ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প

কাটছে না চামড়া পাচারের শঙ্কা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৭
কাটছে না চামড়া পাচারের শঙ্কা পোস্তায় চামড়ার বাজার। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ঈদুল আজহায় সারাদেশে বিপুল সংখ্যক পশু জবাই হলেও সেই তুলনায় চামড়া আসছে না দেশের অন্যতম কাঁচা চামড়ার বাজার পোস্তা, হাজারীবাগ ও হেমায়েতপুর চামড়া শিল্প এলাকায়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চামড়ার দাম কম হওয়ায় খুচরা ব্যবসায়ীসহ সবাই চামড়া স্টক করছে। সবাই দর বৃদ্ধির অপেক্ষায় আছে।

এছাড়া ট্যানারি মালিকরাও সিন্ডিকেট করে চামড়া কিনছে, এ কারণেই চামড়ার দাম কম। স্টক করে রাখায় পরবর্তীতে চামড়া দেশের বাইরে পাচার হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা করছে ব্যবসায়ীরা।
 
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হাজারীবাগ ও পোস্তা এলাকার চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বললে এমন আশঙ্কার কথা জানান তারা।
 
একদিকে সাভার চামড়া শিল্প পার্ক পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়া এবং ব্যাংক লোন না পাওয়ায় ব্যবসা নিয়ে অস্বস্তিত রয়েছেন ট্যানারি মালিকরা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে চামড়া পাচারের আশংকা।
 
ট্যানারি মালিকরা বলছেন, আমরা চামড়া নিয়ে যে কাজ শুরু করাবো তার উপায় নেই। রাস্তা এখনো ঠিকমত প্রস্তুত হয়নি। নতুন মাটির ‍কারণে মেশিনগুলো দেবে যাচ্ছে। এছাড়া, আমরা প্লটগুলোর দলিলপত্র ঠিকমত বুঝে পাইনি। এতে করে ব্যাংক আমাদের কোন লোন দিচ্ছে না। এতে করে আমরা চামড়া কিনতে পারছি না। অন্যদিকে, চামড়া যদি পাচার হয়ে যায় দেশের সর্ববৃহ‍ৎ এ শিল্প হুমকির মুখে পড়বে।    
 
চামড়ার দাম না থাকায় ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করছেন। তবে ভালো দাম না পেলে সেই চামড়া দেশের বাইরে পাচারের আশংকাও করছেন কোন কোন ব্যবসায়ী।  
 
চামড়ায় লবণ দিতে দিতে এক শ্রমিক বলেন, চামড়ার দাম কম হওয়ায় সবাই লবণ দিয়ে স্টক করছে। যদি ভালো দাম না পাওয়া যায় তাহলে মালিকরা এসব চামড়া নাটোরে বড় হাটে পাঠিয়ে দেবে। তারা যেখানে দু’চার টাকা বেশি পাবে সেখানেই তো বিক্রি করবে! ইন্ডিয়াতে চামড়ার দাম বেশি। তাই দেশে দাম না পেলে এসব চামড়া নাটোর হয়ে ইন্ডিয়াতে পাচার হবে বলেও জানান এই শ্রমিক।
 
খুচরা চামড়া বিক্রেতা দুলাল বাংলানিউজকে বলেন, চামড়ার দাম না থাকায় এখন লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করছি। দেখি একটু বেশি দাম পাওয়া যায় কিনা? ১০ টাকার মাল হয়তো ৮ টাকায় বিক্রি করা যায়, কিন্তু ৫ টাকায় তো আর বিক্রি করা যায় না। তাই যেখানে ভালো দাম পাবো সেখানেই বিক্রি করবো।
 
এদিকে, প্রতিবছর দেশ থেকে ২০ শতাংশ চামড়া পাচার হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি শাহিন আহমেদ। তিনি বলেন, চামড়া পাচার রোধে বর্ডার এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। যাতে কেউ চামড়া পাচার করতে না পারে।
 
ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, বিগত বছরে একই সময়ে সারা দেশে ১ কোটি থেকে ১ কোটি ১৫ লাখ চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। সে তুলনায় এ বছর মাত্র ২৫ থেকে ৩০ লাখ চামড়া এসেছে। শুধু পোস্তা এলকায় যেখানে ৭ থেকে ৮ লাখ চামড়া আসে সেখানে ৩ লাখ চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। বাকি চামড়া যদি দেশে রাখা না যায় তাহলে বিপুল সংখ্যক চামড়া দেশের বাইরে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
 
বাংলাদেশ হাইড এন্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি হাজী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত বছরের তুলনায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ চামড়া বেচাকেনা কমে যাবে। এবং এর প্রভাব পড়বে দেশের চামড়া শিল্পের উপর।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৭
এএম/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।