সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ছাড়াও দেশ-বিদেশ থেকে পরিচালিত অখ্যাত বিভিন্ন অনলাইন নিউজ-পোর্টাল থেকে চলছে অপপ্রচার এবং গুজব। অনলাইনের এ অপপ্রচার ও গুজবকে পুঁজি করে এক শ্রেণির মানুষ সাধারণ মানুষের কাছেও মিথ্যা বার্তা দিয়ে বিভ্রান্ত করছে।
তবে এ অপপ্রচার এবং গুজব রুখতেও সরকার তৎপর। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের ‘গুজব প্রতিরোধ ও অবহিতকরণ সেল’ এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছে। রয়েছে পুলিশের একটি সাইবার নিয়ন্ত্রণ সেল। তবে অপপ্রচারকারীরা নানা কৌশল নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এতে তাদের সঙ্গে পেরে ওঠাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিটিআরসি বলছে, যে সব অভিযোগ তাদের কাছে আসছে সেগুলোর বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে কমিশন।
মহাকাশে সফলভাবে উৎক্ষেপিত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নিয়ে সম্প্রতি একটি চক্র ফেসবুকে গুজব ছড়ায় যে, স্যাটেলাইটটি হারিয়ে গেছে। এ মিথ্যা সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। পরে ২১ নভেম্বর ‘গুজব প্রতিরোধ ও অবহিতকরণ সেল’ সংবাদটি মিথ্যা বলে জানায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে ফেসবুকে ‘বাঁশের কেল্লা’ অন্তত তিনটি পেজ থেকে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। ‘বাঁশের কেল্লা’ পেজ সরকার বিরোধী জামায়াত-শিবির দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হচ্ছে এসব পেজে।
আবার ফেসবুকে বিভিন্ন নামী ব্যক্তির নামে আইডি খুলে প্রতারণা চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
এসব সাইবার সন্ত্রাস রুখতে তাগাদা এসেছে বিভিন্ন পক্ষ থেকে। ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জয়দেব নন্দী ফেসবুকে লিখেছেন, অনলাইনে জামায়াত-বিএনপি কী পরিমাণ সক্রিয়, সেটা এ মুহূর্তে ভাবুন তো? আমি-আপনি কোথায় আর জামায়াত-বিএনপির এক্টিভিস্টরা কোথায়? এইবার যুদ্ধটা চলছে অনলাইনে। ভাবুন, আমার-আপনার অবস্থান কোথায়?
‘অনলাইন এবং মাঠে শেখ হাসিনা তথা নৌকার জন্য আমার-আপনার করণীয় ভেবে এগিয়ে যেতে চাই দুর্বার গতিতে। এগিয়ে যেতে চাই একসঙ্গে, সমস্বরে বলতে চাই...জয় বাংলা; জয় বঙ্গবন্ধু। ’
গত কয়েকদিনে কয়েকটি পত্রিকার অনলাইন ভার্সন নকল করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে নির্বাচনী বছরে। পত্রিকাগুলোর পক্ষ থেকে বিটিআরসি এবং সংশ্লিষ্টদের কাছেও এমন অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে তথ্য মন্ত্রণালয়ের গুজব সেল সক্রিয় রয়েছে। তিন শিফটে একজন করে কর্মকর্তা সেখানে দায়িত্ব পালন করেন। কোনো বিষয় গুজব বলে শনাক্ত হলে তা সংশ্লিষ্ট পক্ষ থেকে নিশ্চিত হয়ে গণমাধ্যমে জানানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গুজবের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে অনলাইনে গুজব এবং অপপ্রচারের শেষ নেই বলে উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা।
বিটিআরসি এবং ইন্টারনেট পরিচালনাকারী সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে জোর তৎপরতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের এ কর্মকর্তা।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক বাংলানিউজকে বলেন, এসএমএস বা মেইলের মাধ্যমে যে অভিযোগগুলো আসে সেগুলো বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কোনো কনটেন্ট নিয়ে অভিযোগ এলে ফেসবুকে দিলে তারা এখন আমাদের অনুরোধ শুনে। তবে ফেসবুকের কন্টেন্ট বন্ধ করা আমাদের আওতায় নেই।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) জেনারেল সেক্রেটারি এমদাদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা এলে তারা সেগুলো বাস্তবায়ন করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
এমআইএইচ/এসএইচ