দেশের সফটওয়্যার ও আইটিইএস খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) কাজ করে থাকে। বিগত বছরগুলোতে জাতীয় বাজেট প্রণয়নের আগে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের উন্নয়নে বেসিস অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাবনা দাখিল করে।
এসব প্রস্তাবনা বাস্তবায়নে বেসিস অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ২০০৯ সালে জাতীয় আইসিটি নীতিমালা অনুমোদিত হয়। এ নীতিমালায় ৩০৬টি অ্যাকশন আইটেম আছে।
জাতীয় আইসিটি নীতিমালা এবং বিগত ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় উত্থাপিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ২.৩ উপঅনুচ্ছেদে বর্ণিত ‘সরকারের অঙ্গীকার’ অনুচ্ছেদে যে সব উদ্দেশ্য লিপিবদ্ধ আছে, এর প্রেক্ষিতে জাতীয় বাজেট ২০১২-১৩ ঘোষণার আগে বেসিস কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে।
আইটি উন্নয়ন তহবিল
জাতীয় আইসিটি নীতিমালা ২০০৯-এর ১৫৯ নং অনুচ্ছেদে আইসিটি শিল্প উন্নয়ন তহবিল গঠনে প্রয়োজনীয় ৭০০ কোটি টাকার ১০ ভাগ অর্থাৎ ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একইসাথে নীতিমালার ১৫৮ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত আইসিটি শিল্প উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
ক্র্যাশ ট্রেনিং প্রোগ্রাম
‘ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে অগ্রযাত্রা‘ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখিত বিশ্ববিদ্যালয় এবং তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মধ্যে একটি মেলবন্ধন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বেসিস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের (বিআইটিএম) মাধ্যমে আগামী ২ বছরে ১০ হাজার আইটি প্রফেশনাল তৈরির কথা উল্লেখিত আছে। এই ক্যাশ ট্রেনিং প্রোগ্রামের জন্য ৫০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
ইন্টারনেটের ১৫ ভাগ মূসক প্রত্যাহার
বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সারাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি করার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু এখনও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ১৫ ভাগ মূসক ধার্য থাকায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের যে মূল্য পরিশোধ করতে হয় তা অন্য সব দেশের তুলনায় অনেক বেশি। ইন্টারনেটের এ উচ্চমূল্য কমাতে অবিলম্বে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর থেকে ধার্য ১৫ ভাগ মূসক প্রত্যাহার করা জরুরি বলে মনে করে বেসিস।
এ সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে দেশে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করতে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর থেকে নির্ধারিত ১৫ ভাগ ভ্যাট প্রত্যাহার করার জন্য বেসিস প্রস্তাব করছে।
ই-কমার্সে ভ্যাট প্রত্যাহার
দেশে ই-কমার্স উৎসাহিত করতে ই-কমার্স ভিত্তিক পণ্য ও সেবা লেনদেন ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। বর্তমান সরকার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার যে কার্যμম হাতে নিয়েছে, তার অংশ হিসেবে এ সময়ে ই-কমার্স বিস্তারের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অনলাইনে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটা এবং ডিজিটাল সার্টিফিকেট প্রচলন ইত্যাদি। তবে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের মতে, ই-কমার্সের দ্রুত বিস্তারে কিছু মূসক অব্যাহতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে বেসিস শীর্ষ নেতারা অভিমত দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময় ১৮৫৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১২
সম্পাদনা: সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর