ভারতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম চীনেরও সমান সংখ্যক সেনা নিহত হয়েছে বলেও দাবি জানিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তবে চীনভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যমের এডিটর টুইটে বলা হয়েছে, চীনের ৫ সৈন্য নিহত ও ১১ জন আহত।
এরই মাঝে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার (১৯ জুন) বিকেল ৫ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই বৈঠক হবে।
এদিকে চীনের সঙ্গে এই সীমান্ত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ভারতবাসীর মধ্যেও। বিভিন্ন অঞ্চলে চীনা পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
কলকাতাবাসীরাও এমন ডাক তুলছেন। চীনের উদ্দেশ্যে তাদের বক্তব্য, ‘এটা ১৯৬২ সালের ভারত নয়, ২০২০ সাল। এখন চোখে চোখ রেখে ভারতীয় সেনারা চীনকে জবাব দিচ্ছে, দেবে’।
এরই মাঝে চীনা পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো লাদাখবাসী ইঞ্জিনিয়ার সোনম ওয়াংচুকের একটি ভিডিওতে সংহতি জানিয়েছে লাখ লাখ ভারতীয়। স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই ভিডিওটি ৪১ লাখ ভিউ হয়েছে। ভিডিওতে বলা হয়, তাতে ‘আর্মি দেগি বুলেট সে, নাগরিক দেগি ওয়ালেট সে। ’ অর্থাৎ ভারতীয় সেনারা গুলির জবাব গুলিতে দেবে, আর নাগরিকরা জবাব দেবে চীনা পণ্য ও অ্যাপ না-কিনে মানিব্যাগের মাধ্যমে। এ ধরনের আহ্বান আরও জোরালো হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
চীনের প্রতি ক্ষোভের জের ছড়িয়েছে ভারতের বাজারগুলোতে। এরই সূত্রে বুধবার অচেনা চিত্র চোখে পড়ে কলকাতার বড় বাজারের বাগরী মার্কেটে। এখানে চীনা বিভিন্ন পণ্য ও খেলনা বিক্রি হয়। কিন্তু এদিন মানুষজন চীনা পণ্যের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছিল না।
বিক্রেতারা জানান, গতকাল থেকে চীনা পণ্যের বদলে ভারতীয় পণ্য বেশি বিক্রি শুরু হয়েছে। যদিও চীনা পণ্যের দাম কম, তবুও মানুষ বেশি মূল্য দিয়ে ভারতীয় পণ্য কিনতে আগ্রহী। এছাড়া লকডাউনের কারনে চীনের মাল প্রায় তিন মাস হলো আসছে না, যা ছিল আগের স্টক। এখন চাহিদা ভারতীয় পণ্যের। তবে এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেক তেমন কোনো নির্দেশনা আসেনি।
জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান সাজানোর জিনিস বিক্রি করেন শাহাজাদ আলম নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি জানান, এখনও সরকারের কাছ থেকে কোনো অর্ডার আসেনি আমাদের কাছে, যে চীনা পণ্য বিক্রি করা যাবে না। অর্ডার এলে আমার বন্ধ করে দেবো। তবে চীনের মাল কম বিক্রি হচ্ছে। এখানে সব চীনা জিনিস। তাই বাজার ডাউন।
রাজেশ তিওয়াড়ী নামে আরেক ব্যাবসায়ী জানান, যত দিন চীনা পণ্য পাওয়া যাবে ততদিন বিক্রি করবো। না পেলে ভারতীয় পণ্যই বিক্রি করেবো। তবে লকডাউন নয়, কলকাতায় প্রায় এক বছর ধরে চীনা পণ্য আসা অনেকটাই কমে গেছে। আর গত ৩ মাসে একটাও নতুন পণ্য ঢোকেনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২০
ভিএস/এইচজে