ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ড্রাগন চাষ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২০
ড্রাগন চাষ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে ড্রাগন, ছবি: বাংলানিউজ

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের গ্রামবাংলায় ড্রাগন ফল চাষের চাহিদা বাড়ছে। বিশেষ করে পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছে মেদিনীপুর জেলার খেজুরি।

এখানের ঘরে ঘরে এখন কমবেশি ড্রাগনের চাষ হচ্ছে। এছাড়া গতবছর খেজুরিতে পশ্চিমবঙ্গ কৃষি দপ্তর উৎসাহ দিয়ে বিনা অর্থে চাষিদের ড্রাগন ফলের চারা দিয়েছিল।

সবার বাগানেই ফলন হয়েছে। তবে ওই গ্রামে দেবাশীষ হাজরার বাগানে সবচেয়ে ভালো ফলন হয়েছে। দেবাশীষ বাংলানিউজকে বলেন, ড্রাগন ফলের নাম শুনে কৃষি দপ্তর থেকে চারাগাছ সংগ্রহ করি। উৎসাহের সঙ্গে ৪৮টি গাছ লাগিয়েছিলাম। সেই গাছগুলো এখন ফলে ভর্তি। বাজার মূল্য বেশি হলেও ৪০০ রুপি কেজি দরে বিক্রি করেছি।

তার মতে, গাছগুলোয় ফলন ধরাতে জৈব সার ব্যবহার করেছেন। এক বছর গাছগুলো পরিচর্যা করার পর ফল এসেছে। এবং অন্যান্যদের মতো দেবাশীষও রাসায়নিক ব্যবহার করেননি বলে প্রতিটা চারা বেঁচেছে এবং সব গাছেই ফল এসেছে বলে জানান।

রাজ্য কৃষি দপ্তরের মিহিরকুমার প্রধান বাংলানিউজকে বলেন, ড্রাগন ফল হলো ‘সর্বরোগহরা’। পশ্চিমবঙ্গ তথা বিশেষ করে খেজুরির পরিবেশ ও মাটি ড্রাগন চাষের জন্য আদর্শ। আমরা পরীক্ষামূলকভাবে ড্রাগনের চাষ করে সফল হয়েছি। আগ্রহী চাষিদের আমরা চারা দিচ্ছি। ফলগুলো সরকারি উদ্যোগে বিক্রির ব্যবস্থা করার জন্য জেলা কৃষি দপ্তরের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছি।

এছাড়া সহ কৃষি অধিকর্তা অভিজিৎ মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, বিপণনের সম্ভাবনা বাড়লে আমরা চাষিদের ড্রাগন চাষ সম্পর্কে আরও বেশি করে উৎসাহিত করব। তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এক্ষেত্রও গ্রামে গ্রামে গড়ে তোলা হবে প্রশিক্ষণ শিবির।

ড্রাগন গাছ এক ধরনের ক্যাকটাস জাতীয়। গাছের কোনো পাতা নেই। গাছ সাধারণত ১ দশমিক ৫ থেকে ২ দশমিক ৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। ড্রাগন ফল পাকলে খোসার রং লাল হয়। শাঁস গাঢ় গোলাপি বা সাদা রঙের এবং রসালো প্রকৃতির হয়। বীজগুলো ছোট ছোট। কালো ও নরম। একটি ফলের ওজন দেড়শ’ গ্রাম থেকে ছয়শ’ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ফল পুষ্টিগুণে ভরপুর। বেলে ও দোআঁশ মাটি ড্রাগন চাষের পক্ষে আদর্শ। চারা রোপণের জন্য উপযোগী সময় হলো এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। রোপণের পর এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। এটি একটি সম্ভাবনাময় ও লাভজনক চাষ। এক বিঘা জমিতে ধান বা অন্য ফসল চাষ করে যেখানে বছরে চার থেকে পাঁচ হাজার রুপি লাভ হয়, সেখানে ড্রাগন ফল চাষে লাভ বেশি।

মূলত আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ায় ড্রাগন ফলের চাষ সবচেয়ে বেশি হয়। বর্তমানে ভারতেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ড্রাগন ফলের চাষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০২০
ভিএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।