এ মুহূর্তে করোনা ভাইরাসে অধিক ভুক্তভোগী চীন, ইতালি, ইরান, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও কোরিয়ার মতো দেশগুলো থেকে ভারতে আসা লোকজনের গতিবিধির ওপর নজর রাখাই সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি জেলায় এরই মাঝে ১৪৪ ধারা জারি করে লোকজনের একসঙ্গে চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি সন্দেহভাজনদের গতিবিধি খেয়াল রাখতে পুলিশ প্রশাসনকেও মাঠে নামানো হয়েছে। সন্দেহভাজনরা সরকারি নির্দেশ মেনে ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকছেন কি না, তা নজরে রাখা হচ্ছে। আর তা করতে গিয়ে পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
জমায়েত থেকে এই রোগ ছড়ালে অন্য অনেক দেশের মতো ভারতেও তা মহামারীর আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) ডিজি ডা. বলরাম ভার্গব।
সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক ও নার্সরা করোনা ওয়ার্ডের ডিউটি এড়াতে চাইছেন বলেও অভিযোগ উঠছে। এসবের জেরে করোনার চিকিৎসা পরিকাঠামো নিয়ে চিন্তিত সরকার।
এদিকে করোনার হুমকি মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গসহ প্রায় সব রাজ্যেই সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কলকাতায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জিম, সুইমিং পুল। রাজ্যের হাইকোর্টও কড়া নিরাপত্তা জারি করেছে। জরুরি মামলা ছাড়া সব ধরনের মামলার শুনানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
করোনা আতঙ্কে সরকারি নোটিশ না থাকলেও বাস, মেট্রোতে লোক চলাচলে আমূল পরিবর্তন এসেছে। এ ধরনের যানবাহনগুলোতে বর্তমানে মানুষের সমাগম নেই বললেই চলে। প্রেক্ষাগৃহ, শপিং মল, বাজার-হাট, এমনকী কলকাতার পথেও খুব কম লোক চলাচল করছে।
সরকারিভাবে অলিখিত নোটিশে বলা হয়েছে, খুব প্রয়োজন না হলে অহেতুক কেউ যেন বাসা থেকে বের না হন। মানুষের জটলা যাতে না হয়, সেদিকে নজ রাখতেই এমন নির্দেশ দিয়েছে মমতা সরকার। এর বাইরে পশ্চিমবঙ্গকে ঘিরে রাখা রাজ্যগুলোর সীমান্তে চলছে চেকিং। পরীক্ষার পর প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে।
এদিকে করোনায় কী কী করণীয় নিউমার্কেটসহ কলকাতা শহরের বাজারগুলোতে পথে পথে লোকজনকে তা অবহিত করছে পুলিশ ও সমাজসেবীরা। করোনা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে এ সপ্তাহের শেষে বাজারে আসছে পর্যাপ্ত পরিমাণ মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এছাড়া কালোবাজারি রুখতে প্রতিটি মাস্কের গায়ে সরকার মূল্য নির্ধারণ করে দিচ্ছে।
যদিও এখন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে কারও করোনা আক্রান্তে খবর পাওয়া যায়নি। তারপরও উদ্বেগ রয়েছে রাজ্যে বিশেষ করে রাজধানী কলকাতায়।
বাংলাদেশ সময়: ০০০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২০
ভিএস/এইচজে