ঢাকা : জুনেই আসছে পরবর্তী অর্থ-বছরের বাজেট। এ নিয়ে কম্পিউটার বাজারে হইচই পড়ে গেছে।
রাজধানীর একটি বিশেষায়িত কম্পিউটার বাজারে নির্দিষ্ট দামে পণ্য বিক্রির বিষয়ে ক্রেতাদের অভিযোগের সত্যতা অনেক দোকানদার স্বীকার করেছেন। তবে নাম প্রকাশ করতে চাননি।
এমনকি ৫০০ টাকার পণ্যতেও ১০০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দামের পার্থক্য আছে। পুরো মার্কেটে একই ব্র্যান্ডের একটি পণ্যের দাম ১ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত পার্থক্য হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা ক্রেতা স্বার্থের পরিপন্থি বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
আর বাজেট আসলেই এ বিশেষায়িত বাজারে বিভিন্ন পণ্যের অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ক্রেতারা যদি জানতে চান তাহলে বলা হয়- এবারের বাজেটে পণ্যের দাম বাড়বে।
অথচ বিপরীত চিত্রে আইটি সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতারা সরকারের কাছে বিভিন্ন রেয়াত চেয়ে থাকেন। তবে একটি বিষয় প্রস্তাবিত অবস্থায় কী করে দাম বাড়ানোর কথা ক্রেতাদের বলা হয়, তা ক্রেতাদের কাছে কোনোভাবেই বোধগম্য নয়।
এ মুহূর্তে র্যাম, ডিভিডি রাইটার, গ্রাফিকস কার্ড এবং মেমোরি কাডের্র দাম ওঠানামা করছে। অথচ এসব পণ্য তো আসন্ন বাজেট ঘোষণার আগেই কেনা হয়েছে। তাহলে এ পণ্যের দাম কেন বাড়বে- এ প্রশ্নের জবাব আগাঁরগাও বিসিএস কমপিউটার সিটি মার্কেটের অনেক বিক্রেতারই অজানা। তবে বিক্রেতারা এটা জানান- এ নির্দেশ মূল বিপণনকারীদের কাছ থেকেই এসেছে।
হঠাৎ কেন একটি পণ্যের দাম স্বাভাবিক বাজারে দামের চেয়ে বাড়তি হবে এ প্রশ্নের গ্রহণযোগ্য কোনো উত্তর বিক্রেতারা দিতে পারেননি। তবে এ জন্য ডলারের দাম ওঠানামার অজুহাত দেওয়া হয়। কিন্তু পণ্যটি তো আগেই কেনা হয়েছে তাই এ বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিস্কার নয়।
এবারের বাজেটেও কম্পিউটার, ল্যাপটপ, নোটবুক, নেটবুক, এলসিডি মনিটর, এলইডি মনিটর এবং খুচরা আইটি পণ্যের দাম বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ল্যাপটপ কিনতে আসা ব্যাংকার আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, একটি ল্যাপটপের দাম এখানে তলায় তলায় ভিন্ন। এ ছাড়াও একটি দোকান আরেকটি দোকানের পণ্য কেনার সময় সব কিছু ঠিকঠাক আছে কি না তা যাচাই করার সুপরামর্শ দেন।
এমন পরামর্শের অর্থ তো দামের এবং গুণগত পার্থক্য বুঝায়। এটা তো সচেতন এবং স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যায়। আগারগাঁও-এ বিশেষায়িত কম্পিউটার মার্কেটের প্রবেশ পথে দাম কিংবা অভিযোগ সম্পর্কে কোনো দিকনিদের্শনা নেই। এ অবস্থায় ঢাকার বাইরে থেকে আসা অপরিচিত ক্রেতাদের জন্য তাই বাড়তি টেনশনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এ ছাড়াও একটি কম্পিউটার কেনার পর তা বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য এখানে কোনো নিরাপদ যানবাহনের ব্যবস্থা নেই। অনেক সময় কালো কিংবা হলুদ ট্যাক্সিক্যাব থাকলেও এখানে ভাড়া চাওয়া হয় ইচ্ছামতো, চড়াদামে। এতে নিশ্চয়তাহীনতা আর ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকরা। অনেক সময় বিচ্ছিন্ন কিছু বাজে ঘটনাও ঘটে।
অথচ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের কম্পিউটার বাজারের সামনে থাকে নিরাপদ ট্যাক্সি ক্যাবের সুব্যবস্থা। সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক কিংবা মালয়েশিয়ার মতো দেশেও এ ধরনের ব্যবস্থা চোখে পড়ে।
সব মিলিয়ে বাজেট এলেই কম্পিউটার মার্কেটের এ অস্থিরতা নিয়ে ক্রেতাদের অসন্তুষ্টি আর ভোগান্তি প্রতি বছরেরই নিয়মিত ঘটনা। এ বিষয়ে ডিজিটাল পণ্যের ক্রেতারা একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা এবং তার সঠিক বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করেন। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই স্বার্থ রক্ষা হবে।
বাংলাদেশ সময় ০৬৪৭ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১২
এসএইচ,
সম্পাদনা : সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর
kumar.sarkerbd@gmail.com