ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের শপথ নিয়ে বেসিসের ২৫ বছর উদযাপন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের শপথ নিয়ে বেসিসের ২৫ বছর উদযাপন

ঢাকা: বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি ইন্ডাস্ট্রি সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন করেছে এবং একই সাথে তথ্যপ্রযুক্তিকে একটি নির্ভরশীল এবং ক্রমবর্ধমান রপ্তানি ক্ষাত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। সেই বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি ইন্ডাস্ট্রি সরকারের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে শীর্ষস্থানীয় ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন করবে ও অর্থনীতে আরও বেশি অবদান রাখবে—এই লক্ষ্যে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে শপথ নিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর সদস্য ও সরকারি-বেসরকারি অংশীজনরা।

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া বেসিসের ২৫ বছরপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হোন তারা।

প্রযুক্তির পথে বাংলাদেশের স্বপ্ন ও সাফল্যের পথিকৃৎ হিসেবে অতীতের শক্তিতে ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংকল্পে জমকালো অনুষ্ঠানে আবৃত্তি গান-নৃত্যে রাজধানীর গ্রিনভিল আউটডোরসে সাফল্যের ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে বেসিস।

অনুষ্ঠানে বেসিস প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম এ তৌহিদ, সাবেক সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম, এ কে এম ফাহিম মাশরুর, শামীম আহসান, মোস্তাফা জব্বার, এসএম কামাল, রফিকুল ইসলাম রাউলি, মাহবুব জামান ও সৈয়দ আলমাস কবীর এবং বর্তমান সভাপতি রাসেল টি আহমেদ কে সম্মননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

এ সময় সাবেক সভাপতিরা সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা খাতের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে এই খাতের আর্থিক প্রণোদনা ৮ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করতে এবং ২০২৪ থেকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত আইটি ও আইটিইএস খাতকে কর্পোরেট করমুক্ত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ও সাবেক বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরি, শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপালা বিরাক্কডি, মার্কিন দূতাবাস প্রতিনিধি, কোটরা প্রতিনিধি, ফ্রান্স দূতাবাস প্রতিনিধি এবং সহস্রাধিক বেসিস সদস্যসহ সতীর্থ বাণিজ্যিক সংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে বেসিসের জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতি এবং বেসিস ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সামিরা জুবেরী হিমিকা বলেন, যে জিআরসি কমিটির রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে একটি মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে ১৯৯৮ সালে বেসিস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেই রিপোর্ট এবং বেসিস উভয়েরই ২৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। বর্তমানে বেসিস একটি শক্ত অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থান তৈরিতে বিগত ২৫ বছরে যারা বেসিসের সাথে ছিলেন তাদেরকে আমি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই এবং পরবর্তী ২৫ বছরের জন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।

বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ উদযাপনের আনন্দ ভাগাভাগি করতে চেয়ে বলেন, আমরা সকলের সাথে এই উদযাপনের আনন্দ ভাগ করে নিতে চাই। সবাই মিলে আমরা একটি পরিবার। আমরা একতাবদ্ধভাবে আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবো। আমরা গর্বিত যে, বেসিস স্থানীয় সফটওয়্যার ও আইটি পরিষেবাগুলির মানোন্নয়ন, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ, এবং ডিজিটাল উন্নয়নের প্রচার ও প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পেরেছে। ফলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পরে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। আর এক্ষেত্রে আইসিটি হল স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশনের নিউক্লিয়াস। কৃষি খাত, উৎপাদন খাত, ব্যবসা থেকে শুরু করে শিক্ষা, এই সকল সেক্টরকে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট হওয়ার জন্য সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবার পরিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ও সাবেক বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, বেসিসের এই মাইলফলক ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দীর্ঘ ও অবিচল যাত্রার প্রতিফলন, উদ্ভাবন, সৃজনশীলতা, এবং সাহসিকতার গল্প। বেসিস তার সদস্যদের ক্ষমতায়নে এবং বিশ্বমানের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা সরবরাহে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছে।

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বন্ধু এবং সহযোগী হয়ে বেসিসের উদ্যোক্তারা অবদান রেখেছিল বলেই আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। বেসিসের ২৫০০ আইটি সার্ভিস প্রোভাইডার ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানে কয়েক প্রায় তিন লক্ষ তরুণের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে তা আমরা ১০ লাখে উন্নীত করতে চাই। একই সঙ্গে একই সময়ের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক বিনিয়োগ আনতে চাই। এছাড়াও আইসিটি খাতে ১.৯ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়েও নেতৃত্ব দিচ্ছে বেসিস।

দেশে গতিশীল সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে, ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৮টি চার্টার সদস্য প্রতিষ্ঠান নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জাতীয় বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে বেসিস-এর যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে বেসিস-এর সদস্য সংখ্যা প্রায় ২৫০০।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।