ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

শ্রদ্ধার সঙ্গে মাতৃভাষা দিবস পালন করছে কলকাতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
শ্রদ্ধার সঙ্গে মাতৃভাষা দিবস পালন করছে কলকাতা

কলকাতা: মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কলকাতাস্থিত বাংলাদেশ উপদূতাবাসে অত্যন্ত আড়ম্বরপূর্ণভাবে পালন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে উপ-দূতাবাস প্রাঙ্গণে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। পতাকা অর্ধনমিত করেন উপ-দূতাবাস প্রধান তৌফিক হাসান।

এরপর তিনি বলেন, দিবসটি উপলক্ষে বিশ্বের সব ভাষাভাষী মানুষকে জানাই শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। বিশ্বে স্থাপিত প্রথম বাংলাদেশ মিশন এটি।

সেই মিশন দিনটিকে পালন করছে। আজকের দিনে ১৯৫২ সালের সব ভাষা শহীদকে স্মরণ করছি এবং একইসঙ্গে স্মরণ করছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে। যিনি এক্ষেত্র ছিলেন প্রধান কান্ডারি।

এছাড়া তিনি বলেন, আজকের দিনের মাহাত্ম্য এটাই যে, প্রত্যেকটা মানুষ যেন তার নিজ মাতৃভাষাকে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা করে। শুধু নিজের নয় অন্য মাতৃভাষাকেও শ্রদ্ধা করে, সেই শিক্ষাই দেয় দিনটি। সে কারণে আমি খুবই কৃতজ্ঞ ইউনেস্কোর কাছে, যারা মাতৃভাষা বাংলাকে সম্মান জানিয়েছে এবং একুশে ফেব্রুয়ারিকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

এরপর একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে কলকাতার বাংলা ভাষাপ্রেমী কবি, সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতি কর্মীদের উপস্থিতিতে প্রভাতফেরি হয়ে উঠেছিল উৎসবের মহাক্ষেত্র। হারমোনিয়াম, ঢোল, বাঁশির সঙ্গে বাঙালির মুখে ছিল ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কী ভুলিতে পারি’। হৃদয় নিংড়ানো আবেগময় পরিবেশ ছিল প্রভাতফেরির মিছিলে। উপস্থিত ছিলেন উপদূতাবাসের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

প্রভাতফেরিটি পার্ক সার্কাসে অবস্থিত বাংলাদেশ গ্রন্থাগার থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরণি হয়ে বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস প্রাঙ্গণের শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। শহীদ মিনারে পুষ্প অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন ভাষাপ্রেমী সাধারণ মানুষ, কলকাতার বিশিষ্টজনেরা।

এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এছাড়া এই প্রাঙ্গণে বিকেলের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে অংশ নেবেন রবীন্দ্রভারতীর শিক্ষার্থীসহ ১৩টি দেশ। যারা নিজ নিজ ভাষায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে।

কলকাতায় পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।  ছবি: বাংলানিউজ

উপদূতাবাস ছাড়াও কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে স্মরণ করে বাঙালিরা। রবীন্দ্রসদন সংলগ্ন তারামণ্ডলের পাশে ভাষাশহীদ বেদীতে পুষ্পার্পণ করেন কলকাতার মহানাগরিক ফিরাদ হাকিমসহ বিশিষ্টজনেরা।

এছাড়া কলকাতার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ’ দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে। বাংলা ভাষাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে দুদিন ধরে নানা বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান করে থাকে এই প্রতিষ্ঠানটি। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।

এছাড়া কলকাতার কার্জন পার্ক, বেলেঘাটা, দেশপ্রিয় পার্ক উল্লেখযোগ্যভাবে ভাষাশহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস দিনব্যাপী পালন করছে। এছাড়া কলকাতার প্রতিটি রাজনৈতিক দল নিজও নিজও ভঙ্গিতে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করছে।

এ বিষয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, আমি ভারতীয় হলেও প্রথমে বাঙালি তাই আমার মাতৃভাষা বাংলা। আর এই বাংলা ভাষা গর্বের সঙ্গে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করেছে বাংলাদেশের কারণে। রফিক, জব্বার, সালাম, বরকতদের আমরা কোনোদিন ভুলবো না।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
ভিএস/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।