বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। আর অনেকেই এখন জমি ও আবাসিক সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য ওয়েব সাইট ব্যবহার করছেন।
এখানে নতুন এবং পুরোনো দু ধরনের অ্যাপার্টমেন্ট ডিজিটাল জগতে একটি নতুন স্থান করে নিয়েছে। ২০১৩ সালের প্রথম দু মাসে শুধু বিক্রয় ডটকেমর ‘প্রপার্টি’ শ্রেণীতেই বিক্রির জন্য দেওয়া হয় ৭,৮৬৫টি বিজ্ঞাপন।
ঢাকা শহরে অ্যাপার্টমেন্টের গড় দাম এখন ১ কোটি ১৮ লাখ ৩০ হাজার ২৪৩ টাকা। যেখানে বাংলাদেশের বাকি অঞ্চলে অ্যাপার্টমেন্টের গড় মূল্য উঠেছে ৭১ লাখ ৫০ হাজার ৭২২ টাকা। বিক্রয় ডটকম সূত্র এ তথ্য দিয়েছে।
ঢাকায় বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন পোস্ট করা অ্যাপার্টমেন্টের গড় দাম বাংলাদেশের বাকি এলাকাগুলোর তুলনায় ৬৫ ভাগ বেশি। তবে ঢাকার বনানীতে অ্যাপার্টমেন্টের গড়দাম ৫ কোটি ২৭ লাখ ২০ হাজার ৪১৭ টাকা। যা কি না বারিধারা (গড় দাম ৩ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা), গুলশান (গড় দাম ২ কোটি ৪৭ লাখ ৭৭ হাজার ২৬২ টাকা) এবং ধানমন্ডির (গড় দাম ১ কোটি ৫৩ লাখ ৭৭ হাজার ২৭৩ টাকা) তুলনায় অনেক বেশি।
এখন অনেকেই আছেন যারা বাড়ির বদলে অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ে বেশ আগ্রহী । হালের বাজারের দর কেমন যাচ্ছে জানতে পারলে ক্রেতা এবং বিক্রেতা দু পক্ষের জন্যই বাড়তি সুবিধা। এ চিন্তাধারা থেকেই বিক্রয় ডটকম এ ধরনের বিশ্লেষণ চিত্র তুলে ধরছে। কথাগুলো বলেন বিক্রয় ডটকমের মার্কেটিং ম্যানেজার ঈশিতা শারমিন।
ঢাকা শহরে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে আগ্রহী কিন্তু সাধ আর সাধ্যের সম্মিলনে একটু বেশি বাড়তি খোঁজখবর তো রাখতেই হয়। তাদের জন্য বিশেষ প্রয়োজন মূল্য তালিকা।
বিজ্ঞাপন ডাটাবেজ থেকে বিশ্লেষণ জানা যায় মোহাম্মাদপুর, কল্যাণপুর এবং মিরপুরের অ্যাপার্টমেন্টগুলোর গড় মূল্য যথাক্রমে ৫৬ লাখ ৫৬ হাজার ১২৯ টাকা, ৫৩ লাখ ৩৮ হাজার ২৬৭ টাকা এবং ৩৬ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮১ টাকা। এক্ষেত্রে এসব এলাকায় ন্যূনতম ১৮ লাখ টাকায়ও অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ের সুযোগ আছে।
তবে সম্পত্তি বিক্রয়ে শুধু ঢাকা শহরেই অনলাইন মার্কেটিংয়ের বিকাশ ঘটেনি। চট্টগ্রামে অ্যাপার্টমেন্টের গড় দাম ৯৩ লাখ ২৪ হাজার ৩০৩ টাকা। চট্টগ্রামে সবচেয়ে ব্যয়বহুল অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা যায় কোতোয়ালি এবং পাচলাইশকে। এ দু এলাকায় অ্যাপার্টমেন্টের গড় দাম যথাক্রমে ৮৪ লাখ এবং ৮২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭১ টাকা।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের অ্যাপার্টমেন্ট অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা যায় আগ্রাবাদ এবং চকবাজারকে। এখানে অ্যাপার্টমেন্টের গড় দাম যথাক্রমে ৫৬ লাখ ৫০ হাজার এবং ৫৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
বিক্রয় ডটকম কার্যক্রম শুরুর করার সময় অর্থাৎ অক্টোবর ২০১২ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ অবধি সম্পত্তি সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন পোস্টের সংখ্যা প্রতিমাসে ১৫১ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে পোস্টকৃত বিজ্ঞাপনে অ্যাপার্টমেন্টের দাম ১০ ভাগ বেড়েছে।
অনলাইন বিজ্ঞাপনের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ার কারণ হিসেবে ঈশিতা শারমিন বলেন, আগে নতুন বাসা বা অ্যাপার্টমেন্ট খোঁজার জন্য রিকশা করে মানুষ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতো। এখন ট্রাফিক জ্যাম, যান বাহনের খরচ এবং সময়ের অভাবের কারণে পছন্দসই ঘর খুঁজে বের করাটাও অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।
বিক্রয় ডটকমের মতো অনলাইন বাজারের সহায়তায় এখন কোনো বাড়ি দেখতে যাওয়ার আগে খুব সহজে ঘরে বসেই মানুষ তাদের পছন্দসই অ্যাপার্টমেন্ট বেছে নিয়ে সময় করে বিশ্লেষণ করার সুযোগ পাবে। এ বাড়তি সুবিধাই এ সাইটের প্রতি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে। বিক্রেতারাও বুঝতে পারছেন অনলাইন অ্যাড পোস্ট করার সুবিধা।
বাংলাদেশ সময় ১৭২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৩
সম্পাদনা: সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর