ঢাকা: পরমাণু শক্তি সম্পর্কে মানুষের ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে উন্মুক্ত আলোচনার বিকল্প নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশন (রোসাটম) এক্সপো-২০২০ ভেন্যুতে ‘জনগণের মাঝে পরমাণু শক্তির চাহিদা: জীবনমান উন্নয়নে পরমাণু প্রযুক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক ওয়ার্কশপে বিশেষজ্ঞরা এ মত দেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশে পরমাণু প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের উপায় নিয়েও তারা আলোচনা করেন।
বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) রোসাটমের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন রোসাটমের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা প্রধান নির্বাহী আলেক্সান্ডার ভারণকভ। তিনি বলেন, ‘পরমাণু সেক্টরে কার্যকর যোগাযোগের জন্য স্বচ্ছতা ও উন্মুক্ত আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে স্পর্শকাতর বিষয়ে সঠিক তথ্য সরবরাহ এবং পরমাণু শক্তি সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা দূর করা যাবে। ’
ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক স্যামা বিলবাও-ওয়াই-লিওনের বলেন, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় নির্ভরযোগ্য ও দূষণমুক্ত বিদ্যুতের প্রাপ্যতা গুরুত্বপূর্ণ। এটা শুধু মেডিক্যাল সুবিধার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, শিশুদের জীবন রক্ষা, নিরাপদ পানি এবং খাদ্য সুরক্ষাও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। ’
আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার কম্যুনিকেশন, আউটরিচ অ্যান্ড স্টেকহোল্ডার ইনভলভমেন্ট অফিসার জেফরি ডনোভান বলেন, ‘সংস্থাটি একটি নতুন গাইড প্রকাশ করেছে, যাতে বিভিন্ন নিউক্লিয়ার বিষয়ে স্টকহোল্ডারদের কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করার তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক পরামর্শ সংকলিত হয়েছে। ’
ওয়ার্কশপে ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট কৃশ্চিয়ান ভেগা তার একটি প্রেজেন্টেশনে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন এবং সম্ভাব্য সমাধানও প্রদান করেন। তিনি পরমাণু শক্তির সাহায্যে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কী ভূমিকা রাখতে পারে তা ব্যাখ্যা করেন।
রোসাটম সেন্ট্রাল অ্যান্ড সাউথ আফ্রিকার প্রধান নির্বাহী রায়ান কলার বলেন, ‘রোসাটমের মূল লক্ষ্য পারমাণবিক প্রযুক্তির সুবিধা সম্পর্কে নিজেকে, সাথীদের এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের শিক্ষিত করে তুলতে যুবসমাজকে অনুপ্রাণিত করা। একইসঙ্গে নিজের দেশ ও কম্যুনিটিকে সহায়তায় সমাধান নিয়ে এগিয়ে আসতে উৎসাহ যোগানো। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশেষভাবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যুবসমাজ দরকারি ভূমিকা রাখতে সক্ষম বলে রোসাটম দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। যুবসমাজকে তাদের প্রতিভা বিকাশে, বিভিন্ন ধারণা ও চিন্তা প্রকাশের ক্ষেত্রে সহায়তা দিতে আমরা যথেষ্ট সচেষ্ট। ’
দুবাই এক্সপো চলাকালে রোসাটম সপ্তাহ পালনের অংশ হিসেবে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। পুরো সপ্তাহ জুড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা পরমাণু প্রযুক্তির সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করেন। পরমাণু প্রযুক্তি কীভাবে মানুষের জীবন মান উন্নয়নে এবং সমাজের দীর্ঘস্থায়ী কল্যাণ সাধনে সহায়ক হতে পারে তার বেশ কয়েকটি বাস্তব উদাহরণও তুলে ধরা হয় এ ওয়ার্কশপে ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২২
এসকে/এনএসআর