ঢাকা: ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এখন মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলার জন্য সহজেই হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন। নতুন কিছু মানসিক স্বাস্থ্য সেবা চালু করার জন্য ফেসবুক চলতি মাসে বাংলাদেশি কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে।
২০১৯ সালে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়ষ্কদের মধ্যে প্রায় ১৭ শতাংশ বিভিন্ন রকম মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় ভোগেন। তাদের মধ্যে ৯২ শতাংশ কাউন্সিলিং বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় সাহায্য নেন না। ফেসবুকের মাধ্যমে এখন থেকে ব্যবহারকারীরা সরাসরি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, মনের বন্ধু এবং কান পেতে রই-এর মতো সংস্থার সহায়তা পেতে পারেন। এই প্রতিষ্ঠানগুলো আত্মহত্যা, হতাশা, উদ্বেগ এবং অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় নিয়মিত কাউন্সিলিং সেবা দিয়ে আসছে।
ফেসবুকের গ্লোবাল সেফটি পলিসির পরিচালক করুণা নেইন বলেন, এই বছর মহামারি মানুষকে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপনের পাশাপাশি নানাবিধ ক্ষতির সম্মুখীন হতে বাধ্য করেছে। আমরা তাদের জানাতে চাই যে, তারা একা নন। আমরা তাদের আশপাশের এমন প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে চাই যারা তাদের কথা শুনবে এবং সহযোগিতা করতে পারবে।
ফেসবুক মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার সমাধান করতে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন রকম ফিচার তৈরি করছে। ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডস-এ আত্মহত্যা ও আত্মঘাতী কন্টেন্ট প্রতিরোধী নীতিমালা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তাদের কাজকে আরও কার্যকর করতে ফেসবুক এবার সূচনা ফাউন্ডেশন এবং মনের বন্ধু-এর মতো স্থানীয় অলাভজনক সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছে।
সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন এবং ডাব্লিউএইচও-এর মানসিক স্বাস্থ্য এবং অটিজম বিষয়ক ডিরেক্টর জেনারেল-এর উপদেষ্টা সায়মা ওয়াজেদ বলেন, মানসিক অবসাদ মোকাবিলায় সবচেয়ে ভালো উপায়গুলোর একটি হলো পরিবার ও বন্ধুদের সংস্পর্শে থাকা। বাংলাদেশের মানুষদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ফেসবুকের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। এ বিষয়ে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সহজে যোগাযোগ করতে পারা মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।
‘সমাজে মানসিক সমস্যা বাড়ছে, মানসিক স্বাস্থ্য সেবা সীমিত,’ বলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
‘মানসিক সমস্যা সম্বন্ধে অজ্ঞতা ও ভুল ধারণা সমস্যাটিকে আরও প্রকট করে তুলছে। সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যম মানসিক সমস্যা সম্বন্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করে এ সমস্যা মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে। সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুককে এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখবার জন্য আমি স্বাগত জানাই। ’
বিশ্বব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে এরকম সংস্থাগুলোর সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ স্থাপন করতে ফেসবুক বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্যের উপর মহামারির যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে তা কাটিয়ে উঠতে সবাইকে সহযোগিতা করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য। নিজের ক্ষতিসাধণ মূলক ছবি যেন কেউ পোস্ট করতে না পারেন সে বিষয়ে ফেসবুক গত বছর কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। কারণ এ ধরনের ছবি অন্যকে মনের অজান্তেই আত্মঘাতী আচরণ করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সাধারণ মানুষকে আরও সহজে যোগাযোগ করিয়ে দিতে কাজ করছে ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম।
আরও বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন ফেসবুকের সেফটি সেন্টার।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২১
এইচএডি