ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ের নই বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেই শুরু হয় ভাষাগত বিড়ম্বনা। পুলিশের ইমিগ্রেশন অফিসার একটু-আধটু ভাঙা ইংরেজি বলতে পারেন।
জানা যায়, ভিয়েতনাম তাদের মাতৃভাষা নিয়ে বেশ সচেতন। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন বই ইংরেজি থেকে ভিয়েতনামিজ ভাষায় অনূদিত করে তারপর পড়ানো হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
ভিয়েতনামে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত হিসেবে তিন বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন সামিনা নাজ। এক মধ্যাহ্নভোজে আলাপকালে বাংলানিউজকে সামিনা বলেন, ভিয়েতনাম তাদের মাতৃভাষা নিয়ে বেশ সচেতন। পুরো রাজধানীতে ৩-৪টি আন্তর্জাতিক স্কুল আছে। সেখানেই আমাদের মত বিদেশিদের সন্তানেরা পড়াশোনা করে। প্রায় ৮০-৯০ বছর আগে ওদের ভাষায় চীনের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে বর্ণমালা পরিবর্তন করে দেশটি। মান্দারিন ভাষার হরফের বদলে ইংরেজি হরফ, তবে তার ওপর নিজেদের কিছু বিষয় যোগ করে নিজেদের মতো ভাষার হরফ করে নেয় তারা। আমি নিজেও যখন ওদের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলি, ছোট ছোট ইংরেজি শব্দে কথা বলি।
তবে স্থানীয়রা ইংরেজি না বুঝলেও গুগল ট্রান্সলেটর ব্যবহার করতে পুরোদস্তুর ওস্তাদ। গুগল ট্রান্সলেটরের বিভিন্ন ফিচার- যেমন হরফ টাইপ করে বা ছবি তুলে অথবা ভয়েস্ কমান্ডের মাধ্যমে অনুবাদে বেশ পারদর্শী ভিয়েতনামের জনগণ।
এখানকার লোকজনের বেশিরভাগই অ্যাপল ইনকর্পোরেশনের আইফোন ব্যবহারকারী। খাতা-কলম নিয়ে পরিসংখ্যান না করলেও অল্প কিছুক্ষণে যে কেউ বুঝে যাবে যে, এখানকার স্থানীয়দের প্রতি ১০ জন স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর মাঝে ৮ জনই আইফোন ব্যবহারকারী। পেশা যেমনই হোক, আইফোন আছে প্রায় সবার।
আশার কথা হচ্ছে, এখানকার মানুষের মাঝে আছে চরম ধৈর্য। আপনি কারও সঙ্গে কথা বলতে চাইলে আপনার কাছে তার কোনো ফায়দা নেই জেনেও সময় নিয়ে কথা বলবে। অবশ্যই গুগল ট্রান্সলেটরে। পথ দেখিয়ে দেওয়া বা যে কোনো সমস্যার সমাধান চাইলে ধৈর্য্য সহকারে মুখে হাসি ধরে রেখেই সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবে আপনাকে। সেজন্য দিনশেষে আপনাকে বলতেই হবে- ‘থ্যাংকস গুগল’!