ব্যাংকার্স চিফ টেকনোলজি অফিসার্স (সিটিও) ফোরামের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। এ উদ্দেশ্য বিভিন্ন ব্যাংকের প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত সিটিও ফোরামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
এ অনুষ্ঠানে ফোরামের নবনির্বাচিত সভাপতি তপন কান্তি সরকারের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব ও অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) কর্মসূচির পরিচালক নজরুল ইসলাম খান, সার্ক আইসিটি চেম্বারের সভাপতি সাফকাত হায়দার, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিটিও ফোরামের সদস্য আবুল কাশেম, ট্রাস্ট ব্যাংকের উপব্যবস্থপনা পরিচালক ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. নাজমুল হক এবং সিটিও ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদুল বারী।
এ অনুষ্ঠানে ড. আতিউর রহমান বলেন, দেশের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও বিকাশে আইসিটি খাতকে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করতে সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। দেশে ডিজিটালাইজড ব্যাংক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এ সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা, ই-কমার্স, ই টেন্ডারিং, ই-রিক্রুটমেন্ট, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (বিইএফটিএন), মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থাসহ অনেকগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এছাড়া নিরাপদ পেমেন্ট ও সেটেলমেন্ট প্রথা চালুর জন্য দুই বছর প্রচেষ্টার পর বাংলাদেশ অটোমেশন কিয়ারিং হাউস (বিএসিএইচ) গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। ড. আতিউর রহমান বলেন, এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮০টির মতো নিজস্ব সফটওয়ার উদ্ভাবন করেছে।
শুধু তাই নয়, এ সফটওয়্যারগুলো সাধারণ মানুষের কাছে সহজবোধ্য এবং গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। তরুণ সমাজের কথা মাথায় রেখে ব্যাংক শিার্থীদের বাইরের দেশে পড়ালেখার ব্যয় পরিশোধের জন্য এরই মধ্যে ভার্চুয়াল কার্ডের ব্যবস্থা করেছে।
ব্যাংকারস সিটিও ফোরাম তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান প্রয়োগের মাধ্যমে ব্যাংকিং ছাড়াও সামগ্রিক আর্থিক খাতের আধুনিকায়ন এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ভূমিকা পালন করবে। ব্যাংকিং খাতে স্বদেশি সফটওয়্যার উন্নয়ন ও ব্যবহারের পরিবেশ নির্মাণে সিটিও ফোরামের সব কাজে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন বিবি গভর্নর।
অনুষ্ঠানে সিটিও ফোরামের সভাপতি ও এনসিসি ব্যাংকের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রধান তপন কান্তি সরকার এ সংগঠনের ল্য ও উদ্দেশ্য এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, দেশের ব্যাংকগুলো আগের তুলনায় অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছে।
এ অবস্থায় আর্থিক খাতের উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। সিটিও ফোরাম সম্পূর্ণ অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান। আর্থিক খাতের উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অন্য সব সংগঠনের সঙ্গে জ্ঞান বিনিময় করে একত্রে কাজ করবে এ সংগঠন।
ব্যাংক খাতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে এটুআই কর্মসূচির পরিচালক নজরুল ইসলাম খান বলেন, স্বচ্ছতার জন্য অনলাইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্যাংকিং খাতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে এর গতি আরও গতিশীল হয়েছে।
এ পরিধি আরও বাড়াতে ফোরামের নেতাদের গ্রামপর্যায়ে স্কুলগুলোতে ইন্টারঅ্যাকটিভ ওয়েবসাইট চালু ও শিার্থীদের বেতনাদি পরিশোধের জন্য অনলাইন ব্যাংকসেবা চালু করার বিষয়টি আলোচিত হয়। অন্য সব খাতের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তাদেরও এ ফোরামের অন্তর্ভূক্ত করার আহ্বান করা হয়।
আবুল কাশেম মো. শিরিন মোবাইল ব্যাংকিং ও সিআইবি অনলাইনের প্রশংসা করে বলেন, এর মধ্যমে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। তিনি ১০০ থেকে ৫০০ টাকা ব্যয় করতে সামর্থ ব্যক্তিদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের টার্গেট গ্রুপ নির্ধারণের পরামর্শ দেন।
সার্ক আইসিটি চেম্বারের সভাপতি সাফকাত হায়দার বলেন, দেশের ব্যাংক খাতে তথ্যপ্রযুক্তির বেশ অগ্রগতি হয়েছে। শুধু ব্যাংক নয়, অন্য সব খাতেও তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ উদাহরণযোগ্য। এ ধারা অব্যাহত রেখে দেশের ব্যাংকিং খাতে তথ্যপ্রযুক্তির আরও সমৃদ্ধির জন্য সিটিও ফোরারকে কাজ করার কথা জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময় ১৯০৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১১