টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানিয়েছে, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে অপারেটর দু’টিতে প্রশাসক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
পাওনা আদায়ের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর লাইসেন্স বাতিলের জন্য তাদের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায় বিটিআরসি। ৩০ দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। এরই মধ্যে তারা টাকার পরিমাণ নিয়ে আপত্তি তুলে আদালতে যায়। পরে এ বিরোধ মীমাংসার উদ্যোগ নেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অনুষ্ঠিত হয় একটি বৈঠক।
কিন্তু ওই বৈঠকের পরও পাওনা বিষয়ে কোনো সাড়া না পেয়ে সবশেষ ৩ অক্টোবর আরেকটি সভা হয়। তাতেও সাড়া না পাওয়ায় কোম্পানি দু’টিতে (গ্রামীণফোন-রবি) প্রশাসক নিয়োগের জন্য টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মতি চেয়ে বুধবার (১৬ অক্টোবর) চিঠি পাঠায় বিটিআরসি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বাংলানিউজকে বলেন, অপারেটর দু’টিতে প্রশাসক নিয়োগ করার জন্য চিঠি পাঠোনো কেবল ফরমালিটি মাত্র। এখন যেকোনো সময় প্রশাসক নিয়োগ করা হবে।
তিনি বলেন, অপারেটরদের নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরও গ্রামীণফোন ও রবি তাদের দায়িত্ব পালন করেনি। ওই মিটিয়ের পর সাত দিনের মধ্যে রবি ২৫ কোটি এবং গ্রামীণফোন ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রবি ১৫ কোটি টাকার পে-অর্ডার নিয়ে আসলে আমরা অ্যালাও করিনি। কিন্তু গ্রামীণফোন যোগাযোগ-ই করেনি। এক মাস পরে এভাবে ২৫ কোটি ও ১০০ কোটি দেওয়ার কথা।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, রবির কাছে বেসিক অ্যামাউন্ট ৫০৮ কোটি টাকার মধ্যে ২৫ কোটি এবং জিপির কাছে দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে ১০০ কোটি টাকা চেয়েছি। তারা সাড়া দেয়নি।
‘আমরা এইটুক বুঝতে চাই যে, তারা টাকা দিতে ইচ্ছুক। কিন্তু এই ইচ্ছা প্রকাশের জায়গাতেও তারা আসেনি। ১৯৯৭ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত জমে থাকা বকেয়া পাওয়ার কোনো ভরসা পাইনি। আমাদের টাকা না দিয়ে লাভ করে টাকা নিয়ে যাবে, এটা হতে পারে না। ’
প্রশাসক নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিটিআরসি এটা ফরমুলেট করবে। কাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করা হবে, সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর উপদেশ নেব। সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের রাজস্বের অর্থ ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নাই।
তবে টাকা আদায় হয়ে গেলে প্রশাসক আর থাকবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রশাসক নিয়োগের পর এনওসি (অনাপত্তিপত্র) চালু করা হতে পারে। কারণ, ব্যবসা ও লাভের জন্য এনওসি দরকার হবে।
এর আগে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক জানান, একজন প্রশাসক ছাড়াও একজন করে হিসাব, আইন ও টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়ার সম্মতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সরকারের পাওনা আদায়ে তারা সহযোগিতা করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৯
এমআইএইচ/এসএ