ফোর-জি বিস্তারের সাথে সাথে নেটওয়ার্কের আধুনিকায়নের ফলে গ্রাহকরা এইচডি ভিডিও, লাইভ টিভি স্ট্রিমিং, ঝকঝকে ভিডিও কল আর দ্রুতগতির ডাউনলোড উপভোগ করতে পারবেন বলে জানিয়েছে অপারেটররা।
বর্তমানে ঢাকার বসুন্ধরা, বারিধারা ও গুলশান এলাকাসহ চট্টগ্রামের দামপাড়া, খুলশী ও নাসিরাবাদে গ্রামীণফোনের ফোর-জি সেবা চালু হয়েছে।
ফোর-জি সেবা নিয়ে নেটওয়ার্ক কাভারেজ সরেজমিনে জানতে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার তিনটি এলাকায় যায় বাংলানিউজ। এলাকাগুলোর বেশিরভাগেই ফোর-জি কাভারেজ ছিল। কিন্তু গতি খুব বেশি ছিল না ইন্টারনেটের। তবে ফোর-জি কাভারেজ এলাকায় ওয়েব ব্রাউজিংয়ে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।
সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে বারিধারার পাশে শেওড়া বাসস্ট্যান্ডে ফোর-জি কাভারেজ পাওয়া যায়। সে সময় ওয়েবব্রাউজিংও ছিল বেশ ভালো।
ইন্টারনেট স্পিড পরিমাপক অ্যাপস ‘স্পিডটেস্ট’ ডাউনলোড করে পৌনে ১১টায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় দেখা যায় গ্রামীণফোনের ফোর-জি ডাউনলোড ও আপলোড গতি যথাক্রমে ৭.৮৮ ও ৪.৭৮ এমবিপিএস। সে সময় থ্রি-জি সেবার থেকে বেশ গতিতে ওয়েবসাইট ব্রাউজ করা যাচ্ছিলো।
গ্রামীণফোনের প্রধান কার্যালয় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জিপি হাইসের সামনে ১১টা ৩৫ মিনিটে দেখা যায় গতি যথাক্রমে ১.৮৯ ও ১.৫৮ এমবিপিএস।
বেলা পৌনে ১২টায় নর্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গতি ছিল যথাক্রমে ১.০৬ ও ০.০৩ এমবিপিএস। আর একটু সামনে এগিয়ে ১১টা ৫১ মিনিটে নতুনবাজার এলাকায় ফোর-জি গতি ছিল ১.৮১ ও ০.০৪ এমবিপিএস। এই দুই এলাকায় ওয়েবসাইট ব্রাউজ এবং ইউটিউবে প্রবেশ করা যায়নি।
গুলশান-২ নম্বর এলাকায় বেলা ১১টা ৫৬ মিনিটে এইচএসবিসি ব্যাংকের সামনে ফোর-জি গতি দেখা যায় ১২.৪২ ও ৭.৯৬ এমবিপিএস। সে সময় ইন্টারনেটে ব্রাউজিং ও ইউটিউবে সহজেই প্রবেশ করা গেছে। নিমিষেই কোনো বাফারিং ছাড়া ইউটিউবে ভিডিও দেখা যায়। তবে গুলশান-২ নম্বর থেকে গুলশান-১ নম্বরের দিকে যেতে ১২টা ২ মিনিটে ‘ঢাকা চাকা’ বাসস্ট্যান্ডের কাছে গতি ছিল যথাক্রমে ৩.৪২ ও ২.৫৬ এমবিপিএস।
সর্বশেষ ১২টা ২১ মিনিটে গুলশান-১ নম্বর গোল চত্বরে ফোর-জি গতি পাওয়া যায় যথাক্রমে ৬.২৩ ও ৬.২১ এমবিপিএস।
ফোর-জি নিয়ে আগ্রহ থাকলেও গ্রাহকদের মোবাইল হ্যান্ডসেট উপযোগী না হওয়া এবং সিম রিপ্লেস করতে অনাগ্রহও দেখা গেছে। গুলশান-২ নম্বর এলাকায় আরিফুল হক নামে এক বাইক চালক বলেন, এখনও ফোর-জি সিম নেওয়া হয়নি। থ্রিজি-ই ঠিকমতো পাই না, আর ফোর-জি দিয়ে কী হবে?
সকালে মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে পর্বতা ভবনে বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের সিম বিক্রি ও ফোর-জি সিম রিপ্লেসমেন্ট করে এমন একটি জিপি এক্সপ্রেস এর কর্মী আরিফ জানান, প্রতিদিন ১০টির মতো ফোর-জি সিম রিপ্লেসমেন্ট হয়। তবে ফোর-জি চালুর পর বেড়ে যাবে বলে আশা করছি।
তিনি জানান, অনেক গ্রাহকের কাছে ফোর-জি সেট না থাকায় সিম রিপ্লেসমেন্ট করতে অনাগ্রহ দেখা যায়।
গ্রামীণফোন জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের আরো এলাকা ফোর-জি কাভারেজের আওতায় আসবে। এছাড়া বেশিরভাগ বিভাগীয় শহরে অচিরেই চালু করার কথা রয়েছে ফোর-জি। আগামী ছয় মাসের মধ্যেই সব জেলা শহরে ফোর-জি পৌঁছে যাবে।
লাইসেন্স পাওয়ার একদিন পর বর্তমানে টেলিটক ছাড়া বাকি অপারেটরগুলো ফোর-জি সেবা চালু করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
এমআইএইচ/এমজেএফ