ঞরা। প্লেন টেক অফ করার আগে কেবিন প্রেসার সুইচের বিষয়টি দেখে নিতে হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে বিষয়টি যে সম্পূর্ণভাবেই গাফিলতির জন্য হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সবচেয়ে বড় কথা, কেবিন ক্রু সুইচ অন করার কথা ভুলে গেলেও দুই পাইলট ক্রস চেকিং করতে ভুলে গেলেন কী করে? কারণ, টেক অফ মুহূর্তে ‘লাস্ট-মিনিট চেক’ বলে একটি গাইড লাইন থাকে। পাইলটদেরই তা চেক করে নিতে হয়। টেক অফের আগে পাইলটরা বিষয়টি লক্ষ্য করলে যাত্রীদের এমন বিপদের মুখে পড়তে হতো না।
‘কেবিন প্রেসার সুইচ’-এর কাজ প্লেন যখন মাঝ আকাশে থাকে তখন ভেতরে অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সাধারণত এসব রুটে প্লেন অন্তত ৩০ হাজার ফুট উপর দিয়ে যায়। টেক অফের পর দ্রুত প্লেনকে একটা বিশাল উচ্চতায় চলে যেতে হয়। এতো উপর দিয়ে প্লেন গেলেও যাত্রীরা সহজে অক্সিজেনের অভাব টের পান না। তবে প্লেনের ভেতর অক্সিজেনের অভাব তৈরি হলে যাত্রীরা শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে বমি, মাথা যন্ত্রণার মতো সমস্যার সম্মুখীন হন। অক্সিজেনের অভাবে শরীরে রক্ত প্রবাহে বিঘ্ন ঘটে। শ্বাসকষ্ট, নাক, কান দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসা, এমনকি হৃদরোগেও আক্রান্ত হতে পারেন। এই ঘটনা বেশিক্ষণ চললে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
তবে জেট এয়ারওয়েজের পক্ষ থেকে বিষয়টি লঘু করে দেখানো হয়েছে। বিমান সংস্থার এক মুখপাত্র বলেন, বোয়িং ৭৩৭ প্লেনটি নিরাপদেই অবতরণ করেছে। কয়েকজন যাত্রীর কান ও নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়ায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। যাত্রীদের জন্য বিকল্প প্লেনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
অসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী সুরেশ প্রভু বিষয়টি নিয়ে তদন্ত ও বিমানবন্দরগুলোকে যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮
ভিএস/আরবি/