কলকাতা: কলকাতার কুমারপাড়ায় চলছে শেষ মুহূর্তে দুর্গা মূর্তির কাজ। কোথাও চলছে প্রতিমার ওপরে রং-তুলির শেষ আঁচড় কোথাও আবার প্রতিমার আবরণী সেজে ওঠার পালা।
করোনায় কোপ পড়েছে ভারতের অর্থনীতিতে। বাদ পড়েনি কলকাতাও। তাই করোনার কোপ পড়েছে কলকাতার দুর্গাপূজার বাজেটও। অনেক বারোয়ারি পূজা কমিটি পূজার বাজেট নিয়ন্ত্রণে রাখতে কমিয়ে ফেলেছে মণ্ডপের সাজ-সরঞ্জাম থেকে প্রতিমার উচ্চতা। ফলে কলকাতার অধিকাংশ কুমারপাড়ায় এবারে ছোট দুর্গা প্রতিমার চাহিদা বেশি। আর এতে বিপাকে পড়েছেন মৃৎ শিল্পীরা।
সাধারণত ছোট প্রতিমার চাহিদা থাকে বাড়ির পূজায়। তবে এবার ছোট প্রতিমা চাহিদা কলকাতা বারোয়ারি পূজা কমিটিগুলোয়। বিগত বছরগুলোতে যেখানে ১২ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার প্রতিমার চাহিদা সব থেকে বেশি ছিলো, করোনার কারণে এবার সেখানে ছয় থেকে সাত ফুটের প্রতিমার চাহিদা।
মৃৎশিল্পীদের দাবি, কম বাজেটে জেরে ছোট প্রতিমায় সেভাবে এবছর লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না তারা। সাধারণত ছোট প্রতিমা বানানো খাটুনি বেশি। আবার বিক্রি হয় কম দামে। তাই লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না তারা।
কলকাতার বিখ্যাত প্রতিমাশিল্পী গণেশ পাল বলেন, ফিনিশিং টাচ চলছে। এবারের বারোয়ারি পূজা কমিটিগুলোর চাহিদা কম বাজেটের প্রতিমা। সে কারণেই প্রতিমার উচ্চতা কমেছে। গত বছরের যে প্রতিমা কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ হাজার রুপি গিয়েছিল সেই প্রতিমা এবার ১০ হাজার মধ্যে চাইছে। অথচ এবারে প্রতিমা সম্পূর্ণ করতে অর্থাৎ খড়, মাটি, রং, আবরণীর দাম অনেক বেশি। অপরদিকে ছোট মূর্তির কারণে দামও পাচ্ছি না। কোনোভাবে মানিয়ে নিচ্ছি। তবে অর্থনীতির প্রভাব এই বছর পূজার আয়োজনে বা প্রতিমার উচ্চতায় পড়লেও এর প্রভাব পূজার চারদিনে পরবে না এমনই দাবি কলকাতায় বারোয়ারি পূজা কমিটিগুলোর। কলকাতার এক বারোয়ারি পূজা কমিটির সম্পাদক রমেশ দাস বলেন, সাধারণের পকেটে টাকা নেই। তাই পূজার বাজেট কম। তার ওপর মানুষ এবছর সেভাবে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরবে না। তাই করোনাকালে পূজার আয়োজন থেকে প্রতিমার উচ্চতা সবই কম। তবে এর প্রভাব পূজার চারদিন মানুষের মধ্যে পড়বে না। পুরোপুরি উৎসবের আমেজে বহাল থাকবে শহরে।
‘এবছরটা কোনোভাবে পার হয়ে যাবে। তবে আগামীবছর যেন সব দুর্ভোগ দূর হয়। কেটে যায় যেন করোনার কালো মেঘ। ’ এটাই প্রার্থনা কলকাতা মৃৎশিল্পী থেকে শুরু করে পূজা কমিটিসহ উৎসবমুখর বাঙালির।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২০
ভিএস/এএটি