সাবমেরিন ক্যাবলের একটি রিপিটার পরিবর্তনে কাজ রাত ১২টা থেকে শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিএসসিসিএলের কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) সাখাওয়াত হোসেন।
সোমবার সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সাবমেরিন ক্যাবলের কক্সবাজারের কলাতলী ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে ১০৫ কিলোমিটার দূরে গভীর সমুদ্রে দ্বিতীয় রিপিটারটিতে ফল্ট দেখা দিয়েছে।
এসএমডব্লিউ-৪ থেকে ২৫০ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, রক্ষণাবেক্ষণের সময় পুরো লাইন বন্ধ থাকবে। এ সময়ে কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল এসএমডব্লিউ-৫ দিয়ে বিকল্প সেবা দেওয়া হবে।
তবে এসএমডব্লিউ-৫ চালু হলেও সেখান থেকে ২৫০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ পাওয়া যাবে না। এজন্য ইন্টারনেটের গতি স্লো থাকবে বলে জানান সাখাওয়াত হোসেন।
২৪ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত এসএমডব্লিউ-৪ রক্ষণাবেক্ষণের সময় ধরা হলেও পূর্ব অভিজ্ঞতা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করছি এর আগেই কাজ শেষ হবে’।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানিয়েছে, এসএমডব্লিউ-৪ সাবমেরিন ক্যাবলের বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ অংশে রিপিটার প্রতিস্থাপনের কাজের জন্য আনুমানিক ৩/৪ দিন এসএমডব্লিউ-৪ সাবমেরিন ক্যাবলের বাংলাদেশ অংশে বিএসসিসিএলের সকল সার্কিট বন্ধ থাকবে।
ইতোমধ্যে এসএমডব্লিউ-৫ সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে সার্ভিস চালু হওয়ায় এবং ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল ক্যাবল (আইটিসি) অপারেটরগুলোর মাধ্যমে সার্ভিস চালু থাকায় দেশের ব্যান্ডউইডথ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
বিএসসিসিএলের নিজস্ব আইআইজি থেকে আইপি ট্রানজিট সার্ভিস দিতে বিকল্প পথে এসএমডব্লিউ-৫ ক্যাবলের মাধ্যমে অতিরিক্ত ব্যান্ডউইডথ সংগ্রহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রক্ষণাবেক্ষণের সময় ইন্টারনেটের গতি ধীর থাকার কথা জানিয়েছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি বলেন, এসএমডব্লিউ-৪ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে গেলে এসএমডব্লিউ-৫ দিয়ে বিকল্প সেবা দেওয়া হবে। ওই সময়ে ইন্টারনেটের গতি স্লো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আইটিসিগুলো থাকায় খুব বেশি সমস্যা হবে না বলেও দাবি তার।
দেশের প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলটি ১২ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো দীর্ঘ সময়ের জন্য বিচ্ছিন্ন থাকছে।
বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সাবমেরিন ক্যাবল ‘এসএমডব্লিউ-৪’ এ যুক্ত হয় ২০০৫ সালে, যার মাধ্যমে ২৫০ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইডথ পাওয়া যাচ্ছে।
এটি ছাড়াও বাংলাদেশ ছয়টি বিকল্প সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় চালু হয়েছে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার গোড়া আমখোলাপাড়ার এ ল্যান্ডিং স্টেশনের মাধ্যমে সাউথইস্ট এশিয়া-মিডলইস্ট-ওয়েস্টার্ন ইউরোপ (এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৫) আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়ামের সাবমেরিন ক্যাবল থেকে সেকেন্ডে ১৫০০ গিগাবাইট (জিবি) গতির ইন্টারনেট পাবে বাংলাদেশ।
দেশে ইন্টারনেটের চাহিদা ৪০০ জিবিপিএসের বেশি। এর মধ্যে ১২০ জিবিপিএস এতোদিন রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বিএসসিসিএলের মাধ্যমে আসছিল। বাকি ২৮০ জিবিপিএস আইটিসির ব্যান্ডউইডথ ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৭
এমআইএইচ/এএসআর