ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

প্রযুক্তিই প্রতিবন্ধিতা দূর করবে: জব্বার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৯
প্রযুক্তিই প্রতিবন্ধিতা দূর করবে: জব্বার 'প্রতিবন্ধীদের চাকরি মেলা -২০১৯' এর উদ্বোধন শেষে বক্তব্য দেন আইসিটি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীতা দূর করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, প্রযুক্তিই মানুষের শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে জয় করে প্রতিবন্ধিতা দূর করবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁও আইসিটি টাওয়ারে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার 'প্রতিবন্ধীদের চাকরি মেলা -২০১৯' এর উদ্বোধন করেন।  

সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজঅ্যাবিলিটির সহযোগিতায় আয়োজিত মেলার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধী বলে আলাদা কোনো গোষ্ঠী নেই।

আমরা সবাই মানুষ। সবারই কমবেশি কিছু না কিছু দুর্বলতা থাকে। কখনো শারীরিক কখনো বা মানসিক। তবে প্রযুক্তির অগ্রগতির এসময় অসম্ভব বলে কিছু নেই।  

‘মানব জাতি যখন কৃষিযুগে বসবাস করতো, এমনকি শিল্পযুগে প্রবেশ করেছিল, তখন পর্যন্ত যে প্রযুক্তি কিংবা যন্ত্র আবিষ্কার হয়েছিল সেগুলো ভিন্নভাবে সক্ষম মানুষদের যে সহায়তা করতে পারতো, এখন তারচেয়ে হাজার গুণ বেশি প্রযুক্তি বিরাজমান। ’

মন্ত্রী বলেন, আমরা এমন একটা সময় বসবাস করছি যখন একেবারে বুদ্ধিচর্চা থেকে শুরু করে শারীরিক চর্চাসহ প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব। প্রযুক্তি দিয়ে প্রতিবন্ধিতা জয় করা সম্ভব। প্রযুক্তি যে জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে তাতে আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে প্রতিবন্ধিতা বলে কিছু থাকবে না। প্রযুক্তি সে জায়গাটা সহজলভ্য করবে। প্রযুক্তি মানুষের জন্য, মানুষ প্রযুক্তির জন্য নয়। প্রযুক্তিকে মানুষের জন্য ব্যবহার করতে হবে, মানুষের বদলে নয়। প্রযুক্তিকে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করার জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া দরকার আমরা সে উদ্যোগ নিতে শুরু করেছি।  

প্রযুক্তিতে সবাইকে দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, নিজের দক্ষতা না থাকলে দয়ার পাত্র হতে হবে। আমরা যারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করি তাদের নৈতিক দায়িত্ব ভিন্নভাবে সক্ষমদের পাশে থাকা। প্রতিবন্ধীদের পাশে সচেতনভাবে থেকে যদি কাজের পরিবেশ তৈরি করা যায় তাহলে তাদের জন্য অসম্ভব বলে কিছুই থাকবে না। এই পৃথিবী সৃজনশীলতার পৃথিবী, তাই মেধাবী সৃজনশীল ব্যক্তিদের জন্য কোনো বাধা অন্তত এই ডিজিটাল বাংলাদেশে নেই।  

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিন্নভাবে সক্ষমদের অন্তর দিয়ে অনুভব করে ২০১৩ সালে প্রথম প্রতিবন্ধী অধিকার আইন পাস করেছেন। ইতোমধ্যে আমাদের তিন হাজার প্রতিবন্ধীকে মূল ধারায় নিয়ে আসার জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যার মধ্যে দেড় হাজার জনের প্রশিক্ষণ প্রায় শেষের দিকে। এছাড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য একটি সেন্ট্রাল ডেটাবেজ ও বিশেষভাবে অ্যাপস তৈরি করা হচ্ছে।

পলক বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করে কীভাবে প্রতিবন্ধীদের মূলধারায় নিয়ে আসা যায় সেটি চিন্তা করতে হবে। যেমন যদি হুইলচেয়ারে রোবটিক্স ব্যবহার করা হয় তাহলে এই বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি আরো বেশি সেবা দিতে সক্ষম হবে। আমরা আশাকরি দেশের ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তি সমাজের উন্নয়নের বাইরে থাকবে না। শেখ হাসিনা সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রযুক্তি ব্যবহার করে শহর-গ্রামে সবার জন্য সমানভাবে সুবিধা দেওয়ার জন্য কাজ করছে।

দিনব্যাপী এ মেলায় বাক্য, এফবিসিসিআই, মাই আউটসোর্সিং, কোয়াব, লিডস করপোরেশন পশমি সোয়েটার লিমিটেডসহ মোট ২১টি নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আয়োজিত চাকরি মেলায় ২০১৫ সালে ৩২ জন, ২০১৬ সালে ৬০ জন, ২০১৭ সালে ১১৫ জন এবং ২০১৮ সালে ১৭৬ জন আইসিটিতে দক্ষ ব্যক্তির কর্মসংস্থান করা হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেবের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাক্য-এর সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন, সিএসডিআই-এর প্রধান নির্বাহী রুহুল হক, মাই আউটসোর্সিং লিমিটেডের সিইও তানজিরুল বাশার প্রমুখ।

পরে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও অন্য অতিথিদের নিয়ে মেলায় স্থাপিত বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৯
এসএইচএস/এএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।