চবি উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষ থেকে: বর্তমান গ্লোবালাইজেশনের যুগে তথ্য প্রযুক্তি ছাড়া যেমন উন্নয়ন সম্ভব নয়, তেমনি নারীদের এ খাতে অংশগ্রহণ ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এ কারণেই অগ্রগণ্য।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং নারীর ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
বক্তরা আরো বলেন, ‘অল্প শিক্ষিত নারীরা স্বল্প কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব সাইট ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন কাজে সাফল্য আনছে। ’
তারা আরো বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া এলাকার নারীদের আইসিটি খাতে প্রশিক্ষণ নিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে নারীরা ভূমিকা রাখতে পারে। ’
জাতীয় মহিলা সংস্থার জেলা ভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে এ সেমিনার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবি উপ-উপাচার্য ড. মো. আলাউদ্দিন, জাতীয় মহিলা সংস্থার পরিচালনা পরিষদ সদস্য বনশ্রী বিশ্বাস স্মৃতিকনা।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সভাপতি ড. মো. হানিফ সিদ্দিকী।
চবি উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফ বলেন, ‘নারী উন্নয়ন করতে হলে এখন আইসিটি খাতে নারীর অংশগ্রহণ ছাড়া তা সম্ভব নয়। এক সময় চরকায় সূতো কাটা নারীরা এখন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সক্ষমতা অর্জন করছে।
ড. আলাউদ্দিন বলেন, ‘নারীদের বাদ দিয়ে আইসিটি খাতে উন্নয়ন আনা যাবে না। ’
ড. হানিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের মতো পিছিয়ে পড়া দেশের মেয়েরা বাইরে কাজে বের হতে চায় না। কিন্তু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আউটসোর্সিং করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘অল্প প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন নারী চাইলেই ঘরে বসে ওয়েব সাইট ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন কাজ করতে পারে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘আইসিটি খাতে একজন নারী যদি তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারেন তবে সামাজিক ধ্যান-ধারণা, ধর্মীয় গোড়ামি কোনো বাঁধা হতে পারবে না। ঘরে বসেও আপনি চাইলে বৈেিদশক মুদ্রা অর্জন করতে পারবেন। ’
অধ্যাপক ড. শাহদত হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, ‘আইসিটি খাতে নারীর অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করে ক্ষমতায়নের প্রশ্নটি যদি প্রতিষ্ঠা করতে চাই তবে আইনের প্রয়োজন। আইন প্রণয়ণ করে এই ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ’
সেমিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হলে তথ্য প্রযুক্তি খাতে নারীর অংশ গ্রহণ জরুরি। এর আগে প্রয়োজন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। ’
প্রবন্ধে হানিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে তথ্য প্রযুক্তি খাতে অনেক পরিবর্তন ঘটছে। তরুণ সমাজ এখন সামজিক সাইটের মাধ্যমে তথ্যের আদান প্রদান করছে। তবে এত কিছুর পরেও এখানে একটি ‘জেন্ডার ডিভাইড’ রয়ে গেছে। এই প্রতিবন্ধকতা দূর করতে না পারলে নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব হবে না। ’
সেমিনার শেষে মুক্ত আলোচনায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, নারী শিক্ষার্থীসহ অংশ গ্রহণকারীরা আলোচনা করেন।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেওয়া বক্তারা আইসিটি খাতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আরো কার্যক্রমে আহ্বান করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১১