ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

মোদীবিরোধী সমাবেশ, গোটা ভারতের চোখ কলকাতায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৯
মোদীবিরোধী সমাবেশ, গোটা ভারতের চোখ কলকাতায় ব্রিগেড সমাবেশে আগত নেতা-কর্মী-সমর্থকরা

কলকাতা: ভারতের লোকসভা নির্বাচন (জাতীয় নির্বাচন) দরজায় কড়া নাড়ছে। নির্বাচনী উত্তাপ ছড়াতেই যেন পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ব্রিগেড সমাবেশের আয়োজন করেছে। তবে এবারের আয়োজন আর পাঁচটা ব্রিগেড সমাবেশের থেকে কিছুটা হলেও ভিন্ন। জাতীয় রাজনীতিতে মোদীবিরোধী শক্তির মিলনক্ষেত্র হতে চলেছে এবারের সমাবেশ।

ফলে রাজ্যের শাসকদলের নেতারা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত দুই ডজন কেন্দ্রীয় নেতা থেকে মুখ্যমন্ত্রীরা এসেছেন কলকাতায়। একদিকে সমাবেশে আসা কর্মী-সমর্থকবাহী যানবাহনের লম্বা লাইন অন্যদিকে দেশের ভিভিআইপিদের যাত্রাপথ সুগম করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কলকাতা পুলিশকে।

শনিবার (১৯ জানুয়ারি) ভোর থেকে রাজ্যের প্রত্যন্ত জেলা থেকে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে উপস্থিত হয়েছেন। এ কারণে সকাল থেকেই যানজটে রুদ্ধ হচ্ছে মিছিলনগরী কলকাতা!

ছুটির দিনে ব্রিগেড সমাবেশ হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি হয়তো পাবেন সরকারি কর্মচারীরা। কিন্তু জরুরি পরিষেবার পাশাপাশি প্রায় সব বেসরকারি অফিস শনিবার খোলা রাখা হয়েছে। ফলে ভোগান্তি একদম এড়ানো যাচ্ছে না। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কেউ রাস্তায় আটকে পড়লে, প্রয়োজনে কলকাতা পুলিশের ‘১০০’ নম্বরে ফোন করলে সাহায্য মিলবে।  

ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে আসা তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের জন্য ১২৫টি পানির গাড়ির ব্যবস্থা করেছে কলকাতা পৌরসভা। এবারের সমাবেশ অতীতের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাবে বলেই ক্ষমতাসীন তৃণমূল নেতাদের ধারণা। এ কারণেই পানির গাড়ির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পৌরসভার পানি সরবরাহ বিভাগের কর্তারা।  

এছাড়াও ব্রিগেড (গড়ের মাঠ) সমাবেশে থাকছে ৮০টি বায়ো টয়লেট। রাজপথে নেমেছে অতিরিক্ত দশ হাজার পুলিশ। শহরের বিভিন্ন জায়গায় করা হয়েছে ৪শ’ অস্থায়ী পুলিশ পিকেট। বাড়তি নজরদারি রয়েছে শহরের উঁচু বিল্ডিংগুলো থেকে। রাখা হয়েছে স্নাইপার। রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, শার্প শুটার ও কুইক রেসপন্স টিম। সমাবেশ ঘিরে আছে দুই হাজার অ্যাম্বুলেন্স।

‘২০১৯ বিজেপি ফিনিশ’ এমনই স্লোগান দিয়ে গত বছর তৃণমূলের শহীদ দিবস ২১ জুলাই মঞ্চ থেকে ব্রিগেডে সমাবেশ করার কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, বিভাজন আর বিদ্বেষের রাজনীতির বিরুদ্ধে ২০১৯-এর ১৯ জানুয়ারির সেই সমাবেশ থেকে গর্জে উঠবে গোটা দেশ। সেই প্রেক্ষিতেই মমতার আহ্বানে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গোটা দেশের সব প্রান্তের বিরোধী নেতারা এক এক করে কলকাতায় উপস্থিত হতে শুরু করেছেন।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়া, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার, ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী টিআর বালু, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ শৌরি, সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদব, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, অরুণাচলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গেগং আপাং, মিজোরামের বিরোধী দলনেতা পু লালধুয়ামা— কে নেই সেই তালিকায়। তালিকা এখানেই শেষ নয়, আসছেন বিদ্রোহী বিজেপি এমপি শত্রুঘ্ন সিনহা, যশোবন্ত সিনহা, মায়াবতীর প্রতিনিধি সতীশ মিশ্র, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, আরজেডির তেজস্বী যাদবের মতো আরও অনেকে।

সমাবেশের অনেক আগেই তৃণমূলের ইউনাইটেড ইন্ডিয়া র‌্যালি, আক্ষরিক অর্থেই গোটা দেশের বিরোধী মহাজোটের আকার নিয়েছে। ফলে গোটা ভারতের রাজনীতিবিদদের চোখ আজ কলকাতায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৯
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।