সিপিএমের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি রোববারের জনসভা থেকে বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দুই জুলুমবাজ সরকার। এরা একে অপরের সহযোগী।
এছাড়া বামেদের ব্রিগেড থেকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে একযোগে আক্রমণ করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র৷ বক্তব্যের শুরুতেই তার কথায় ১৯ জানুয়ারী তৃণমূলের ব্রিগেডের প্রসঙ্গ উঠে আসে৷ তিনি বলেন এখানে একটা ব্রিগেড হয়েছিল, তাতে প্রায় ২৩জন বক্তা ছিলেন৷ আজ একটা ব্রিগেড, যেখানে ৯ জন বক্তা৷ কিন্তু শোনার লোক দ্বিগুণেরও বেশি৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোপন বিজেপি প্রীতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন সূর্যকান্ত মিশ্র৷ এছাড়া তিনি বলেন, ধ্বংসের পথে পশ্চিমবঙ্গ৷ এর থেকে যদি নিজেদের বাঁচাতে হয়, মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে৷ এটা জনগণের ব্রিগেড৷
৩৪ বছরের বাম জামানার পতন তার আমলেই৷ তবুও বামেদের অস্তিত্ব রক্ষার ব্রিগেডের সেরা আকর্ষণ হয়ে উঠলেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ লাল পতাকা আবৃত মাঠে দুধ সাদা অ্যামবাসাডার প্রবেশ করতেই লাল সেলামে মুখরিত হল ব্রিগেড ময়দান৷ গাড়ি ঘিরে উপচে পড়ল ভিড়৷ ঠিক যেন নতুন অক্সিজেনের সন্ধান পেলেন হতোদ্যম বাম নেতা-কর্মীরা৷ গাড়ির মধ্যে থেকেই হাত নাড়লেন বছর ৭৪-এর বুদ্ধবাবু৷ চারদিকে করতালি৷ সাবেক মুখ্যমন্ত্রীকে একবারের জন্য ছুঁয়ে দেখার ভিড়৷
মেঠো পথ পেরিয়ে বুদ্ধদেবের গাড়ি ক্রমশ এগিয়ে আসছে মঞ্চের দিকে৷ আনন্দের জোয়ার সর্বত্র৷ তাকে স্বাগত জানাতে হাজির সুজন চক্রবর্তী, ফুয়াদ হালিম, মহম্মদ সেলিমের মত বাম নেতৃত্বরা৷ চারদিকে আওয়াজ একটাই৷ লাল সেলাম, লাল সেলাম৷
মানুষ তখন ছুটছে বুদ্ধ দর্শনে৷ কিন্তু না৷ সবার সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি৷ গাড়ির চারপাশে পার্টির কর্মীদের দেখে আবেগ তাড়িত মধ্য সত্তরের মানুষটিও৷ হাত নাড়লেন গাড়ির মধ্যে থেকেই৷ ভরসা দিলেন তিনি আছেন লড়াইতে, মেহনতি মানুষের পাশে৷ কে বলবে ২০১১ সালে এই মানুষটিকেই দায়ী করা হয়ছিল ৩৪ বছরের বাম সাম্রাজ্য পতনের জন্য৷ কঠিন সময়ে সে কথা মনে করতে রাজি নয় কেউ৷
তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে গাড়ি থেকে নামেননি সাবেক মুখ্যমন্ত্রী৷ ভাষণ শুনেছেন গাড়িতে বসেই৷ প্রায় ঘন্টাখানেকের উপস্থিতির পর তিনি ফিরে যান বাড়িতে৷ তবে তার উপস্থিতি এখনো যে বাম নেতা, কর্মীদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ রোববারের ব্রিগেডের জনসভা তা ফের প্রমাণ করলো৷
বাংলাদেশ সময়: ২৩০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৯
এমএইচএম