যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়েছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি সইয়ের সময় এক সরকারি প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, টিউলিপ সিদ্দিক ক্রেমলিনে তার খালা শেখ হাসিনার (বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী) নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। অথচ তিনি আগে দাবি করেছিলেন, এটি ছিল শুধুই একটি ‘পারিবারিক’ অনুষ্ঠান।
২০১৩ সালের একটি অনুষ্ঠানে টিউলিপ সিদ্দিককে তার খালা শেখ হাসিনা এবং ভ্লাদিমির পুতিনের পাশে দাঁড়িয়ে হাস্যোজ্জ্বল ছবি তুলতে দেখা গিয়েছিল। তখন শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। প্রায় এক দশক পর সেই ঘটনা আবার আলোচনায় এলো।
তখন লেবার পার্টি দাবি করেছিল, টিউলিপ সিদ্দিক যিনি তখন পার্লামেন্টের সদস্য প্রার্থী ছিলেন, তিনি কোনো সরকারি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তিনি এক আমন্ত্রণে পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তবে প্রকাশিত ভিডিওগুলো বলছে, তথাকথিত ‘পারিবারিক অনুষ্ঠানটি’ আসলে ক্রেমলিনের ভেতরে আয়োজিত একটি সরকারি অনুষ্ঠান ছিল।
ভিডিওতে দেখা যায়, একটি কক্ষে পুতিন ও হাসিনা একটি সুসজ্জিত ডেস্কের সামনে বসে আছেন, যেখানে তাদের পেছনে রাশিয়া ও বাংলাদেশের পতাকা টানানো। এক বিলিয়ন পাউন্ডের অস্ত্র চুক্তি সইয়ের আগে দুই নেতাই একে অন্যের দেশের সুনাম করে বক্তব্য দেন।
বিতর্কিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তিও ওই অনুষ্ঠানে সই হয়েছিল, যা নিয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগ উঠেছে, টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের সদস্যরা ওই প্রকল্প থেকে চার বিলিয়ন পাউন্ড ঘুষ নিয়েছেন। চুক্তি সইয়ের পর একই কক্ষেই হাসিনা পরিবার ছবি তোলে পুতিনের সঙ্গে।
আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, হাসিনা যোদ্ধাদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার সময় গার্ড অব অনার নিচ্ছেন। তাতে টিউলিপ সিদ্দিক, তার বোন আজমিনাকেও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে দেখা যায়।
লেবার পার্টির এক মুখপাত্র বলেন, এ ঘটনা ১১ বছর আগের, যখন টিউলিপ এমপি ছিলেন না। তিনি শুধুমাত্র তার খালাকে দেখতে এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে রাশিয়া গিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে তার ভূমিকা ছিল শুধুমাত্র পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে উপস্থিত থাকা।
কনজারভেটিভ পার্টির এক মুখপাত্র বলেন, টিউলিপ সিদ্দিকের তথাকথিত পারিবারিক মস্কো সফরের পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কিছু গুরুতর প্রশ্ন উঠে এসেছে। এক দশকেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে। এখন সময় এসেছে, তার ওই সফর এবং ছবির পেছনের সত্য প্রকাশ করার।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
আরএইচ