কলকাতা: এর আগে ঘোড়ার রক্ত থেকে সিরাম অর্থাৎ রক্তের ঈষৎ হলুদ তরলাংশ দিয়ে গবেষকরা আশার সঞ্চার করেছিলেন র্যাবিস, হেপাটাইটিস বি, ডিপথেরিয়া ও টিটেনাসের মতো ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজাত রোগ নিরাময়ের। এবার সেই অভিজ্ঞতায় ভর করেই কোভিড-১৯ রোগীদের সারিয়ে তোলার ব্যাপারে আশাবাদী ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)।
ঘোড়ার রক্ত অ্যান্টিবডিযুক্ত, যে কারণে বিষাক্ত সাপ কামড়ালেও ঘোড়ার কিছু হয় না। সেই কারণে ঘোড়ার সিরাম দিয়েই তৈরি হয় সাপের বিষের প্রতিষেধক। গবেষণায় দেখা গেছে, এবার অ্যান্টিবডিযুক্ত ঘোড়ার সিরাম প্রয়োগে সেরে উঠতে পারেন করোনা রোগী। যাকে বলা হচ্ছে, ‘অ্যান্টিসেরা’। আইসিএমআর-এর পুনের শাখা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভায়রোলজি এবং হায়দ্রাবাদের কোম্পানি বায়োলজিক্যালস লিমিটেড এটি তৈরি করেছে।
ইতোমধ্যে অভিনব এই গবেষণা মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া-ডিসিজিআই’র অনুমোদনের পর একটি অতিকায় বড় মাপের ইঁদুর ও বানরের শরীরে প্রয়োগের পর অ্যান্টিসেরা কাজ করেছে বলেই জানিয়েছেন আইসিএমআর-এর ডিজি ডা. বলরাম ভার্গব। এমনকি প্রাণীর শরীরে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তাই মানবদেহেও অ্যান্টিসেরা কাজে দেবে বলেই আশাবাদী ভারত সরকারের প্রতিষ্ঠানটি।
অবশ্য এরও আগে করোনামুক্ত রোগীদের প্লাজমা, কোভিড-১৯ শনাক্ত রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু উল্লেখযোগ্য ফল মেলেনি। কিন্তু অ্যান্টিবডিযুক্ত ঘোড়ার সিরাম কোভিড-১৯ নিরাময়ে কাজে দেবে বলেই আশাবাদী ভারতীয় গবেষকরা। তবে এটাকে ভ্যাকসিন নয়, ওষুধ বলা যেতে পারে।
আইসিএমআর-এর এপিডেমিনোলজি অ্যান্ড কমিউনিকেবল ডিজিজেস বিভাগের প্রধান ডা. সমীরণ পাণ্ডা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, সুস্থ ঘোড়ার শরীরে নিষ্ক্রিয় রক্ত থেকে পিউরিফায়েড সিরাম ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। ফলে ভ্যাকসিন যতদিন না আসছে এ ধরনের ওষুধ করোনা রোগীদের সেরে উঠতে সাহায্য করবে। আক্রান্তদের অসুস্থতা রুখতেও এটি কাজে দেবে বলেও জানান ডা. পাণ্ডা।
অন্যদিকে, ভারতে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের মানবদেহে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল চলছে চণ্ডীগড়ের সরকারি হাসপাতালে। এখনো পর্যন্ত কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তাই অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন নিয়েও প্রবল আশাবাদী ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২০
ভিএস /এমজেএফ