ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

বন্ধ হচ্ছে সিটিসেল, গ্রাহকদের বিকল্প সেবা গ্রহণের পরামর্শ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০২ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৬
বন্ধ হচ্ছে সিটিসেল, গ্রাহকদের বিকল্প সেবা গ্রহণের পরামর্শ

ঢাকা: রাজস্ব বকেয়া বাকি এবং পরিশোধে গড়িমসি করায় যেকোনো সময় বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের লাইসেন্স ও তরঙ্গ বাতিল এবং অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ করে অপারেটরটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে সরকার।
 
রোববার (৩১ জুলাই) সিটিসেলের গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) দুই সপ্তাহের মধ্যে বিকল্প সেবা গ্রহণের জন্য গ্রাহকদের আহ্বান জানিয়েছে।


 
বিটিআরসি’র সর্বশেষ জুন মাসের হিসেবে, দেশে ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটরের মোট গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটি ১৩ লাখ ৭৬ হাজার; যার মধ্যে সিটিসেলের গ্রাহক মাত্র ৭ লাখ ২ হাজার।
 
বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, প্রায় পৌনে পাঁচশ’ কোটি টাকা বকেয়া থাকায় সরকার যেকোনো সময় সিটিসেলের কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে পারে।
 
সব থেকে পুরনো এবং দেশের একমাত্র সিডিএমএ মোবাইল ফোন অপারেটরটি প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড নামে ব্যবসা করে আসছে।
 
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন থেকে ২০১২ সালের ৭ আগস্ট পিবিটিএল’র (সিটিসেলে) সেল্যুলার মোবাইল ফোন অপারেটর লাইসেন্সসহ ৮ দশমিক ৮২ মেগাহার্জ তরঙ্গ নবায়ন করা হয়।
 
‘উক্ত লাইসেন্সের শর্ত অনুযায়ী সিটিসেল তরঙ্গ নবায়ন ফি’র দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তির অর্থ নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও অদ্যবধি পরিশোধ  করেনি। ’
 
বিটিআরসি জানায়, সর্বশেষ সিটিসেলের কাছে টুজি মোবাইল অপারেটর লাইসেন্স সংশ্লিষ্ট তরঙ্গ নবায়ন ফি’র দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তি বাবদ ২২৯ কোটি টাকা, বার্ষিক লাইসেন্স ফি বাবদ ১০ কোটি টাকা, বার্ষিক স্পেকট্রাম ফি (২০১৩-২০১৬ সাল) বাবদ প্রায় ২৭ কোটি ১৪ লাখ ৩৭ হাজার ১৩৩ টাকা, রেভিনিউ শেয়ারিং (২০১৪-২০১৬ সাল) বাবদ আনুমানিক ২৭ কোটি ৪৪ লাখ ৬২ হাজার ৭২০ টাকা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল (২০১১-২০১৬ সাল) বাবদ প্রায় ৮ কোটি ৯২ লাখ ৩৭ হাজার ৭৪২ টাকা এবং প্রযোজ্য ভ্যাট বাবদ প্রায় ৩৯ দশমিক ৯২ কোটি টাকা ও বিলম্ব ফি বাবদ প্রায় ১৩৫ দশমিক ০৭ কোটি টাকা অর্থাৎ সর্বমোট প্রায় ৪৭৭ দশমিক ৫১ কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব বকেয়া রয়েছে।
 
‘সরকারের প্রাপ্য রাজস্ব পরিশোধ না করে অপারেশনাল কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া লাইসেন্সের শর্তাবলীর পরিপন্থী এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১ এর বিধানের সুস্পষ্ট লংঘন। ’
 
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্ণিত অবস্থায় বিটিআরসি সিটিসেলের সেল্যুলার মোবাইল ফোন অপারেটর লাইসেন্স এবং এবং রেডিও কমিউনিকেশনস ইক্যুপমেন্ট লাইসেন্স বাতিল করার এখতিয়ার রাখে।
 
‘কাজেই বিটিআরসি যেকোনো সময় পিবিটিএল (সিটিসেল) এর তরঙ্গ বরাদ্দ বাতিল এবং অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। ’
     
গ্রাহক সংখ্যার দিক থেকে তলানীতে থাকা অপারেটরটির গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে বিটিআরসি বিকল্প সেবা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে।  
 
বিটিআরসির লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের পরিচালক (লাইসেন্সিং) এমএ তালেব হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্ণিত অবস্থায় পিবিটিএল (সিটিসেল) এর গ্রাহকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিকল্প সেবা/ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আগামী ১৬ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হলো।
 
১৯৮৯ সালে বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স পায় সিটিসেল। বর্তমানে ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক বিএনপি নেতা সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খানের মালিকানাধীন প্যাসিফিক মোটরস।
 
সিংগাপুরের সিংটেল এশিয়া প্যাসিফিক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের হাতে রয়েছে ৪৫ শতাংশ। এছাড়া ১৭ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে ফারইস্ট টেলিকম লিমিটেডের হাতে।
 
এদিকে, সরকারের রাজস্ব, টেলিযোগাযোগ সেক্টরের শৃংখলা বজায় রাখা ও জনস্বার্থ বিবেচনায় সিটিসেলের গ্রাহকসহ সংশ্লিষ্ট সবার এ অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৬/আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।