রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বাংলানিউজকে এমনটাই নিশ্চিত করেন।
সাম্প্রতিক সময়ে, ভিডিও মেকিং ও স্ট্রিমিং অ্যাপস টিকটক এবং লাইভ শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম বিগো লাইভ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে খোদ ভার্চুয়াল জগতে।
এসব প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যক্তিগত পর্যায় থেকেও ছড়ানো হয় অশ্লীল ও আপত্তিজনক কনটেন্ট। এর কারণে তরুণ সমাজ বিশেষ করে উঠতি বয়সী কিশোর-কিশোরীদের ওপর পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। এ কারণে এসব অ্যাপস বন্ধে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘যেভাবেই হোক না কেন নতুন প্রজন্মকে আমাকে নিরাপদ রাখতে হবে। আমি একদিকে ছেলে-মেয়েদের বলবো যে তোমরা ইন্টারনেটে ঢোক, আবার ইন্টারনেটে ঢুকলেই তারা খারাপ কনটেন্টের মুখোমুখি হচ্ছে। এমন দু’টি বিষয় তো একসঙ্গে হয় না। আমাকে তো আমার দায়িত্ব পালন করতে হবে। ’
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে পাঁচ হাজারের ওপরে পর্নো সাইট বন্ধ করেছি। বেটিং সাইট (জুয়া খেলার ওয়েবসাইট) বন্ধ করেছি ৫শ ওপরে। এছাড়াও কিছু ব্যক্তি আছেন যারা নিজেরা পর্নো উৎপাদন করেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ এ ধরনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করেন। আমরা সেগুলোও নজরদাড়িতে রাখছি। ’
টিকটক ও বিগো লাইভের মতো অ্যাপস বন্ধ করার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো তো অ্যাপস, তাই এগুলো বন্ধ করার সঙ্গে কিছু প্রযুক্তি প্রয়োগের বিষয় আছে। এসব প্রযুক্তি ডেভেলপমেন্ট অবস্থায় আছে। আমি এক বাক্যে বলতে পারি যে, টিকটক বা বিগো লাইভ তো বটেই, আমাদের সমাজ-রাষ্ট্র ও জনগণের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ না এমন কোনো কিছুই থাকবে না। ’
‘আমরা আমাদের দেশে ‘নিরাপদ ইন্টারনেট’ চাই। আর আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, ভার্চুয়াল জগতকে নিরাপদ রাখতে আমাদের যা যা করা দরকার তাই আমরা করবো’—যোগকরেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
সম্প্রতি টিকটক ও বিগো লাইভের মতো প্ল্যাটফর্মে দেশিয় কয়েকজন অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং বিভিন্ন মডেলডের আপত্তিকর কনটেন্ট শেয়ার করে। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে একরকম নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রোববার বিকেলে অভিনেত্রী ও মডেল সানাই মাহবুব সুপ্রভাকে এধরনের কনটেন্ট ছড়ানোর অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের পর নিজের এমন কনটেন্ট ছড়ানোকে ‘ভুল’ স্বীকার করে ফেসবুক লাইভে এসে দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন বিতর্কিত এ মডেল।
টিকটক-বিগো লাইভের মতো প্ল্যাটফর্ম নিয়ে নিজেদেরকে ‘সচেতন’ বলছে এ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংস্থার এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ ধরনের প্ল্যাটফর্ম এবং কনটেন্ট সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। মন্ত্রী মহোদয় নিজে এ বিষয়ে অবগত আছেন। তিনি নির্দেশ দেওয়া মাত্রই আমরা এগুলো বন্ধ করার কাজ শুরু করবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৯
এসএইচএস/জিপি