ঢাকা: বাংলাদেশে প্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তুরস্ক। বিশেষ করে হাইটেক পার্ক এবং স্টার্টআপ ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেদের বিনিয়োগের আগ্রহের কথা জানিয়েছে দেশটি।
বুধবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে এক সাক্ষাতে অংশ নেন ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান। বৈঠকে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর কাছে নিজেদের এই পরিকল্পনা জানান ওসমান তুরান।
বৈঠকে তুর্কি রাষ্ট্রদূত ওসমান তুরান বলেন, বাংলাদেশ এবং তুরস্ক বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র। আমরা উভয়পক্ষ মিলে প্রযুক্তি খাতে একসঙ্গে কাজ করতে পারি। বিশেষ করে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা যৌথভাবে কাজ করতে পারি। পাশাপাশি আমরা এখানে স্টার্টআপ এবং হাইটেক পার্ক খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী। বিনিয়োগ বেসরকারি খাত থেকেই আসবে। তবে আমরা দুই দেশের সরকার এটাকে এগিয়ে নিতে পারি।
হাইটেক পার্ক বিষয়ে ওসমান তুরান বলেন, আমাদেরও (তুরস্ক) অত্যাধুনিক টেকনো পার্ক (হাইটেক পার্ক) রয়েছে। এখানেও আছে। আমরা দু’পক্ষ পার্টনার হয়ে কাজ করতে পারি। একইসঙ্গে তুরস্কে আমরা একসেলারেটর কর্মসূচি আয়োজন করি উদ্যোক্তাদের নিয়ে। সেখানে স্থায়ী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানে উদ্যোক্তাদের আমরা উৎসাহিত করি। আমাদের স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি গ্লোবাল উদ্যোক্তারাও অংশ নেন। বাংলাদেশ থেকেও উদ্যোক্তারা অংশ নিতে পারেন।
সভায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুরস্ক রাষ্ট্রদূতের কাছে তুলে ধরেন। একইসঙ্গে দেশের হাইটেক পার্কের বিভিন্ন শক্তিশালী দিকগুলোও তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী। তুরস্কের আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, তুরস্ক এবং বাংলাদেশের টেকনো পার্কগুলো কীভাবে যৌথভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারে সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি। দুই দেশের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও কীভাবে দুই দেশে বিনিয়োগ করতে পারে, উভয় দেশে পরিদর্শনে যেতে পারে সেই বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে আলাপ হয়েছে। আমরা খুবই আশাবাদী দুই দেশের মধ্যেকার বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে।
লালমনিরহাটে তুরস্কের সহায়তায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য তুর্কি রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে তুরস্ক সরকারের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক।
সভায় হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ সারাদেশে ৩৯টি হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং আইটি ট্রেনিং কাম ইনকিউবেটর স্থাপন করছে। এরমধ্যে পাঁচটি পার্কে ব্যবসায়িক কার্যক্রম অন্যতম। স্যামসাং, নোকিয়া, ওয়ালটনসহ আরও বেশকিছু কোম্পানি কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১০০টিরও বেশি সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার এবং বায়োটেক কোম্পানি দেশজুড়ে অবস্থিত হাইটেক পার্কগুলোতে ভূমি ও স্পেস বরাদ্দ নিয়েছে এবং কিছু কোম্পানির উৎপাদন ও বিপণন শুরু করেছে। আমরা ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে কোম্পানিগুলোকে তাৎক্ষণিক বিভিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ স্টার্টআপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনা এফ জাবিন, টারকিস কো অপারেশন অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন এজেন্সির (টিকা) সমন্বয়ক ইসমাইল গুনদৌদুসহ বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, আইসিটি বিভাগের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২০
এসএইচএস/টিএ