ফেনী: বাসায় বড় বোনের ছেলে আয়মান ও বাড়িওয়ালার ছেলে আদিবের সারাদিন ফ্রি ফায়ার খেলা দেখে ফেনী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী আরাফাতুল ইসলাম ইনসাফের মাথায় প্রশ্ন ঘুরপাক খায়, এভাবেই কী শিশুদের সময় ও ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে?
যে গেম খেলে শিশু কিছু শিখতেই পারছে না, তা নিয়েই পড়ে আছে সারাদিন। গেমে আসক্তি ও শিশুদের ভবিষ্যৎ ইনসাফকে চিন্তিত করে তুলে।
গেম নিয়ে ভাবতে ভাবতে একদিন ইউএস অ্যাম্বেসির একটি কর্মশালায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ হাতে এসে যায়, গেমের হাতেখড়ি শিখে ইনসাফ তৈরি করে ফেলে সোলজার অব ফিফটি টু গেমটি, যে গেমটি শিশুদের বাংলা শেখাবে। শেষের দিকে এতে সহযোগী হন সাহাদাত ও বায়েজীদ নামে তার আরও দুই সহকর্মী।
গেমটির গল্পে ৫২ সালে এলিয়েন পৃথিবী দখল করে বাংলাদেশে ভাষা মিউজিয়ামে সংরক্ষিত ১০টি বর্ণমালাকে অপহরণ করে স্পেসশিপে করে নিয়ে যাচ্ছে। প্লেয়ারকে সেই স্পেসশিপগুলোকে আক্রমণ করে বর্ণমালাগুলোকে উদ্ধার করতে হয়। পুরো গেমটিতে ৫২টি লেবেল রাখা হয়েছে। ৮ বছর বয়সী আয়মান দুই দিনেই গেমটি শেষ করে ফেলে।
গেমটি বিদেশে বসবাসরত বাংলা ভাষাভাষী শিশুদের ও দেশের শিশুদের বাংলা বর্ণমালা শেখাতে অসামান্য ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আশাবাদী ফেনী নবীনচন্দ্র সেন লাইব্রেরিতে কর্মরত নয়ন পাশা।
তিনি বলেন,‘এমন গেম শিশুরা না খেললে অভিভাবকরা জোর করে খেলাবেন। ’
ইনসাফ বলেন, ‘একটি গবেষণায় দেখা যায় বিদেশে থাকা ৮০ শতাংশ শিশুর মা-বাবাই শিশুর বাংলা শেখা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন। গেমটির মাধ্যমে শিশুরা বাংলা বর্ণমালার সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে। পরের সংস্করণে আমরা শব্দ শেখানোর পরিকল্পনা করছি। গেমটি শিশুদের ৫২-এর চেতনায় উদ্বুদ্ধ করবে বলে মনে করছি।
২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গেমটির প্রথম সংস্করণের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন ফেনী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সাইফুদ্দীন শাহ।
গেমটির ভবিষ্যৎ সংস্করণ ও উন্নয়নের জন্য অনুদান সহযোগিতার ও পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন গেমটির ডিজাইনার ও প্রধান ডেভেলপার ইনসাফ। তা না হলে গেমটি এখানেই থেমে যাবে। প্লে স্টোরে খুব শিগগিরই পাওয়া যাবে জিরোওয়ানল্যাবের তৈরি ‘সোলজার অব ফিফটি টু’ গেমটি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২২
এসএইচডি/এএটি