দু’দিনের সফরে এসে ফিরে যাওয়ার আগে বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ে আইসিটি বিভাগ পরিদর্শনে গিয়েছিল হংকংয়ের এই রোবট। সেখানে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছে সে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সোফিয়াকে আবারো এদেশে আনতে চান বলে জানিয়েছেন ওই বিভাগের একজন কর্মকর্তা।
আইসিটি বিভাগ পরিদর্শনে গিয়ে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে সোফিয়া। সোফিয়ার ভাষায়- অ্যামাজিং কান্ট্রি বাংলাদেশ। এই দেশের মানুষও অনেক ভালো।
সেখান থেকে রাত নয়টার দিকে বের হয়ে সরাসরি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে সোফিয়া। রাত একটায় একটি ফ্লাইটে হংকং যাওয়ার কথা রয়েছে তার।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দেশের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭’তে অংশ নেয় সোফিয়া।
চার দিনব্যাপী আইসিটি সেক্টরের মেগা ইভেন্ট আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একই দিন বিকেলে ছিল বিশ্বজুড়ে আলোচিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট সোফিয়াকে নিয়ে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের আয়োজন। ‘টেক টক উইথ সোফিয়া’ আয়োজনে দর্শনার্থীদের আগ্রহ ছিলো চোখে পড়ার মতো। সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেইমে বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন সোফিয়া।
হলিউড অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের চেহারার আদলে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার সোফিয়াকে তৈরি করেছে হংকংয়ের কোম্পানি হ্যানসন রোবোটিকস। সোফিয়ার উদ্ভাবক সেই ডেভিড হ্যানসন সঙ্গে ছিলেন।
বিজ্ঞাপনী সংস্থা গ্রে ঢাকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাউছুল আলম শাওনের সঞ্চালনায় ‘টেক টক উইথ সোফিয়া’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকও উপস্থিত ছিলেন।
প্রথমেই সঞ্চালক সোফিয়াকে বাংলাদেশের আসার জন্য অভিনন্দন জানান। জবাবে সোফিয়া বাংলাদেশের সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলে, ‘হ্যালো বাংলাদেশ। আই অ্যাম আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইন্ট্রিগ্রেটেড রোবট সোফিয়া। ’
শাওন সোফিয়ার কাছে ইংরেজিতে জানতে চান, ‘সোফিয়া আপনি কী জানেন, এখন কোথায় আছেন?’ জবাবে সোফিয়া জানাল, ‘আমি বাংলাদেশে আছি। এখানে আজ থেকে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড শুরু হয়েছে। আমার সামনে হাজারো তরুণ আমার কথা শোনার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। ’
এবার সঞ্চালক সোফিয়ার পরনের পোশাকের তারিফ করেন। বলেন, ‘সোফিয়া আপনি যে পোশাকটি পরেছেন তাতে আপনাকে মানিয়েছে বেশ। আপনি কি জানেন, আপনি কী পোশাক পরে আছেন?’
খানিকটা হেসে বলল, ‘আমি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানির তৈরি পোশাক পরেছি। এই জামদানি মিহি সুতার তৈরি। আরামদায়ক এই পোশাকটি পরে আমারও ভালো লাগছে। ’
সোফিয়া কোন রাশির জাতক, জানতে চাইলে বলেন, তার জন্ম ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেনটাইনস দিবসে। সে কুম্ভ রাশির জাতিকা।
এরপর আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সোফিয়ার কাছে জানতে চান, একটি জাতিকে বদলানোর জন্য ডিজিটালাইজেশনের ভূমিকা কী হতে পারে? সবজান্তা রোবট সোফিয়া বলল, ‘একটি জাতিকে বদলাতে হলে ডিজিটালাইজেশনের বিকল্প নাই। ’বাংলাদেশও সোফিয়ার মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট তৈরি করতে সক্ষম।
সোফিয়ার উদ্ভাবক ড. ডেভিড হ্যানসন সোফিয়ার মতো অত্যাধুনিক তৈরি গল্প বললেন। জানালেন, ছোট বেলা থেকে তিনি রোবট তৈরির স্বপ্ন দেখতেন। তার বিশ্বাস একসময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট মানুষের হয়ে কাজ করবে।
তিনি বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনারা চাইলে সোফিয়ার সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন। কেননা এই সফটওয়্যার ওপেন সোর্সে আছে।
অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে রোবট সোফিয়া ও এর উদ্ভাবককে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মননা জানানোর মধ্য দিয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ০২২৭ ঘণ্টা, ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৭
এমআইএইচ/আরএ