কলকাতা: করোনাকালের শিথিল লকডাউনে পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা হবে কিনা, তা নিয়ে রাজ্যে শিক্ষামন্ত্রী একাধিক বৈঠক করেছেন শিক্ষা পর্ষদের দপ্তরে। অবশেষে ঠিক হয়েছে ডিসেম্বর থেকে রাজ্যের স্কুল, মাদ্রাসা বাদে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলা হবে।
কিন্তু খোলার পর কি পদ্ধতিতে মেনে চলবে সে বিষয়ে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি, ভারত) একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিয়েছে। দীর্ঘ নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যত কম সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে ক্যাম্পাসে পঠন-পাঠন চালানো যায় ততই ভালো।
প্রথম ধাপে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে গবেষক শিক্ষার্থীদের। ল্যাবরেটরিতে গবেষণা করে এমন গবেষকরাই অগ্রাধিকার পাবেন। তারপর ধীরে ধীরে আনতে হবে চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থীদের, যাদের উচ্চশিক্ষা এবং চাকরিতে যোগদানের ব্যাপার রয়েছে।
তারপর আনতে হবে অন্যান্য বর্ষের স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের শিক্ষার্থীদের। এরপরেও বলা হয়েছে ক্যাম্পাসে না আসতে চাওয়া অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা অনলাইনে পড়াশোনা করতে চাইলে তা সহযোগিতা করতে হবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে। তাদের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
এছাড়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধ। ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীরা এখনই যোগ দিতে পারছেন না। তাদের জন্য যথাযথ পরিকল্পনা করতে হবে। পাশাপাশি অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা রাখতে তাদের জন্য। যাতে তারা প্রতিটা সেমিস্টার ও সেশনে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমান পরিসেবা পায়। এর পাশাপাশি শিক্ষার্থী, শিক্ষাকর্মী, শিক্ষক, প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং অধ্যক্ষ বা উপাচার্য, এমন কি অভিভাবকদের জন্য আলাদা আলাদা পরামর্শ এবং নির্দেশিকা দিয়েছে ইউজিসি। প্রত্যেকেই ‘আরোগ্য সেতু’ নামক অ্যাপটি ডাউনলোড করার জন্য উৎসাহিত করতে বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের।
কীভাবে এই করোনা ছড়ায়, কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, তা নিয়ে ক্যাম্পাসে পোস্টার এবং অন্যান্য মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করতে হবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
শিক্ষার্থীদের বসার বেঞ্চ, বিভিন্ন আসবাব, দরজার হাতল এবং কমন জায়গাগুলো নিয়মিত ব্যবধানে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট দিয়ে মুছতে বলা হয়েছে। ল্যাপটপ, কম্পিউটার, প্রিন্টার, বিভিন্ন গেজেট প্রভৃতি উপযুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে ঘন ঘন পরিষ্কার করতে হবে। শিক্ষার্থীদের বসাতে হবে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব মেনে, পরতে হবে মাস্ক ও সঙ্গে রাখতে হবে স্যানিটাইজার।
চিকিৎসারও বন্দোবস্ত রাখতে হবে প্রতিষ্ঠানগুলোয়। হোস্টেলগুলোতে নিয়মিত হেলথ চেকআপ করতে হবে। কারও কোনো উপসর্গ থাকলে তাকে তৎক্ষণাৎ হোস্টেল থেকে বের করে কোনো আলাদা জায়গায় রাখতে হবে। এছাড়া আরও কিছু নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে ইউজিসির পক্ষ থেকে। সববিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর উপাচার্য এবং অধ্যক্ষরা আদর্শ বিধি বলেই সহমত পোষণ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২০
ভিএস/এএটি