তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ হলো- কেন্দ্রীয় সরকার ভারতে পেঁয়াজের দাম কমানোর জন্য হঠাৎ করে রপ্তানির ক্ষেত্রে ‘লেটার অব ক্রেডিট’ (এলসি) পাঁচগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ মহারাষ্ট্রের বন্যা এবং এলসি বৃদ্ধি, এ দুই কারণে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে কয়েক মাস আগেও মহারাষ্ট্রের নাসিকের একমণ পেঁয়াজের বস্তার দাম কলকাতার পাইকারি বাজারে ৬০০ থেকে ৭০০ রুপির মধ্যে ছিল। দাম বাড়তে বাড়তে ওই বস্তা ১২শ রুপিতে পৌঁছায়। তখন কলকাতার পাইকারি বাজারগুলোতে এক কেজি পেঁয়াজের দাম দাঁড়িয়েছিল ৩০ রুপিতে। তারপর হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে কয়েকদিন আগে চল্লিশ কেজির বস্তা ২ হাজার রুপিতে পৌঁছায়। এর অর্থ হলো- পাইকারি বাজারেই এক কেজি পেঁয়াজের দাম প্রায় ৫০ রুপি। ফলে খুচরা বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম ৬০ থেকে ৭০ রুপির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
কলকাতার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার শিয়ালদহর কোলে মার্কেটের কর্মকর্তা, রাজ্য সরকারের দ্রব্যমূল্য সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সদস্য কমল দে জানান, পেঁয়াজের দাম নিয়ে কলকাতায় ফটকাবাজি চলছে। এ বাজারে প্রচুর পেঁয়াজ মজুদ আছে। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) মহারাষ্ট্র ও অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে গাড়ি বোঝাই করে ২৫ টন পেঁয়াজ কলকাতায় এসেছে। মহারাষ্ট্র থেকে সরবরাহ কমে যাওয়ায় অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, এমনকি মধ্যপ্রদেশ থেকেও এখানে পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে।
এতোদিন ভারতীয় পেঁয়াজ বিদেশে রপ্তানি হতো। দামে নিয়ন্ত্রণ আনতে কেন্দ্রীয় সরকার রপ্তানি মূল্য বাড়িয়ে দেওয়ায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পেঁয়াজ অন্য রাজ্যে সরবরাহ বেড়ে গেছে। এরপরও চাহিদা অনুযায়ী যোগান কম। ফলে প্রতিদিনই দাম ওঠানামা করছে। এর জেরে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ রুপিতে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে ধীরেধীরে যোগান অনেকটাই বাড়ছে।
এদিকে রাজ্য সরকার নিয়ন্ত্রিত নিজস্ব স্টলগুলোতে অনেক কম দামে পেঁয়াজ মিলছে। এ স্টলগুলোর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন ‘সুফল বাংলা’। দক্ষিণ ভারত থেকে আসা লাল রঙের ভালো মানের পেঁয়াজ স্টলে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪২ রুপি। নাসিক পেঁয়াজ ৩৩ রুপি। এ মানের পেঁয়াজ কলকাতার খুচরা বাজারে ৬০ রুপি দরে বিক্রি হচ্ছে। কলকাতাসহ বিভিন্ন জেলা মিলিয়ে স্থায়ী ও অস্থায়ী মোট ১১৮টি স্টল রয়েছে, যেখানে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে।
কমল দে ও রবীন্দ্রনাথ কোলের মতে, এখন রাজ্যের চাহিদার পুরোটাই মেটাতে হচ্ছে অন্য রাজ্যে থেকে আনা পেঁয়াজ দিয়ে। রাজ্যে উৎপাদিত পেঁয়াজ শেষ। পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদিত নতুন পেঁয়াজ ফের বাজারে আসবে ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকে। এরসঙ্গে মহারাষ্ট্রসহ অন্যরাজ্যের উৎপাদিত নতুন পেঁয়াজ এ বছরের নভেম্বর থেকে বাজারে আসবে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসলেই পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশে এর দাম কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯
ভিএস/এইচএডি