ঢাকা: বিশ্বজুড়ে ২০২০ সালের মধ্যে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন ও মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে উদ্যোগ নিয়েছে মোবাইল ফোন অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএমএ।
কানেক্টেড উইম্যান কমিটমেন্ট ইনিশিয়েটিভ বা ‘সংযোগের আওতায় নারী শীর্ষক প্রতিশ্রুতি’ উদ্যোগের এই প্রতিশ্রুতিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছে মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড।
সোমবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে রবি।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে পৌঁছাতে জেন্ডার সমতা অর্জন এবং নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টিকে এগিয়ে নিতে এ উদ্যোগ নিয়েছে মোবাইল ফোন অপারেটররা।
উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০২০ সালের মধ্যে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশের নারীদের মধ্যে মোবাইল ইন্টারেনট ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি নিয়েছে সংগঠনটি।
জিএসএমএ’র ডিরেক্টর জেনারেল ম্যাটস গ্রানরিড বলেন, ক্রমাগত সংযোগের এ বিশ্বে পিছিয়ে আছেন নারীরা। জিএমএম’র গবেষণা অনুযায়ী, নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে পুরুষের তুলনায় ২০ কোটি নারী মোবাইল ফোনের সেবা থেকে বঞ্চিত। এমনকি নারীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করলেও মোবাইল ইন্টারেনেট ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের মতো সেবা গ্রহণ না করার ফলে আর্থ-সামাজিক সুবিধা থেকে পিছিয়ে পড়ছেন।
“নারীর হাতে ডিজিটাল ও অর্থনৈতিক সুবিধা পৌঁছে দেওয়া কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ; কারণ নারীর অগ্রগতি মানে সমাজের অগ্রগতি, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার”।
বিশ্বব্যাপী মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন জিএসএমএ’র আওতায় রয়েছে প্রায় ৮০০ অপারেটর ও ২৫০টি কোম্পানি। হ্যান্ডসেট ও ডিভাইস নির্মাতা, সফটওয়্যার কোম্পানি, প্রযুক্তি-পণ্য সরবরাহকারী ও ইন্টারনেট কোম্পানিসহ মোবাইল শিল্পসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এর সদস্য।
জিএসএমএ-এ শিল্পসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বৈশ্বিক সম্মেলন, যেমন: মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস, মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস সাংহাই ও মোবাইল ৩৬০ সিরিজের আয়োজন করে থাকে।
জিএসএমএ’র সদস্য শ্রীলংকার ডায়লগ আজিয়াটা পিএলসি, মালয়েশিয়ার ডিজি টেলিকমিউনিকেশনস এসডিএন বিএইচডি (ডিজি), ইন্দোনেশিয়ায় ইন্দোস্যাট ওরেন্দু, মালদ্বীপের ওরেন্দু, মায়ানমারের ওরেন্দু, বাংলাদেশের রবি আজিয়াটা লিমিটেড, টিগো রুয়ান্ডা ও তুরস্কের টুর্কসেল নারীকে মোবাইল সংযোগের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
মোবাইল ফোন অপারেটররা ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে; আরও অনেক পদক্ষেপ পরিকল্পনাধীন রয়েছে, যেমন- নারী এজেন্টদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা, ডাটা টপ-আপ প্রক্রিয়াটি নারীদের জন্য নিরাপদ ও আকর্ষণীয় করা এবং শিক্ষামূলক কর্মসূচি ও ইন্টারঅ্যাক্টিভ কন্টেন্টের মাধ্যমে নারীদের মধ্যে ডিজিটাল শিক্ষার প্রসার ঘটানো।
উন্নয়নশীল বিশ্বে মোবাইল ফোনের মালিকানা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে জেন্ডার বৈষম্য কমিয়ে আনার মাধ্যমে ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে মোবাইল শিল্পে ১৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যোগ হতে পারে।
কানেক্টেড উইম্যান কমিটমেন্ট ইনিশিয়েটিভ সম্পর্কে আরও জানা যাবে http://gsma.com/mobilefordevelopment/the‐commitment সাইটটি ভিজিট করে।
এই উদ্যোগে অংশগ্রহণ সম্পর্কে আজিয়াটার ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং প্রেসিডেন্ট ও গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার দাতো শ্রী জামালুদ্দিন ইব্রাহিম বলেন, আজিয়াটার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ডিজিটাল অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়া। তাই মোবাইল ফোন শিল্পে নারী-পুরুষের বৈষম্য কমাতে জিএসএম’র কানেক্টেড উইম্যান কর্মসূচিকে স্বাগত জানায় আজিয়াটা।
আরও অনেক অপারেটর রয়েছে যারা মোবাইল ফোনে নারীর মালিকানা ও ব্যবহার বৃদ্ধির বিষয়টিকে উৎসাহিত করতে পারে।
“মোবাইল ফোন সেবায় নারীর অংশগ্রহণ তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ব্যবসা-বাণিজ্যের সুফল পেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আজিয়াটা যেসব দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে সেসব দেশে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেছে”।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০১৬/আপডেট: ২০৪১ ঘণ্টা.
এমআইএইচ/এটি