ইতোমধ্যেই মোবাইল ফোন অপারেটরদের আপত্তিগুলো নিষ্পত্তি করে ফোরজি লাইসেন্সিং গাইডলাইন এবং তরঙ্গ নিলাম গাইডলাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
এই অনুমোদনের পর আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে দেশে ফোরজি সেবা চালুর পথে আর কোনো বাধা থাকছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
ফোরজি চালু বিষয়ে বুধবার (২৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তারানা হালিম।
তিনি বলেন, আমরা আনন্দের সঙ্গে বলছি যে, সংশোধিত ফোরজি লাইসেন্সিং গাইডলাইন এবং তরঙ্গ নিলাম গাইডলাইন প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। কিছুক্ষণ আগে আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা নেই এবং আমাদের কার্যক্রম শুরু করে দিতে পারি।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে অপারেটররা যে ২৩টি বিষয় বিবেচনার জন্য অনুরোধ করেছিল তার মধ্যে ২২টি সম্পূর্ণভাবে এবং ২৩ নম্বরটি আংশিকভাবে বিবেচনা করেছি।
ফোরজি লাইসেন্স আবেদন ফি আগে ছিল ৫ লাখ টাকা, এখনও তাই আছে। লাইসেন্স এক্যুইজেশন ফি পূর্বে ছিল ১৫ কোটি, সেটি এখন ১০ কোটি টাকা। বার্ষিক লাইসেন্স ফি সাড়ে সাত কোটি থেকে কমিয়ে ৫ কোটি টাকা, রেভিনিউ শেয়ারিং ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ব্যাংক গ্যারান্টি ১৫০ কোটি টাকাই রয়েছে। ”
একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কনভার্সন ফি ১৮০০ ও ৯০০ মেগাহার্টজের তরঙ্গ এক ধাপে রূপান্তর করলে ৪ মিলিয়ন ইউএস ডলার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আংশিক রূপান্তর করলে তা হবে ৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার।
প্রাথমিকভাবে ফোরজির ডাটা স্পিড ২০ এমবি (মেগাবাইট পার সেকেন্ড) রাখা হয়েছে। বিটিআরসি সময়ে সময়ে স্পিড পরিবর্তন করতে পারবে সেজন্য বিধান রাখা আছে। এটি আগে ছিল ১০০ এমবি।
অপারেটরদের কল রেকর্ডস সংরক্ষণের সময়সীমা কমিয়ে আনার অনুরোধ ছিল, সেটি তিন বছরের পরিবর্তে তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী দুই বছর করা হয়েছে।
ভ্যাট ও ট্যাক্সের বিষয়ে অপারেটরদের অনুরোধে তা বিটিআরসিতে প্রদানের বাধ্যবাধকতা না রেখে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিশোধ করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, সিএফ ক্যালকুলেশন করার বিধান অ্যাকটিভ সাবস্ক্রাইবারের ভিত্তিতে করার জন্য তাদের প্রস্তাব ছিল, সেটি গ্রহণ করা হয়েছে। আগে তিন মাস পর পর সাবস্ক্রাইবার কতজন থাকবেন সেটির ভিত্তিতে বিবেচনা করা ছিল। তবে তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টার পরামর্শক্রমে তাদের অনুরোধটি গ্রহণ করা হয়েছে।
বিটিআরসিকে অবহিত ও অনুমোদন নিয়ে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কোন কোন সেবা অপারেটররা নেবে- এ বিষয়টি রহিত করা হয়েছে। এখন আর পূর্বানুমোদন গ্রহণের প্রয়োজন নেই।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের একটি অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল ফোরজি সেবা চালু করা। আমরা অত্যন্ত দ্রুত কাজগুলো করার চেষ্টা করেছি। আমরা বলতে পারি, অপারেটরদের যে কনসার্ন ছিল, সেগুলো মোটামুটিভাবে সবগুলোই অ্যাড্রেস করেছি।
এখন আমাদের শুধু লাইসেন্স প্রদান এবং ফি গ্রহণের কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি আছে। গাইডলাইন এখন বিটিআরসিতে পাঠিয়ে দেব। আমাদের টার্গেট ডিসেম্বর। নতুন বছরের উপহার হিসেবে সরকার জনগণকে সেবাটি প্রদান করবে। আশা করছি নতুন বছরে জানুয়ারিতে সেবাটি জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে পারবো। ”
তারানা হালিম বলেন, তরঙ্গ নিলাম হলে অপারেটররা তরঙ্গ কিনবে এবং কোয়ালিটি অব সার্ভিস এনশিওর করবে। কোয়ালিটি কম্প্রোমাইজ হবে না। সেবার মান উন্নত হবে।
এখন রোলআইট অব্লিগেশনগুলো ঠিকমতো পালন করা হচ্ছে কিনা- সে ব্যাপারে বিটিআরসিকে কঠোরভাবে মনিটর করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৭
এমআইএইচ /আরআই