কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয় ও প্রধান প্রশাসনিক ভবন নবান্ন অভিমুখে বিজেপির অভিযানের শুরু থেকেই বাঁধে সংঘর্ষ। বিজেপির যুব মোর্চার নবান্ন অভিযান ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নবান্নমুখী বহু রাস্তায় ব্যারিকেড করে দেয় রাজ্য পুলিশ।
সেই ব্যারিকেড ভাঙতে গিয়ে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। এদিন কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে পশ্চিমবঙ্গের রাজপথ।
হাওড়া ময়দানের সামনে গাড়ির টায়ার জ্বেলে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা, জিটি রোডে বোমাবাজি করা হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জিটি রোডে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে দেখা যায়। শহরের একাধিক জায়গায় পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ, জলকামান দিয়ে পানি ছিটিয়ে এবং লাঠিচার্জ করে বিজেপির মিছিল ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে হাওড়া ব্রিজে দীর্ঘক্ষণ জলকামান চালায় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) খুনসহ একাধিক ইস্যু নিয়ে বিজেপির নবান্ন অভিযান শুরু হয়। বুধবার রাতেই কলকাতায় আসেন যুব বিজেপির জাতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য।
পুলিশের দাবি বিজেপির নবান্ন অভিযান মিছিলে মিলেছে আগ্নেয়াস্ত্র। তেজস্বী সূর্যের এক সঙ্গীর কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি মিছিলে পাওয়া গিয়েছে ধারালো অস্ত্রও। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে বিজেপির এক কর্মীকে। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে সবটাই রাজ্য শাসকদলের চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন বিজেপির নেতৃত্ব। উদ্ধার অস্ত্র সভাপতির দেহরক্ষীর অস্ত্র বলে দাবি করেছে বিজেপি।
স্যানিটাইজেশনের জন্য দুই দিন বন্ধ রাখা হয়েছিল নবান্ন ভবন। যদিও বিজেপির এই র্যালিকে ঘিরে বাড়তি পুলিশি প্রহরা ছিল সর্বত্র। রাস্তায় ছিল বাড়তি প্রায় ৮ হাজার পুলিশকর্মী। কলকাতা ও হাওড়া মিলে চার জায়গায় জমায়েত হয়েছেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। রাজ্য বিজেপির সদর দপ্তর কলকাতার সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, হেস্টিংস, হাওড়া ময়দান এবং চতুর্থ মিছিলটি শুরু হয় হাওড়ার সাতরাগাছি থেকে।
গত ৬ অক্টোবর রাজ্যের ব্যারাকপুরের যুবনেতা মণীশ শুক্লাকে প্রকাশ্যে দিবালোকে গুলি করে খুন করে দুই সন্ত্রাসী। সেদিনই গোটা কলকাতা জ্বলে ওঠে। এরপর ওই অঞ্চলের বিজেপি সাংসদ অজুর্ন সিং এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, খুনের সঙ্গে তৃণমূল জড়িত এবং সরাসরি কলকাতার মেয়র ফিরাদ হাকিমের দিকে আঙুল তোলেন অর্জুন সিং। যদিও দুই খুনিই ধরা পড়েছেন।
এরপরই খুনসহ আরও কিছু ইস্যু নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানে পথে নেমেছিলেন বিজেপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী-সমর্থকরা। সংবাদ সম্মেলনে যুব বিজেপির জাতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য বলেন, পশ্চিমবঙ্গের আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। মমতার সরকার অনেক হিংস্র হয়ে উঠেছে। না হলে জলকামানে পানির সাথে কেউ নীল রঙের কেমিক্যাল ব্যবহার করে? যাদের শরীরে পড়েছে তাদের সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে অনেকের বমি শুরু হয়েছে। বিশ্বের কোথাও জলকামানে কেমিক্যাল ব্যহার করা হয় না, মমতার রাজ্য ছাড়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২০
ভিএস/এমজেএফ