ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ফল মেনে নিয়েছি, লড়াই ছাড়ছি না: কমলা হ্যারিস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২৪
ফল মেনে নিয়েছি, লড়াই ছাড়ছি না: কমলা হ্যারিস

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয়ের পর এই প্রথম কোনো ভাষণ দিলেন কমলা হ্যারিস। বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে তিনি এ ভাষণ দেন।

মঞ্চে উঠে জোর করতালির মধ্যে সমর্থকদের দিকে উজ্জ্বল দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন হ্যারিস। ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছিল বিয়ন্সের গান- ফ্রিডম, যা তার প্রচার সংগীতে পরিণত হয়েছিল।

ভাষণের শুরুতেই হ্যারিস বলেন, আমার হৃদয় আজ পরিপূর্ণ। সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা যে বিশ্বাস আমার ওপর রেখেছেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। দেশের জন্য রইল অফুরান ভালোবাসা।

তিনি বলেন, এ নির্বাচনের ফল আশানুরূপ হয়নি। ডেমোক্রেট এ প্রার্থী বলেন, আমেরিকার প্রতিশ্রুতির আলো সবসময় জ্বলতে থাকবে, যতদিন আমরা হাল ছাড়ব না এবং লড়াই চালিয়ে যাব।  

হ্যারিস তার ভাষণে তার পরিবার, জিল ও জো বাইডেন এবং তার রানিংমেট টিম ওয়ালজ ও তার পরিবারকে ধন্যবাদ জানান। তার দল, স্বেচ্ছাসেবক, ভোটকর্মী ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান।  

এবারের এ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সমর্থকদের বলেন, তার প্রচারণা ছিল কমিউনিটি তৈরি এবং জোট গঠনের উদ্দেশ্যে। হ্যারিস এজন্য গর্বিত যে, তিনি ও তার দল এ যাত্রা সফলভাবে চালিয়ে যেতে পেরেছেন।
 
হ্যারিস বলেন, আমি জানি, সবাই এখন ভিন্ন ধরনের অনুভূতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আমি তা বুঝতে পারছি।

তিনি বলেন, নির্বাচনের ফল আমাদের মেনে নিতেই হবে। ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলে তাকে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন হ্যারিস।  

বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, গণতন্ত্রের একটি মৌলিক নীতি হলো ফল মেনে নেওয়া। এটি স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রকে আলাদা করে।
 
হ্যারিস বলেন, আমি এ নির্বাচনের ফল মেনে নিয়েছি। কিন্তু আমি এ লড়াই ছেড়ে দিচ্ছি না।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে আমরা প্রেসিডেন্ট বা দলের প্রতি নয় বরং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান, আমাদের বিবেক ও ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য জানাই।

হ্যারিস বলেন, স্বাধীনতা, সুযোগ, ন্যায়বিচার এবং সব মানুষের মর্যাদা রক্ষার জন্য সংগ্রাম করার অর্থ হলো সেই মূল্যবোধ যা আমেরিকাকে তার শ্রেষ্ঠ অবস্থানে তুলে ধরে।

তিনি বলেন, আমেরিকা, আমরা কখনোই গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সমান ন্যায়বিচার এবং সেই অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম ছেড়ে দেব না, যা মর্যাদাপূর্ণভাবে রক্ষা এবং প্রতিষ্ঠিত করা জরুরি।

তিনি আরও বলেন, আমরা এ সংগ্রাম চালিয়ে যাব ভোটকক্ষে, আদালতে এবং জনসমক্ষে।

হ্যারিস বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে হেরে গেলেও তিনি যেসব ইস্যুর ওপর প্রচারণা চালিয়েছেন, সেগুলোর জন্য তার সংগ্রাম থামবে না।

তিনি বলেন, আমি কখনোই সেই ভবিষ্যতের জন্য সংগ্রাম ছেড়ে দেব না, যেখানে আমেরিকানরা তাদের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা এবং আশা পূর্ণ করতে পারবে, যেখানে আমেরিকার নারীদের কাছে তাদের নিজের শরীর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা থাকবে এবং তাদের কী করতে হবে, সরকার তা বলতে পারবে না।

ভাইস-প্রেসিডেন্ট এক উজ্জীবিত বার্তা দিয়ে তার ভাষণ শেষ করেন। হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন কেবল যখন অন্ধকার অনেক গভীর হয়, তখনই আপনি তারকা দেখতে পারেন।

তিনি বলেন, আমি জানি, মানুষ মনে করছে আমরা একটি অন্ধকার সময়ে প্রবেশ করছি। আশা করি এমনটি হবে না।

ভাষণ শেষে হ্যারিস তার স্বামী, ডাগ এমহফের হাত ধরে মঞ্চ থেকে নেমে যান।  তারা দুজনই জনতার দিকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময়ও স্পিকারে- ফ্রিডম গানটি বাজছিল।  

হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত জনতা কমলা হ্যারিসের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিল। অনেকেই তার ভাষণ রেকর্ড করার জন্য তাদের ফোন উঁচিয়ে ধরে রেখেছিল।

ভাষণে হ্যারিস অনেকটা ধীরে কথা বলছিলেন। প্রচারণার সময় তাকে একজন উজ্জীবিত যোদ্ধা মনে হতো। তবে এবার তাকে অনেক বেশি গম্ভীর ও মনমরা মনে হচ্ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২৪
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।