স্মার্টফোনে গুগলের অ্যানড্রইড রাজত্ব এখন প্রতিদ্বন্দ্বী সবগুলো নির্মাতার জন্যই মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ব্যথা সামাল দিতে অনেকে আবার আদালতেও ছুটছেন।
কিছুদিন আগে মটোরোলার মবিলিটি স্বত্ত্ব কেনার পর থেকে গুগল স্মার্টফোনের পুরো বিশ্বকে রীতিমতো ভাবনায় ফেলে দিয়েছে।
এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম ‘অ্যানড্রইড’। এটিও গুগল পণ্য।
তাৎক্ষণিক গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা আর সহজবোধ্য ব্যবহার গুণে অ্যানড্রইড এখন স্মার্টফোনের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী।
অ্যানড্রইডযুক্ত প্রতিটি পণ্যেই এখন বিক্রি তালিকার শীর্ষে। তাছাড়া অ্যানড্রইড একেবারেই বিনামূল্যে পাওয়া যায়। ফলে বাড়তি পণ্যব্যয় গুণতে হয় না।
অন্যদিকে স্মার্টফোনের দাম ক্রমেই সাধারণ ভোক্তাদের নাগালে চলে আসছে। এর ফলে মাইক্রোসফট এবং ওরাকলের মতো বিশ্বসেরা সফটওয়্যার নির্মাতাদের বাজার জনপ্রিয়তা নিম্নমুখী। আর স্বল্পমূল্যে অ্যানড্রইড সিস্টেমের জাদুকরী স্পর্শ স্মার্টফোন ভোক্তাদের ক্রমেই অন্য সব অপারেটিং সিস্টেম বিমুখ করে তুলছ।
গুগল সূত্র জানিয়েছে, সাধারণ প্রযুক্তি ভোক্তাদের ব্যবহারযোগ্য মাধ্যম নিয়ে বাণিজ্যিক কৌশলের দিন শেষ হয়ে আসছে। বরং তার মানোন্নয়নে যত বেশি প্রযুক্তি ভোক্তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে, ততই এ জ্ঞানভিত্তিক উন্মুক্ত সংস্কৃতি চর্চার ভবিষ্যৎ সুদৃঢ় হবে।
সুদীর্ঘ সময় (দু’দশক) মাইক্রোসফটের একচেটিয়া ব্যবসায়ীক মনোভাবের কারণে উন্মুক্ত সফটওয়্যার শিল্পের সম্প্রসারণের পথ অবরুদ্ধ হয়ে যায়। প্রতিটি সফটওয়্যারের মানোন্নয়নে ভোক্তাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষায় থাকতে হয়।
কিন্তু উন্মুক্ত উন্নয়ন (ওপেন সোর্স) সংস্কৃতির কারণে এখন অপারেটিং সিস্টেমের মানোন্নয়নে আগ্রহীরা সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারে। এতে প্রযুক্তিশৈলী এবং অবাধ কারিগরি জ্ঞান চর্চার পথ সুগম হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে লাখ লাখ কর্মসংস্থান। এ কারণে গত দু বছরে প্রযুক্তি উদ্ভাবন যতবার তার প্রবৃদ্ধিপথ বদলেছে, ততটা গত এক দশকেও চোখে পড়েনি।
ফলে বিশ্ব দেখেছে একের পর এক উদ্ভাবনী জাদু। উপভোগ করেছে তার স্পর্শ। স্মার্টফোনভিত্তিক টাচস্ক্রিনের (স্পর্শ পর্দা) জাদু এখন তাই প্রযুক্তিভক্তদের নিত্যসঙ্গী। আসছে আরও সব চমকপ্রদ উদ্ভাবনা। তাই তাৎক্ষণিক ব্যবসায়িক লাভবান হওয়ার চিন্তা না করে সুদীর্ঘ স্থায়ীত্বকেই ব্যবসায়ীক মন্ত্র করেছে গুগল।
আর গুগলের এ সেবাভিত্তিক চর্চার কারণে প্রযুক্তি বিশ্বের পুরো অবয়বই বদলে গেছে। এ কারণেই ট্যাবলেট পিসি আর স্মার্টফোন হয়ে উঠছে ভবিষ্যতের জীবননির্বাহী পণ্য।
বাংলাদেশ সময় ২১৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১১