লিজা বলেন, একবার এক শিক্ষক বলেছিলেন, প্রাগৈতিহাসিক মেয়ে আবার কী লিখবে? সেদিন আমি কান্না করেছিলাম। অনেকেই বোঝে না, এই ধরনের ঠাট্টা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কতটা কষ্টকর!
মহাখালীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তত্ত্বাবধানে চালু হয়েছে ‘উইম্যান হলিডে মার্কেট’।
![উইম্যান হলিডে মার্কেটের নারী উদ্যোক্তা লিজা/ছবি: সুমন শেখ](http://cdn.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/Mohakhali---220170518205353.jpg)
অনুযোগ করে লিজা বলেন, আমাদের সমাজ এবং শহর এখনও প্রতিবন্ধীবান্ধব নয়। এই সিটি করপোরেশন ভবনেই হুইল চেয়ার দিয়ে ওঠার জন্য স্লিপার রাখা হয়নি। তাহলে ভাবেন, আমাদের জন্য ব্যবসা করা কতটা কঠিন!
মার্কেটে বিনা ভাড়ায় বসার সুযোগ পেয়ে লিজা বলেন, ঈদ পর্যন্ত এখানে প্রতিদিনই বসা যাবে। আশা করি, স্থানটির প্রচার হলে ক্রেতা বাড়বে। ঈদের পরে সপ্তাহে দুই দিন (শুক্র ও শনিবার) বসা যাবে। ওই দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসবে এ মার্কেট।
প্লাস্টিকের খেলনাগুলো দেখিয়ে লিজা বলেন, এগুলোতে শিশুদের আহত হওয়ার ভয় কম। এগুলো নিয়ে আমি নিজেই উদ্যোক্তা হিসেবে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।
৪ বছর বয়সে বাবা হারানো লিজা জানান, তার ভাই নেই। পরিবার থেকে মা ও বোনরা সহযোগিতা করছেন। একজন মেয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে এ হলিডে মার্কেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও জানান তিনি।
‘মামস পিকল’ এর ব্যানারে হাতে তৈরি আচার নিয়ে মার্কেটে এসেছেন দুই বান্ধবী সুফিয়া ও সামসুন্নাহার লিলি। তারা বলেন, আমরা আগে অনলাইনে কিছু বিক্রি করতাম। বাইরে প্রথমবারের মতো এসেছি। মানুষকে ফ্রেস ফলের আচার খাওয়ানোর চেষ্টা করছি। এখানে খোলা জায়গায় বসাটা একটু ঝামেলা। রোদে খুব কষ্ট হচ্ছে। আর বৃষ্টি হলে তো দাঁড়ানোই যাবে না। উপরে একটি সামিয়ানার ব্যবস্থা করা হলে রোদ থেকে বাঁচা যেতো। জায়গাটি ফ্রি পাওয়া গেছে, তবে এ রোদে ক্রেতা তো আসবে না।
হলিডে মার্কেটে নাসরিন নওরোজ এসেছেন থ্রি-পিসের কাপড় নিয়ে। তিনি বলেন, মেয়েদের জন্য নিরাপদ প্লাটফর্ম নেই। কিন্তু হলিডে মার্কেটে নিজেদের পণ্য নিয়ে আসা যায়। মেয়েদের অর্থনৈতিক মুক্তির বড় প্লাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে এই হলিডে মার্কেট।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৭
এমএন/ওএইচ/এমজেএফ/