ঢাকা, সোমবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৩ জুন ২০২৪, ২৫ জিলকদ ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

বাংলাদেশের কোনো তরুণ-তরুণী আর বেকার থাকবে না: পলক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২৪
বাংলাদেশের কোনো তরুণ-তরুণী আর বেকার থাকবে না: পলক জুনাইদ আহমেদ পলক

নাটোর: দেশে প্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রত্যয় নিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বাংলাদেশের কোনো তরুণ-তরুণী আর কর্মহীন ও বেকার থাকবে না। যদি আমরা তাদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।

 

সেই লক্ষ্য নিয়ে তাদের যোগ্য ও দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ও আইসিটি উপদেষ্টা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক্ট সজীব ওয়াজেদ জয় একের পর এক উদ্যোগ, প্রকল্প ও কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন।  

আগামী ২০৪১ সালের আগেই আমাদের তারুণ্যের মেধা আর প্রযুক্তির শক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।

শনিবার (১১ মে) দুপুরে নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সুইসকন্টাক্ট-এর তত্ত্বাবধানে, ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড কর্তৃক পরিচালিত “বিল্ডিং ইয়ুথ এমপ্লয়াবিলিটি থ্রু স্কিলস (BYETS)” প্রকল্পের আওতায় ৩ মাস মেয়াদি ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কোর্স এবং “ডিজিটাল পল্লি: এ স্মার্ট ভিলেজ এক্সপো ২০২৪” এর শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভুঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফর উল্লাহ, নাটোরের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম, সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হা-মীম তাবাসসুম প্রভা, সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস, এসএসএল ওয়ারলেস এর সিও মোহাম্মদ ইফতেখার আলম ইসহাক, ই-ক্যাব, সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার নিশা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, দেশে ৪ লাখ বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে মাত্র ৩ হাজার মানুষ সরকারি চাকরি পায়। কিন্তু দেশের ২৫ লাখ বেকার তরুণ-তরুণীকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়, তবে সবার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেওয়া সম্ভব। যদি আমরা তাদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।

তিনি বলেন, পাবলিক, প্রাইভেট, সরকারি-বেসরকারি, লোকাল, ন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনাল কলাবোরেশন এবং পার্টনারের ভিত্তিতে আমাদের এই ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং যৌথ কোম্পানির উদ্যোগে নেদারল্যান্ড সরকারের সহায়তায় দেশের ২৫ হাজার তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আগামী ১০ বছরের মধ্যে চলনবিলের ২০ হাজার তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থান করা হবে। চলনবিলের “কৈ মাছকে” জিআই পণ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে চাই।

তিনি বলেন, লোকসানে থাকা ঢাকা ডাক বিভাগকে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। দেশের ৯৯৭৪ পোস্ট অফিসের মধ্যে প্রায় ৮ হাজার পোস্ট অফিসকে ইতোমধ্যে ডিজিটাল হিসেবে রূপান্তর করা হয়েছে। আরও নতুন নতুন কর্ম পরিকল্পনা রয়েছে। এখন আমরা হার পাওয়ার ও নারী শক্তি প্রকল্পের আওতায় ৬০০ নারীকে প্রশিক্ষণ দেব।

পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নারীরা, কন্যা সন্তানরা এখন আর পরিবারের বোঝা হিসেবে নয়, সম্পদ হিসেবে পরিণত হয়েছে। শুধুমাত্র নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আমরা হার পাওয়ার, শিপ পাওয়ারের মাধ্যমে দেশের ৩৭ হাজার নারীকে কর্মসংস্থান দিতে পেরেছি। এছাড়া আমরা শিপ আওয়ার প্রজেক্টের আওতায় সারা দেশে সাড়ে ১০ হাজার নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, গ্রামের ছেলে-মেয়েরা প্রশিক্ষণ নিয়ে ইন্টারনেটে সংযোগের মাধ্যমে কম্পিউটার ব্যবহার করে বাড়িতে বসে হাজার হাজার ডলার আয় করছে। তারা নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছে, পরিবারকে সহায়তা করছে। পাশাপাশি নিজেদের আত্মমর্যাদা বৃদ্ধিসহ দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে।

তিনি আরও বলেন, আগামী ২০৪১ সালের আগেই আমাদের তারুণ্যের মেধা আর প্রযুক্তির শক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। এজন্য নারী-পুরুষ, শহর-গ্রাম, ধনী-দরিদ্র সবাইকে সম্পৃক্ত করে বঙ্গবন্ধুর বৈষম্যমুক্ত সোনার বাংলার আধুনিক রূপ, একটি ইনক্লুসিভ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক স্মার্ট সোসাইটি গড়ার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

পরে প্রতিমন্ত্রীসহ আগত অতিথিরা সিংড়া কোর্ট মাঠে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে আয়োজিত জিআই পণ্য মেলার স্টল পরিদর্শন করেন। মেলায় নাটোরের কাঁচাগোল্লাসহ দেশের ২০টি জিআই পণ্যকে উপস্থাপন করেন উদ্যোক্তা ও আয়োজকরা। এছাড়া মেলাতে জিআই পণ্য ছাড়াও স্থানীয় উদ্যোক্তা এবং জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করে।

মেলাকে প্রাণবন্ত করতে গম্ভিরাসহ নানা আয়োজন করেন আয়োজকরা। মেলা শেষে সুইসকন্টাক্ট-এর তত্ত্বাবধানে, ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড কর্তৃক পরিচালিত “বিল্ডিং ইয়ুথ এমপ্লয়াবিলিটি থ্রু স্কিলস (BYETS)” প্রকল্পের আওতায় ৩ মাস মেয়াদি ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদপত্র বিতরণ করা হয়। এর আগে সিংড়া উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত সর্বজনীন পেনশন স্কিম জনপ্রিয়করণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ডিজিটাল পল্লি ফাউন্ডেশন ও ই-ফার্মারস্ এর রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমান টুটুল এবং ই-ক্যাব ব্রান্ডিং স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান আদনান আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে নাটোরের কাঁচাগোল্লাসহ দেশের ২০টি জিআই পণ্যকে দেশব্যাপী জনপ্রিয় করতে ‘গ্রাম থেকে বিশ্ব’-এই স্লোগানকে সামনে রেখে জেলার সিংড়া উপজেলায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই জিআই পণ্য মেলার আয়োজন করা হয়। যা পর্যায়ক্রমে দেশব্যাপী মডেল ই-কমার্স ভিলেজ হিসেবে ডিজিটাল পল্লির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড, পণ্য ও সেবার প্রসার ঘটাতে আয়োজন করা হবে এই ডিজিটাল পল্লীমেলা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।