এ যেন এক অশনিসংকেত গোটা কলকাতার প্রায় সর্বত্রই। ফলে শহর কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলাগুলোয় জায়গায় জায়গায় চলছে বিক্ষোভ ও অবরোধ।
এদিনও সকাল থেকেই দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ, বেহালা, যাদবপুর, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড, সন্তোষপুর, বাঘাযতীন, হরিদেবপুর, বাদামতলা, ঠাকুরপুকুর, কালীতলা, ডায়মন্ড পার্ক, গড়িয়া, গরফাসহ বেশ কিছু জায়গায় রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয়রা।
কলকাতা করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী, শুধুমাত্র শহর কলকাতায় ভেঙেছে সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি গাছ। যে গাছগুলোর বয়স ৪০ থেকে ৮০ বছর। শহরের কয়েকশো বাতিস্তম্ভ, সিগনাল প্যাডেল ও বিদ্যুৎ পরিবাহী পোস্টগুলোও হেলে পড়েছে। যতক্ষণ না গাছগুলো পুরোপুরিভাবে সরানো যাচ্ছে ততক্ষণ সম্পূর্ণভাবে তোলা যাবে না বাতিস্তম্ভগুলো।
ফলে টালিগঞ্জ থেকে বেহালা, এক বেহাল দশায় ভুগছে ওই অঞ্চলের বাসিন্দারা। তবে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছে শহর কলকাতা। কিন্তু স্বাভাবিক হওয়ার শুরুতে ঘুচতে শুরু করেছে মানুষের সাথে মানুষের শারীরিক দূরত্ব। যেহেতু করোনা দাপট কোনোমতেই কমেনি। ফলে এনিয়ে রাজ্য সরকারের একপ্রকার ঘুম উড়েছে।
এছাড়া মমতার সরকারের আরও উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ হয়েছে, মহারাষ্ট্র থেকে পশ্চিমবঙ্গের ঢুকতে শুরু করছে পরিযায়ী শ্রমিকদের ৪১টি ট্রেন। প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক মহারাষ্ট্র থেকে ফিরে আসছে পশ্চিমবঙ্গে। যেহেতু ভারতের এক-তৃতীয়াংশ করোনা আক্রান্ত মহারাষ্ট্রে। আর সেখান থেকেই প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক পশ্চিমবঙ্গের ফিরে আসছে। ফলে রাজ্যে লাগামছাড়া সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ থেকে রাজ্য সরকার।
পশ্চিমবঙ্গবাসী দুমাসের উপর যে কষ্ট করে, ভাইরাসের মোকাবিলায় লকডাউন মানলো তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে এমনটাই মত ড. অমিতাভ নন্দীর। তারমতে, এখন থেকে রাজ্য সরকার একটিও ভুল পদক্ষেপ নিলে, ভারতে করোনা আক্রান্ত মহারাষ্ট্রকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে পশ্চিমবঙ্গ।
সর্বশেষ খবর অবধি, ভারতে ১ লাখ ৫১ হাজার ৭৭৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৩৩৭ জনের।
এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের নিরিখে আক্রান্তের সংখ্যাটা হলো ২ হাজার ২৪০ ও মৃত্যু হয়েছে ২১১ জনের। ফলে ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও করোনাভাইরাসের দাপটে একপ্রকার খাঁচায় বন্দি পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী শহর কলকাতা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২০
ভিএস/এইচএডি