ঢাকা: দেশে ফাইভ-জি চালু করার ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি অবকাঠামো প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়েকে পাইওনিয়ার ফাইভ-জি পার্টনার অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
সম্প্রতি দেশের প্রথম ফাইভ-জি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ে বাংলাদেশের চিফ অপারেটিং অফিসার তাও গুয়াংইয়াও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের কাছ থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।
রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে আয়োজিত ‘নিউ এরা উইথ ফাইভ-জি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে ফাইভ-জি সেবা উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন এ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান, বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন, গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান, বাংলালিংকের সিইও এরিক অস।
হুয়াওয়ের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ঝ্যাং ঝেংজুন অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালভাবে যুক্ত হন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুপ্রেরণামূলক ভিডিও বার্তা দেন।
প্রাথমিকভাবে, ছয়টি সাইটে ফাইভজি নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। সাইটগুলো বাংলাদেশ সচিবালয়, জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থলে। এলাকাগুলোর সিংহভাগেই হুয়াওয়ের অবকাঠামোগত সেবা ব্যবহার করা হবে।
আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মূল বিষয় হচ্ছে কানেক্টিভিটি। কানেক্টিভিটির এ যুগে, সবকিছু এখন ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে। আমাদের নেটওয়ার্ক উন্নত না হলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। আমি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বিটিআরসি’কে ধন্যবাদ জানাতে চাই, তারা ফাইভ-জি বাস্তবায়নে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। ফাইভ-জি বাস্তবায়নে অবদান রাখার জন্য আমি হুয়াওয়েকেও ধন্যবাদ দিতে চাই। যদিও এখন ফাইভ-জি খুব অল্প জায়গায় চালু হয়েছে। ধীরে ধীরে ফাইভ-জি বাংলাদেশেও সব যায়গায় পৌঁছে যাবে। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলবো আর ডিজিটাল বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে থাকবে। আমাদের স্বপ্ন বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করা।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটি বাংলাদেশের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা এবং উন্নত প্রযুক্তির বিকাশ ঘটানোর জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদী ইকো পার্টনার হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ।
বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান বলেন, বিটিআরসি’র কর্মীরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে শুরু থেকে নিরলসভাবে কাজ করেছে। ২০১৮ সালে সোনারগাঁ হোটেলে আমরা ফাইভ-জি’র একটি পরীক্ষা চালাই। তখন এবং আজকে ফাইভ-জি’র উদ্বোধনে হুয়াওয়েকে পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা আশা করছি, আগামী বছর টেলিটকের পাশাপাশি গ্রামীণফোনসহ অন্যান্য অপারেটররা বাংলাদেশে ফাইভ-জি চালু করবে। তাদের জন্য নতুন তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়ার ব্যাপারে আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। আগামী মার্চ মাসে নিলামের পর তারা ফাইভ-জিতে পদার্পণ করবে বলে আশা করছি। ফাইভ-জি উদ্বোধনের কাজে যারা সম্পৃক্ত ছিলেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমরা ফাইভ-জি যাত্রার প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি এবং এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। আর হুয়াওয়ের মতো অংশীদারের সহযোগিতায় এটা নিশ্চিতভাবেই ঘটবে।
হুয়াওয়ের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন বলেন, বিশ্বজুড়ে ফাইভ-জি প্রযুক্তি স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে হুয়াওয়ে। হুয়াওয়ে বিশ্বের অনেক দেশে উন্নত ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালু করার জন্য অবকাঠামোগত সহায়তা প্রদান করছে। আমি বিশ্বাস করি, ফাইভ-জি প্রযুক্তির ব্যবহার ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশও আমাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দ্বারা উপকৃত হবে।
হুয়াওয়ে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ঝ্যাং ঝেংজুন বলেন, বিগত ২২ বছরেরও বেশি সময় ধরে হুয়াওয়ে বাংলাদেশের আইসিটি ইকোসিস্টেমের পরিবারের সদস্য হিসেবে দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। সম্পূর্ণভাবে সংযুক্ত ইন্টেলিজেন্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মূল উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা সবসময় গ্রাহকের প্রয়োজন পূরণে তাদের পাশে ছিলাম। বাংলাদেশ ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। হুয়াওয়ে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এ মুহূর্তের অংশ ও সহযোগী হতে পেরে অত্যন্ত গর্বিত।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২১
এমআইএইচ/এসআই